সিলেটে পর্যটকের উপচে পড়া ভিড়ে খালি নেই হোটেল-মোটেল

সিলেট

শারদীয় দূর্গাপূজার ছুটিতে পর্যটন নগরী সিলেটে ঢল নামছে পর্যটকদের। বিপুল সংখ্যক পর্যটক আসায় দেখা দিয়েছে হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টগুলোতে কক্ষের সংকট। সিলেট নগরীর কোনো হোটেল-মোটেলে কক্ষ খালি নেই।

নামিদামি হোটেলগুলোতে অন্তত ১৫দিন আগেই বুকিং শতভাগ সম্পন্ন হয়ে গেছে। এতে করে যারা হোটেল বুকিং করে আসেননি, তারা চরম বিপাকে পড়েছেন। সিলেট নগরীর জিন্দাবাজার, দরগা গেইট, আম্বরখানাসহ বিভিন্ন এলাকার হোটেল ঘুরে এই সংকট দেখা গেছে।

এদিকে, পর্যটকদের ঢল নামায় কৃত্রিমভাবে কক্ষ সংকট তৈরি করেছেন হোটেল ব্যবসায়ীরা। এই সুযোগে এক হাজার টাকা ভাড়ার কক্ষ দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত চাইছেন হোটেল ব্যবসায়ীরা। এতে বিপাকে পড়ছেন সিলেটে ঘুরতে আসা পর্যটকরা।

সিলেটের হোটেল ব্যবসায়ী ও পর্যটন-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ১৫ দিন আগে থেকে  বিভিন্ন মাধ্যমে সিলেটের হোটেল- মোটেল ও রিসোর্টগুলো বুকিং দিয়ে রেখেছেন পর্যটকরা। ভালোমানের হোটেলগুলো প্রায় শতভাগই বুকিং হয়ে গেছে আগেভাগে। বিশেষত বড় হোটেল ও রিসোর্টগুলোর কোনো কক্ষই ফাঁকা নেই।

অন্যদিকে সিলেটে জাতীয় ক্রিকেট লীগ (এনসিএল) চলমান থাকায় খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের জন্য নগরীর বিভিন্ন হোটেলে প্রায় ২০০টি কক্ষ আগামী ১২ অক্টোবর পর্যন্ত বুকিং রয়েছে। যার ফলে পর্যটকদের জন্য হোটেল সংকট দেখা দিয়েছে।

সিলেটে কয়েক শতাধিক হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে। এগুলোর বেশিরভাগই পর্যটকনির্ভর। এখানকার প্রধানতম পর্যটন কেন্দ্র জাফলং, সাদাপাথর, রাতারগুল ও বিছনাকিান্দি।

নগরীর দরগা গেইট এলাকার হোটেল হলি ইনের দায়িত্বরত শিমু বলেন, ‘সারাবছরই সিলেটে পর্যটকরা আসেন। এবার পূজার ছুটিতে যারা ঘুরতে আসছেন, তারা অনেকে মাস খানেক আগে থেকে বুকিং শুরু করেছেন। আমাদের হোটেলের সবকটি কক্ষ ১৫দিন আগেই বুকিং হয়ে গেছে।

আম্বরখানা এলাকার হোটেল হিমেল এর সত্ত্বাধিকারি সারওয়ার খান বলেন, আমাদের হোটেলের সবকটি রুম ১৫ দিন আগেই বুকিং হয়ে গেছে।

এদিকে, পর্যটকদের আগমনে বিভিন্ন হোটেলে কৃত্রিমভাবে কক্ষ সংকট তৈরি করা হয়েছে। সেই সুযোগে পর্যটকদের কাছ থেকে এক হাজার টাকা দামের কক্ষ দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করছেন হোটেল ব্যবসায়ীরা। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন সিলেটে ঘুরতে আসা ভ্রমণপিপাসুরা।

গত সপ্তাহে নগরীর দরগা গেইট এলাকার হোটেল ইবরাজে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত একটি কক্ষের ভাড়া চেয়েছিল ২২০০ টাকা। আজ বুধবার এ প্রতিবেদকের কাছে (১ অক্টোবর) সেই কক্ষটির ভাড়া চাওয়া হয়েছে সাড়ে ৪ হাজার টাকা।

জানতে চাইলে হোটেল অর্কিড গার্ডেনের দায়িত্বরত রিফাত নামে একজন বলেন, আমাদের হোটেলে কক্ষ সংকট। সবই বুকিং হয়ে গেছে। একটা কক্ষই খালি রয়েছে

দাম বাড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, সিলেটের কোনো হোটেল খালি নেই। এই সময়ে সব হোটেলেই দাম বেশি।

সিলেটের হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমাত নুরী জুয়েল বলেন, পূজার ছুটিতে সিলেটে অনেক পর্যটকের সমাগম ঘটেছে। মাস খানেক আগেই অনেকে হোটেল বুকিং করে রেখেছেন। এখন একটি কক্ষই খালি নেই।

তিনি বলেন, এনসিলের কারণে সিলেটের বিভিন্ন হোটেলের প্রায় ২০০টি কক্ষ আগামী ১২ অক্টোবর পর্যন্ত বুকিং করা হয়েছে। যার কারণে এবার পর্যটকরা হোটেল সংকটে পড়েছেন।

বিভিন্ন হোটেলে কৃত্রিম কক্ষ সংকটের বিষয়ে তিনি বলেন, অনেক কম দামি অনেক হোটেল রয়েছে, যাদের কক্ষ ভাড়ার নির্ধারিত তালিকা নেই। এরাই এই মৌসুমে ইচ্ছেমতো দাম বাড়িয়ে দেয়। তবে ভালো মানের কোনো হোটেলে এরকম হয় না।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *