বিদ্যুতের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি প্রান্তিক
জনগোষ্ঠীর জন্য মরার উপর খাড়ার ঘাঁ
——-মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগরী আমীর মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম বলেছেন- ক্ষমতাসীন সরকারের অপশাসনে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে এমনিতেই মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এর মধ্যে অযৌক্তিকভাবে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য মরার উপর খাড়ার ঘাঁ এর মতো। সরকার জনগণের প্রতিবাদের রাস্তাকে বন্ধ করতে আমীরে জামায়াত ডা: শফিকুর রহমান, সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পারওয়ারসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে অন্যায়ভাবে কারাগারে আটকে রেখেছে। কিন্তু জনগণ সরকারের বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির অযৌক্তি সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছে।
তিনি বলেন, সর্বশেষ গত ১২ জানুয়ারি খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম গড়ে পাঁচ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। যা ১ জানুয়ারি থেকেই কার্যকর হয়েছে। এতে ইউনিট প্রতি দাম বাড়বে ৩৫ পয়সা। ফলে খুচরায় গ্রাহক পর্যায়ে গড়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি পেয়ে গড়ে দাঁড়াবে ৭ টাকা ৪৮ পয়সা। যা রীতিমতো জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করবে। অবিলম্বে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিল করুন। প্রতিহিংসামূলক মামলায় কারাগারে আটক আমীরে জামায়াত, সেক্রেটারী জেনারেলসহ জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এবং সকল রাজবন্দীদের নিঃশর্ত মুক্তি দিন।
তিনি শনিবার কেন্দ্রীয় বিক্ষোভ কর্মসূচীর অংশ হিসেবে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় কারাগারে আটক আমীরে জামায়াত ডা: শফিকুর রহমান সহ সকল রাজবন্দীদের মুক্তির দাবীতে নগরীর আম্বরখানা এলাকায় সিলেট মহানগর জামায়াতে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন। মহানগর সেক্রেটারী মোহাম্মদ শাহজাহান আলীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মিছিল পরবর্তী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন, সিলেট জেলা উত্তর জামায়াতের আমীর হাফিজ আনোয়ার হোসাইন খান, মহানগর নায়েবে আমীর মাওলানা সোহেল আহমদ, সহকারী সেক্রেটারী এডভোকেট মোহাম্মদ আব্দুর রব, জামায়াত নেতা এডভোকেট জামিল আহমদ রাজু, শ্রমিক নেতা ফখরুল ইসলাম খান, দক্ষিণ জেলা জামায়াত নেতা মাওলানা আব্দুস সাত্তার ও মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সিলেট মহানগর সেক্রেটারী শরীফ মাহমুদ প্রমূখ।
সভায় বক্তারা বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে ২০১০ সাল থেকে গ্রাহক পর্যায়ে ১০ বার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। ২০১০ সালের মার্চে প্রথম বিদ্যুতের দাম পাঁচ শতাংশ বাড়ানো হয়। পরের বছর ২০১১ সালে গ্রাহক পর্যায়ে দুই দফা বাড়ানো হয়েছিল। ২০১২ সালেও খুচরা বিদ্যুতের দাম দুই দফা বাড়ানো হয়। এরপর ২০১৪ সালের মার্চে বিদ্যুতের দাম ছয় দশমিক ৯৬ শতাংশ বাড়িয়ে প্রতি ইউনিট করা হয় ছয় টাকা ১৫ পয়সা। আর ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে তা দুই দশমিক ৯৩ শতাংশ বেড়ে হয় ছয় টাকা ৩৩ পয়সা। এদিকে ২০১৭ সালে ডিসেম্বরে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম পাঁচ দশমিক তিন শতাংশ বাড়ানো হয়। ২০২০ সালের মার্চে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের গড় মূল্যহার পাঁচ দশমিক তিন শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। সরকারের ব্যর্থতা, দুর্নীতি ও ভ্রান্তনীতির কারণে দেশের অর্থনীতিতে এবং জনজীবনে তীব্র সঙ্কট চলছে। দ্রব্যমূলের চরম ঊর্ধ্বগতিতে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে, জনগণের জীবনযাত্রার ব্যয় লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, মানুষ কাজ হারিয়ে বেকার হচ্ছে, তখন সরকারের এই গণবিরোধী ও আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত সঙ্কটকে আরো ঘনীভুত করছে। অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে ও কারান্তরীণ সকল রাজবন্দীকে মুক্তি দিতে হবে।
শেয়ার করুন