সুন্দরবন সংলগ্ন নদী-খালে অবৈধ মাছ ধরা বন্ধ করতে হবে

জাতীয়

শেখ রাসেল
বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি

সুন্দরবন সংলগ্ন নদী-খাল বিষমুক্ত ও শিল্প দূষণমূক্ত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিন। সুন্দরবনে অভয়াশ্রম ঘোষিত নদী-খালে অবৈধ ভাবে মাছ ধরা বন্ধ করতে হবে। সুন্দরবনের প্রাণ পশুর নদীতে শিল্প দূষণ ঠেকাতে না পারলে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র ও বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস হবে। পশুর নদীতে প্রতিনিয়ত তেল-কয়লা-ক্লিংকার বোঝাই কার্গো ও জাহাজ ডুবির ফলে নদীর স্বাস্থ্যহানি ঘটছে। নদী একটি জীবন্ত সত্তা; আসুন এর আইনি অধিকার নিশ্চিত করতে সচেতনতার সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করি। ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস উপলক্ষে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ ও পশুর রিভার ওয়াটারকিপার আয়োজিত মোংলা শিল্প এলাকার পশুর নদীর পাড়ে অবস্থান কর্মসুচি পালনকালে বক্তারা একথা বলেন।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় অবস্থান কর্মসুচি পালনকালে সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পশুর রিভার ওয়াটারকিপার পরিবেশযোদ্ধা মোঃ নূর আলম শেখ। এসময়ে বক্তব্য রাখেন বনজীবী ইস্রাফিল বয়াতি, মোংলা জেলে সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ হাওলাদার,পশুর রিভার ওয়াটারকিপার ভলান্টিয়ার শেখ রাসেল ও সুষ্মিতা মন্ডল, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ’র কমলা সরকার, হাছিব সরদার প্রমূখ। পশুর নদীর পাড়ে অবস্থান কর্মসুচি পালনকালে বক্তারা আরো বলেন নদীকে ঘিরে পৃথিবীর সভ্যতা গড়ে উঠেছে। সব প্রাণীর মিলনস্থল নদী। নদী না থাকলে প্রাণ ও সভ্যতার বিকাশ অসম্ভব। সমাবেশ শেষে পশুর নদীর প্লাস্টিক বর্জ্য অপসারনে প্রতীকী পরিচ্ছন্নতা অভিযান কর্মসুচি পালন করা হয়। অন্যদিকে সকাল সাড়ে ১১টায় আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও পশুর রিভার ওয়াটারকিপার আয়োজনে সুন্দরবনের প্রাণ পশুর নদী পরিদর্শন ও নদী রক্ষার দাবীতে মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করা হয়। নদী পরিদর্শন শেষে বেলা সাড়ে ১২টায় পশুর নদী ও মোংলা নদীর মোহনায় নদী দখল মুক্ত ও দূষণমুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করা হয়। মানববন্ধন চলাকালে সমাবেশে সভাপতিত্ব বাপা মোংলা আঞ্চলিক কমিটির সহ-সভাপতি মীরা মন্ডল। এসময়ে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এর কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মোঃ নূর আলম শেখ। সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাপা নেতা নাজমুল হক, ইদ্রিস ইমন, তন্বী মন্ডল, মাহারুফ বিল্লাহ প্রমূখ। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বাপা’র কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মোঃ নূর আলম শেখ বলেন নদীর প্রতি আমাদের সবার দায়বদ্ধতা রয়েছে। বাংলাদেশের নদী বাংলাদেশের প্রাণ; দেশ বাঁচাতে নদী বাঁচান। তিনি আরো বলেন প্লাবন ভূমিকে নদ-নদী খাতের প্রতি উন্মুক্ত রাখতে হবে, যাতে নদ-নদীর পানি প্লাবন এবং জোয়ার ভূমিতে পৌছাতে পারে। বাণিজ্যিক ও বেষ্টনী পন্থা নয়, নদ-নদীর প্রতি প্রকৃতিসম্মত উন্মুক্ত পন্থা অবলম্বন করতে হবে। নদ-নদীর অববাহিকার বাস্তুতন্ত্রের সুরক্ষার মাধ্যমে এই পন্থা সেখানকার সকল প্রাণী এবং উদ্ভিদের জন্য উপকারী বলে প্রমাণিত। উল্ল্যেখ্য ১৯৯৭ সালের মার্চ মাসে ব্রাজিলের কুরিতিয়া শহরে অনুষ্ঠিত একটি আন্তর্জাতিক সমাবেশ থেকে আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবসের পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। নদীর প্রতি মানুষের করণীয় কী, নদী রক্ষায় দায়িত্ব, মানুষের দায়বদ্ধতা কতটুকু; এসব বিষয়ে স্মরণ করিয়ে দিতে দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত হয়।##

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *