একাধিক ফল্ট সক্রিয় থাকায় সিলেটকে ভূমিকম্পের ‘ডেঞ্জার জোন’ বলে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। গত কয়েক বছরে বহুবার ভূমিকম্পে কেঁপেছে সিলেট। বড় ভূমিকম্পের ঝুঁকি থাকলেও তা মোকাবেলায় সিলেটে নেই কার্যকর উদ্যোগ এমনটাই অভিযোগ সিলেটবাসীর। তবে জনবল ও সরঞ্জাম সংকটের কথা তুলে ধরে নানা পদক্ষেপের কথা জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক বছরে সংগঠিত ভূমিকম্পের অন্তত ২০টির উৎপত্তিস্থল ছিল দেশের অভ্যন্তরে, যার মধ্যে ১১টি হচ্ছে সিলেট অঞ্চলে। বাকি সাতটি ছিল সীমান্ত এলাকাসহ আশপাশের দেশগুলোতে।
একাধিক বিশেষজ্ঞ জানান, বারবার ভূমিকম্প হওয়ার অর্থ এখানকার চ্যুতির লাইনগুলো সক্রিয় আছে।সিলেটবাসীর অভিযোগ, বারবার ভূমিকম্প বড় কিছুই আভাস দিলেও টনক নড়ছে না সংশ্লিষ্টদের। অনেক পাড়া মহল্লার রাস্তাগুলো অনেক সরু। বড় কোন অঘটন ঘটলে সেখানে উদ্ধার চালাতে বেগ পোহাতে হবে কর্তৃপক্ষকে।সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজীব হোসেন বলেন, ভূমিকম্প ক্ষয়ক্ষতি কমাতে পরিকল্পিত নগরায়ন দরকার। সাথে ভূমিকম্প সহনশীল ভবন নির্মাণ করতে হবে। মানুষ সচেতন থাকলে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির কম হবে।
বলছেন, ভূমকম্পে ক্ষায়ক্ষতি কমাতে পরিকল্পিত নগরায়ন দরকার। সাথে ভূমিকম্প সহনশীল ভবন নির্মাণ করতে হবে। একই সাথে ভূমিকম্প হলে ভবনের নিরাপদ নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেওয়া পরামর্শ তাদের।
সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল এন্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. জহির বিন আলম জানান, সিলেটের বেশ কিছু ভবন ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করে সেগুলো সংস্কারে পরামর্শ দেওয়া হয়েছেলো। অনেকেই সেগুলো সংস্কার করেছেন। এখন যার নতুন করে বহুতল ভবন নির্মান করছেন তার যাতে বিল্ডিং কোড মেনে চলেন সেদিকে সংশ্লিষ্টদের খেয়াল রাখতে হবে। একটি বিষয় সবাইকে মাথায় রাখতে হবে ভূমিকম্প হলে যাতে আমরা আতঙ্কিত না হই।
সিলেট সিট করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান জানান, ভূমিকম্প বিষয়ে প্রস্তুতির জন্য একটি বিশেষ কন্ট্রোল রুম গঠন করেছে সিসিক। যেখানে সার্বক্ষণিকভাবে চালু থাকবে সেবা। আমারদের কিছু সরঞ্জাম আছে যা দিয়ে আমরা তাৎক্ষণিক উদ্ধার কাজ শুরু করতে পারবো। বড় ধরনের ক্ষতি হলে সেটি মোকাবিলায় সরঞ্জামের ঘাটতি রয়েছে। একই সাথে জনবল সংকট রয়েছে। এমন দূর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের কাছে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সিলেটের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো: বেলাল হোসেন, যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে আমাদের। তবে দূর্যোগ মোকাবিলায় সরঞ্জাম ও জনবল সংকট রয়েছে। জায়গা সংকটের কারণে আমাদের অনেক সরঞ্জাম সিলেট আনা যাচ্ছে না। তালতলা ফায়ার স্টেশনকে বড় করার পরিকল্পনা করে প্রস্তাব করা হয়েছে। আশা করি এটি হলে আমাদের আরো সরঞ্জাম এখানে নিয়ে আসা জাবে।
এছাড়া ভূমিকম্প নিয়ে মানুষকে সচেতনতার পাশাপাশি অন্তত পাঁচ হাজার ভলান্টিয়ার তৈরি এবং তাদের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছে সিসিক।
শেয়ার করুন