বৃহত্তর সিলেটের অরাজনৈতিক কল্যাণমূলক স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন সিলেট কল্যাণ সংস্থা, সিলেট বিভাগ যুব কল্যাণ সংস্থা ও সিলেট প্রবাসী কল্যাণ সংস্থার যৌথ উদ্যোগে ২১ মে মঙ্গলবার বেলা ১১.৩০ ঘটিকায় সিলেট মহানগরীর ভিক্ষুক ও হিজড়াদের উপদ্রব ও চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। বেলা ১২.৩০ ঘটিকায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বিভাগীয় কার্যালয় সিলেট এর সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আরিফ মিয়ার সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করে মোবাইল রিচার্জের মেয়াদ শেষে অব্যবহৃত মিনিট ও জিবি অপারেটররা কেটে নেওয়ায় বিষয়ে আলোচনা করা হয়। সহকারী পরিচালক আন্তরিকতার সাথে সিলেট কল্যাণ সংস্থার নেতবৃন্দদের সাথে আলোচনা করেন এবং এ ব্যাপারে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের সাথে যোগাযোগ করে পরবর্তী করনীয় নির্ধারণের জন্য পরামর্শ প্রদান করেন।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে জাতীয় যুব দিবস-২০১০ এ জাতীয় যুব পুরস্কার শ্রেষ্ঠ যুব সংগঠক পদকপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও সিলেট কল্যাণ সংস্থার কার্যকরী কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ এহছানুল হক তাহেরের নেতৃত্বে স্মারকলিপি প্রদান ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন সিবিযুকস’র বিভাগীয় কমিটির সভাপতি আলহাজ্জ মুখতার আহমেদ তালুকদার, প্রচার সম্পাদক মোঃ ফুজায়েল আহমদ, সহ-প্রচার সম্পাদক শাহীন আহমেদ, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মোঃ আল-আমিন আহমদ, সিবিযুকস’র সিলেট জেলা কমিটির সভাপতি হাজী মোঃ আশরাফ উদ্দিন, সিবিযুকস’র সিলেট মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ রফিকুল ইসলাম শিতাব, প্রচার সম্পাদক দিপক কুমার মোদক বিলু, সমাজ সচেতন নাগরিকদের মধ্য থেকে নাহিদুল ইসলাম লাভলু ও মোঃ আবুল হাসান।
স্মারকলিপির বিষয়বস্তুঃ হযরত শাহজালাল (রহঃ) ও হযরত শাহপরাণ (রহঃ) এর আধ্যত্মিক স্মৃতি বিজড়িত পূর্ণভূমি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর সিলেট মহানগরীকে হকার (ভ্রাম্যমান ব্যবসায়ী) মুক্ত করায় আপনাকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও প্রাণঢালা অভিনন্দন। নগরীর এখনও অনেক জায়গা হকারদের দখলে রয়েছে। আপনার সুপরিকল্পিত নেতৃত্বে নগরীর প্রধান এলাকাগুলো যেভাবে হকারমুক্ত হয়েছে সেভাবে ৪২টি ওয়ার্ডের প্রতিটি ফুটপাত ও রাস্তা হকারমুক্ত হবে বলে আমরা আশা করছি। ভিক্ষুক ও হিজড়াদের উপদ্রব ও চাঁদাবাজিতে সিলেট মহানগরবাসী অতিষ্ঠ। সিলেট মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ সব পয়েন্টে ভিক্ষুক ও হিজড়াদের উৎপাত মাত্রাতিরিক্তভাবে বেড়েই চলছে। বাসাবাড়ি সহ নগরীর প্রতিটি জায়গায় ভিক্ষুকের জন্য বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে ভিক্ষুক নেই। হাঁটা-চলার জায়গা সহ যেকোন বাহনে ভিক্ষুকের উপদ্রব অন্যান্য সময়ের চেয়ে অনেক গুন বৃদ্ধি পেয়েছে। সব বয়সের অনেকেই ভিক্ষাকে পেশা হিসেবে বেচে নিয়েছে। পাশাপাশি মহানগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে হিজড়াদের উপদ্রব মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সিলেট মহানগরীর বন্দরবাজার, বৃহত্তর জিন্দাবাজার, জল্লারপার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা, সুবিদবাজার, রিকাবীবাজার, লামাবাজার, কাজলশাহ, শিবগঞ্জ, হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার প্রাঙ্গন, হযরত শাহপরাণ (রহ.) মাজার প্রাঙ্গন, মেজরটিলা, বৃহত্তর উপশহর, ভার্থখলা, কদমতলী বাসস্ট্যান্ড, রেলষ্টেশন সহ বিভিন্ন জায়গায় ভিক্ষুকদের দৌরাত্ম সিলেটে আসা পর্যটক, সিলেটের প্রবাসী ও নগরে বসবাসরত নাগরিকদের বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দেয়। অনেক সময় ভিক্ষুকরা পথচারীদের শরীরে হাত দিয়ে জোর করে টাকা দেয়ার জন্য বাধ্য করে। পাশাপাশি হিজড়ারা নগরীর প্রায় পয়েন্টে দলবেঁধে বরযাত্রার গাড়ি, বিদেশ যাত্রীদের গাড়ি সহ যেকোনো অনুষ্ঠানের সাজানো গাড়ি আটকিয়ে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এমনকি গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে চাঁদা না দেওয়া পর্যন্ত জোরজবরদস্তী করে। চাঁদার নির্দিষ্ট পরিমান টাকা না পেলে বা গাড়ির যাত্রীদের মধ্য থেকে কেউ কোনরূপ কথা বলতে গেলেই তারা বিবস্ত্র হয়ে যায়। যা গাড়িতে থাকা পুরুষ ও নারীদের অসম্ভব লজ্জায় ফেলে দেয়। বাধ্য হয়ে তাদের চাহিদার টাকা দিতে হয়। ভিক্ষুক ও হিজড়াদের বাসাবাড়িতে উৎপাততো বেড়ে গেছে। এরমধ্যে হিজড়াদের অনাকাঙ্খিত আচরণ ও উশৃঙ্খলতার মাত্রা সীমানার বাহিরে পৌছে গেছে। যেকোন অনুষ্ঠানের খবর পেলেই দলবেঁধে হিজড়ারা পৌঁছে যায় সেই বাসায়। সেখানে গিয়ে চিৎকার চেঁচামেচি হইচই শুরু করে বড় অংকের চাঁদার টাকা দাবি করে। চাঁদার টাকার পাশাপাশি মারাত্বক উশৃঙ্খলতা সৃষ্টি করে। মানসম্মান বাঁচাতে বাধ্য হয়ে অনেকেই তাদের হাতে তুলে দেন চাঁদার টাকা। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত ভিক্ষুক ও হিজড়াদের শনাক্ত করে পূর্ণবাসন সহ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আপনার সুপরিকল্পিত পদক্ষেপ নিতে আমরা সিলেটবাসী আশা করি।