সিলেট জেলা পরিষদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী। সিলেট-২ আসনে নির্বাচনে লড়াইয়ে নামতে তিনি প্রস্তুত। এ কারণে শেষ পর্যন্ত জেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হলেন না। তার এই সিদ্ধান্তে খুশি বিশ্বনাথ ও ওসমানীনগরের আওয়ামী পরিবার।
অন্যদিকে- সিলেট আওয়ামী লীগের ঐক্যর বন্ধন অটুট থাকলো। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নাসির উদ্দিন খান হয়েছেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী। দলের মনোনয়ন চেয়ে বৃহস্পতিবার তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়নপত্র জমাও দিয়েছেন। দৌড়েও এগিয়ে আছেন নাসির উদ্দিন খান। তার পক্ষে জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা একট্টা। দলের নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন- নাসির উদ্দিন খান জেলা পরিষদের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে মাঠে সক্রিয়।
এরইমধ্যে তিনি বিভিন্নস্থানে মতবিনিময় করেছেন। দলীয় জনপ্রতিনিধিদের মতামত গ্রহণের পর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। ফলে নাসির উদ্দিন খানের জন্য হিসাব অনেকখানি সহজ রয়েছে। তারা জানিয়েছেন- জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একক আধিপত্য রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের প্রথম দফা নির্বাচনে প্রশাসক ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ান।
এরপর চেয়ারম্যান হন সাবেক সভাপতি এডভোকেট লুৎফুর রহমান। ফলে এবারো দলীয় নেতাদের চেয়ারম্যান পদে দেখতে চান আওয়ামী পরিবারের সদস্যরা। প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। এ নিয়ে তিনি বিভিন্ন পর্যায়ে কথাবার্তা বলছিলেন। তার পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছিলো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি প্রার্থী হননি। মিসবাহ সিরাজ জানিয়েছেন- পারিবারিক কারণে তিনি প্রার্থী হচ্ছেন না। তবে- দল যাকে মনোনয়ন দেবে তিনি তার পক্ষে সক্রিয় থাকবেন। এদিকে- জেলা পরিষদে প্রার্থী হতে দলীয় মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বিজিত চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সহ- সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা সাদ উদ্দিন ও জেলা পরিষদের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন।
নেতারা জানিয়েছেন- দলীয় ফোরামে জেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকার জন্য জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খানের সঙ্গে মূল লড়াইয়ে রয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বিজিত চৌধুরী। বিজিত চৌধুরী মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা। এখন যারা সিলেট আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের মধ্যে বিজিত চৌধুরী অন্যতম। বিজিত চৌধুরী জানিয়েছেন- নৌকা নিয়ে প্রার্থী হতে তিনি দলের কাছে মনোনয়ন চেয়েছেন। অতীতে তিনি কখনো মনোনয়ন চাননি। দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সবসময় মাঠে কাজ করেছেন।
এবারই তিনি দলের কাছে প্রথম মনোনয়ন চেয়েছেন। দল থাকে মনোনয়ন দিলে তিনি নির্বাচন করবেন। জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাদ উদ্দিন একজন মুক্তিযোদ্ধা। নির্বাচনকেন্দ্রিক রাজনীতিতে অনেকটা নীরব থাকা এ নেতা এবার সরব হয়েছেন। তিনি দলের কাছে নৌকার জন্য টিকিট চেয়েছেন। অন্যদিকে- জেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকার টিকিট প্রত্যাশী জয়নাল আবেদীনের বাড়ি কোম্পানীগঞ্জে। তিনি কোম্পানীগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। গত নির্বাচনে কোম্পানীগঞ্জ থেকে জেলা পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর তিনি প্যানেল মেয়র নির্বাচিত হন। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এডভোকেট লুৎফুর রহমানের মৃত্যুর পর জয়নাল আবেদীনকে করা হয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। এরপর থেকে তিনি দায়িত্ব পালন করে আসছেন। জয়নাল আবেদীন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হতে ইতিমধ্যে তিনি তার নিজ এলাকার জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। স্থানীয় নেতারা জানিয়েছেন- দলীয় মনোনয়ন না পেলে জয়নাল আবারো জেলা পরিষদের সদস্য পদে নির্বাচন করতে পারেন। সেই প্রস্তুতি তার রয়েছে। -মানবজমিন
শেয়ার করুন