সিলেটে আদালতপাড়ায় আইনজীবীকে হত্যা চেষ্টা, যুবক আটক

সিলেট

সিলেটের আদালত পাড়ায় বাদি পক্ষের আইনজীবীকে হত্যার অভিযোগে কামাল আহমদ নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালত ভবনের ৮তলায় এ ঘটনা ঘটে। আটক কা্মাল আহমদ নগরের বাদামবাগিচা এলাকার বাসিন্দা ও একটি মামলার প্রধান আসামি।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, এসএমপির এয়ারপোর্ট থানার একটি মামলার (জিআর নং-২৫১/২২ শোনানী শেষে আদালতের বারান্দায় বেরিয়ে আসেন অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামান।এমন সময় ওই মামলার প্রধান আসামি কামাল আহমদসহ অজ্ঞাত ২/৩ যুবক তাকে মামলার পক্ষে লড়ার কারণ জানতে চায়। তিনি বলেন, এটা আমার পেশাগত দায়িত্ব। তারা বলে ‘আমরা তোকে কোপাবো।’

ঘটনাটি দেখতে পেয়ে সতীর্থ আইনজীবীরা তাদের ধাওয়া করে ধরার চেষ্টা করলে সিঁড়ি দিয়ে দৌঁড়ে নীচে নেমে যায়। এসময় হুলস্তুল শুরু হলে সাধারণ লোকজনের সহযোগীতায় কোর্ট পুলিশ কামালকে আটক করতে সক্ষম হয় এবং অন্যরা পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামান বলেন, পেশাদারিত্বের খাতিরে তিনি এসএমপির এয়ারপোর্ট থানার জিআর ২৫১/২২ মামলার বাদি পক্ষের আইনজীবী হিসেবে আদালতে উপস্থিত হয়ে শোনানীতে অংশ নেন।বিচারক মামলার গুরুত্ব অনুধাবন করে গ্রেফতার হওয়া ২নং আসামি কালামের জামিন নামঞ্জুর করেন।আদালত থেকে বেরিয়ে বারান্দা্য় আসতেই মামলার ১নং আসামি কামাল আহমদসহ ২/৩জন গতিরোধ করে। তারা জানতে চায় কেন আমি বাদি পক্ষে শোনানীতে অংশ নিয়েছে। তখন তারা বলে ‘আমরা তোকে কোপাবো।’ তাৎক্ষনিক বিষয়টি বুঝতে পারিনি। তারা আমাকে ঝাপটে ধরতে চেয়েছিল। তাৎক্ষনিক সতীর্থ আইনজীবীরা, সাধারণ লোকজনের সহায়তায় কোর্ট পুলিশ আটক করতে সক্ষম হয়। পরক্ষণে ঘটনাটি তিনি আদালতের নজরে এনেছেন এবং এ বিষয়ে একটি দরখাস্ত দিতে বিচারক নির্দেশনা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমাকে আল্লাহ রক্ষা করেছে।সে অনেক কিছু নিয়ে এসেছে। হয়তো দৌড়াদৌড়ি করার সময় কোথাও ফেলে দিয়েছে। আদালতে মানুষ বিচারের জন্য আসে। অথচ আদালত পাড়ায় যদি আইনজীবীরাই নিরাপদ না থাকে, তাহলে বিচারপ্রার্থী মানুষজন যাবে কোথায়। হামলার পর কোতোয়ালি পুলিশকে জানানো হলেও তারা দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগছিল, আসামিকে এসে নেবে কি না, অথচ সে কেবল হামলাকারীই নয়, একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার প্রধান আসামি। কিন্তু কোতোয়ালি পুলিশ এখানে আসতে ২ ঘন্টা লাগিয়ে দিল। আর আদালত পাড়ায় বিভিন্ন সময় এভাবে আইনজীবীরা আক্রান্ত হন, কিন্তু সিসি ক্যামেরা না থাকা এবং আইনশঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এ বিষয়ে অনেকটা উদাসীন।

তিনি বলেন, ওই লোক প্রকৃতপক্ষে একজন অপরাধী। গত ২৪ তারিখে তার ভাই-বোনদের ঘরে ডোকে কুপিয়েছে। কামালের বিরুদ্ধে তার মা মামলা করেছেন। আর নিজের উপর হামলার ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করবেন বলেও জানান এই আইনজীবী।

ঘটনাস্থলে মাথায় অস্ত্রোপচার করা বাদি পক্ষের আহত এক যুবক বলেন, কামালসহ আরো কয়েকজন ঘরে ঢুকে তাকে দা দিয়ে কুপিয়েছে। গতকাল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামি ধরেও ছেড়ে দিয়েছেন বলেও জানান আহত ওই যুবক।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *