সিলেট সিটি মেয়র :আলোচনায় আনোয়ারুজ্জামান!

সিলেট

দুই মেয়াদ ধরে সিলেট সিটি মেয়রের পদটি ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের হাতছাড়া। স্বভাবতই দেশের এ গুরত্বপূর্ণ সিটিতে নিজের দখল ফিরে পেতে চাইবে আওয়ামী লীগ। তাই প্রার্থী নির্বাচনে ভুল করার সুযোগ নেই। সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) নির্বাচনের এক বছরও বাকি নেই। মাস চারেক পর শুরু হবে নির্বাচনের দিন গণনা। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কে হতে পারেন তা নিয়ে সাধারণের জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই।

স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন অনুযায়ী, নির্বাচিত কোনো করপোরেশনের মেয়াদ ধরা হয় প্রথম সভা থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর পর্যন্ত।  আর ভোটগ্রহণ করতে হয় এ মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ১৮০ দিনের মধ্যে। সিসিকের সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই। নির্বাচিত পরিষদের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয় ওই বছরের ৭ নভেম্বর। হিসেব অনুসারে সিসিক নির্বাচনের সময় গণনা শুরু হবে চলতি বছরের ৬ মে। আর ভোটগ্রহণ করতে হবে ৫ নভেম্বরের মধ্যে।

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের জন্মলগ্ন থেকেই আওয়ামী লীগের অবিকল্প প্রার্থী ছিলেন সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। বারবার জয় উপহার দিয়েছেন দলকে। তবে শেষ বেলায় তাকে টেক্কা দিয়ে নগরভবনের চাবি হাতের মুঠোয় পুরে নেন বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরী। তবুও দলের আস্থা তার উপরই ছিলো। সর্বশেষ সিটি নির্বাচনে আরও অনেকের নাম আলোচনায় থাকলেও শেখ হাসিনা আস্থা রেখেছিলেন কামরানের উপরই। কামরান নেই-পৃথিবীকে থমকে দেওয়া করোনাভাইরাস নিভিয়ে দিয়েছে তার জীবনদীপ।

সামনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে তাই নতুন মুখ বেছে নিতেই হচ্ছে।

এ তালিকায় বেশ কিছু নাম ঘুরেফিরে আলোচনায় আসছে। তালিকায় নাম আছে বদর উদ্দিন কামরানের রানিংমেট হিসেবে থাকা আসাদ উদ্দিন আহমদের। কামরানের সময় থেকেই আসাদ উদ্দিন আহমদের নাম মেয়র পদে আলোচনায় আসছে, তখনকার মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এখন সহসভাপতি, তার মেয়র প্রার্থী হওয়ার দাবি তাই ফেলে দেওয়ার মতো নয়। মহানগরের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেনেরও চোখ আছে এ পদে প্রার্থিতার দিকে। ধীরে ধীরে নিজেকে এ পদের জন্য প্রস্তুত করছেন মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চারবারের সিটি কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদও।

বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে রাজনীতিতে আসা আরমান আহমদ শিপলুকেও অনেকেই লিস্টে রেখেছিলেন, বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের ছেলে শিপলুও তাই নিজেকে জনগণের সাথে সম্পৃক্ত করছিলেন আরও বেশি করে। তবে হঠাৎই সম্ভাব্য প্রার্থীর এ তালিকাটাকে নড়িয়ে দিয়েছে একটি নাম। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী হিসেবে ভাবনায় যে নামটি কখনওই শর্ট লিস্টে ছিলো না। বাতাসে ফিসফিসানি, সাধারণের ভাবনায় না থাকা নামটিই হাই কমান্ডের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে।

একটি সূত্র বলছে, সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নৌকার টিকিট উঠছে তার হাতেই। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ইতিমধ্যে গ্রিন সিগন্যালও নাকি পেয়ে গেছেন।

সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার সন্তান আনোয়ার চৌধুরী স্থানীয়ভাবে মাঠের রাজনীতিতে সরাসরি না থাকলেও মেকানিজমের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরেই সক্রিয়।

গত সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী কামরানের পক্ষে মাঠ চষে বেরিয়েছিলেন। বসে থাকেননি সংসদ নির্বাচনেও। সিলেট-১ আসনে নৌকার প্রার্থী ড. এ কে আবদুল মোমেনের পক্ষেও দিনরাত এক করেছেন। সিলেট-২ আসনে উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবকে জেতানোর পেছনে নেপথ্য কুশীলব তিনিই।

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর নাম আলোচনায় না থাকলেও নির্বাচনী আলোচনায় তিনি যে ছিলেন না তা নয়। সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেব তার নাম অনেকদিন ধরেই জোরেশোরে আলোচনায় রয়েছে।

তবে কেউ ভাবেননি এমন চমক জমা ছিলো আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর ঝুলিতে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *