স্টাফ রিপোর্টারঃ সিলেট বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ অস্বীকার করলেও এই অঞ্চলে যে নতুন সিএনজিচালিত অটোরিকশা রেজিস্ট্রেশন প্রদানের তোড়জোড় চলছে তা যেকেউ একটু চোখ-কান খোলা রেখে তাদের অফিসের আশপাশে গেলেই বুঝতে পারবেন।
গত সোমবার বিকেলে এই প্রতিবেদকের চোখেও ধরা পড়েছে এমন এমন অনেক চিত্র, যাতে বুঝাই যায়, যা শোনা যাচ্ছে তা সত্যি বটে। আর এ কাজে জড়িত রয়েছেন সিলেট বিআরটিএ অফিসেরই কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী।
অনুসন্ধানে জানা যায়, সিলেট বিআরটিএ অফিসের সহকারী মোটরযান পরিদর্শক (এমবিএআই) সাদিকুর রহমানের আঁতাতে একাধিক চক্র সিএনজিচালিত অটোরিকশা রেজিস্ট্রেশন প্রদানের নামে চুক্তি ভিত্তিতে ফরম বিক্রি করছে। প্রতিটি গাড়ির রেজিস্ট্রেশনের জন্য ১ লাখ ৩৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা নেয়ার কথা। প্রথম ধাপেই একেকটি ফরম বাবদ ১৫ হাজার টাকা করে নেয়া হচ্ছে। আর এ কাজে পরোক্ষ সমর্থন দিচ্ছেন স্বয়ং বিআরটিএ সিলেটের সহকারী পরিচালক রিয়াজুল ইসলাম। যদিও এসব অভিযোগ তিনি সরাসরি প্রত্যাখান করেছেন।
শুধু যে সিএনজিচালিত অটোরিকশার রেজিস্ট্রেশন প্রদানের মাধ্যমে সিলেট বিআরটিএ অফিসের লোকেরা অবৈধ টাকা কামাই করছেন, তা নয়। তাদের বড় একটি আয়ের উৎস হচ্ছে গাড়ির ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান। আর এই কাজেরও প্রধান কারিগর সহকারী মোটরযান পরিদর্শক (এমবিএআই) সাদিকুর রহমান।
কথিত আছে এই অফিসের যতো দালাল রয়েছে সবাই টু-পাইসের বিনিময়ে তাকে দিয়েই সকল অবৈধ কাজ করিয়ে নেয়। এতে করে প্রতিদিনই ২০ থেকে ৩০টি লাইসেন্সের কাগজ জমা পড়ে তার কাছে। প্রত্যেকটি লাইসেন্সের জন্য তিনি নেন দশ থেকে বারো হাজার টাকা। যেখানে বৈধভাবে একটি প্রফেশনাল লাইসেন্স করতে খরচ হয় সর্বসাকূল্যে ২৫ থেকে ২৬শ’ টাকার মতো। আর এতেই অবৈধ উপায়ে তিনি বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করছেন।
সূত্র জানায়, সাদিকুরের কাছে দশ থেকে বারো হাজার টাকা দিলেই কোনো ধরনের পরীক্ষা দেয়ার প্রয়োজন হয়না। তিনি বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা ছাড়াই লাইসেন্স করে দিয়ে থাকেন।
অভিযোগের বিষয়ে সিলেট বিআরটিএ অফিসের সহকারী মোটরযান পরিদর্শক (এমবিএআই) সাদিকুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবী করেন।
তবে সাংবাদিক পরিচয় গোপন করে তার কাছে গাড়ির লাইসেন্স করার ব্যাপারে আলাপ করতে চাইলে তিনি অফিসে গিয়ে আলাপ করার আমন্ত্রণ জানান।
এদিকে, সিলেট বিআরটিএ অফিস থেকে পরীক্ষা ছাড়া লাইসেন্স পাওয়ার কোন সুযোগ নেই বলে জানান বিআরটিএ সিলেটের সহকারী পরিচালক রিয়াজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, এখানে পরীক্ষা দেয়া ছাড়া লাইসেন্স পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। যদি কেউ এরকম করছে প্রমাণ পাওয়া যায়, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শেয়ার করুন