‘সুপার-সাব’ হোসেলুতে আরেক কামব্যাক, ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ

খেলাধুলা

ভিনিসিয়াস জুনিয়র, রদ্রিগো, জুড বেলিংহ্যাম; অনেক তারকা খেলোয়াড় আছেন রিয়াল মাদ্রিদের যাদের সেমিফাইনালের সম্ভাব্য নায়ক ভাবা হচ্ছিল; কিন্তু না, তাদের কেউ না। সেমিফাইনালের আসল নায়ক তাদের কেউ না। বরং এই ম্যাচের নায়ক এমনই একজন যিনি নির্ধারিত সময়ের মাত্র ১০ মিনিট আগে নেমেছিলেন মাঠে। হোসেলু।

বদলি নামা এই হোসেলুর দুই গোলে বায়ার্ন মিউনিখকে হারিয়ে রিয়াল মাদ্রিদ উঠে গেছে আরও এক চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে। এবং এই ম্যাচটাও যথারীতি পিছিয়ে থেকেও শেষ মুহূর্তে ফিরে আসার গল্প লিখে।

সেমিফাইনালের ফিরতি লেগের পুরো ম্যাচে রিয়াল মাদ্রিদের আক্রমণভাগের ভিনিসিয়াস, রদ্রিগোর একের পর শট ঠেকিয়ে দিচ্ছিলেন বায়ার্ন মিউনিখের গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নয়্যার। মাঝে আলফনসো ডেভিসের গোলে এগিয়েও যায় তার দল। দুই লেগ মিলিয়ে এক গোলে এগিয়ে বাভারিয়ানরা, নির্ধারিত সময়ের বাকি আর মিনিট পাঁচেক; ফাইনালের স্বপ্ন দেখতেই পারত তারা।

কিন্তু এরপরই ঘটল ঘটনা। সারা ম্যাচে দুর্দান্ত খেলতে থাকা ম্যানুয়াল নয়্যার শেষ মুহূর্তের চাপের কাছে ভেঙে পড়লেন মুহূর্তে, করলেন এমন এক ভুল যা তিনি সচরাচর করেন না। ৮৮ মিনিটে করা তার ভুলে সুযোগ পেয়েই কাজে লাগিয়ে রিয়ালের নায়ক বনে গেলেন হোসেলু। ভিনিসিয়াসের দুরন্ত শট বুকে নিতে গিয়ে হঠাৎ করে একটু ওপরে উঠে গেলে পাশে থাকা স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড দ্রুতই নয়্যারের দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন। ৩ মিনিট পর যোগ করা সময়ে গোল করে বায়ার্নের কাছ থেকে ম্যাচটাই ছিনিয়ে নিলেন সুপার সাব হোসেলু।

সেমির আগের লেগের ম্যাচটি বায়ার্নের মাঠে শেষ হয়েছিল ২-২ ড্রয়ে, এবার ফিরতি লেগে ২-১ ব্যবধানে জিতে দুই লেগ মিলিয়ে ৪-৩ ব্যবধানে ফাইনালে উঠে যায় রিয়াল। এতে রেকর্ড ১৪টি শিরোপাজয়ী দলটি ফাইনালে উঠল রেকর্ড ১৮ বারের মতো। আগামী ১ জুন ১৫তম শিরোপা জয়ের লক্ষ্য ওয়েম্বলিতে বুরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে নামবে ভিনিসিয়াস-বেলিংহামরা।

গত রাতের ম্যাচটির আগেই রিয়াল কোচ আনচেলত্তি বলেছিলেন, বায়ারন-রিয়াল সমান শক্তিশালী। সেটির মিল রেখেই যেন শুরু থেকেই লড়ছিল দুই দল। ম্যাচের ২৯তম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারতো বায়ার্ন। ডি-বক্সের বাইরে থেকে হ্যারি কেইনের নেওয়া দারুণ এক শট সেখানে ঠেকিয়ে দেন রিয়াল গোলরক্ষক আন্দ্রে লুনিন। এদিকে পাল্টা-আক্রমণে রিয়ালের একাধিক শট রুখে দেন নয়্যার। প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্য সমতায়।

পরে দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের মাত্রা আরও কয়েক গুণে বাড়ায় রিয়াল। ৫৮ ও ৫৯ মিনিটে রদ্রিগোর ফ্রি-কিকের পর ভিনিসিয়াসের জোরালো এক শটে ঠেকিয়ে দেন নয়্যার। এগিয়ে যাওয়ার দৌড়ে স্বাগতিকরা ছিল এগিয়ে। তবে তা ছাপিয়ে ৬৮তম মিনিটে গোল করে বসলেন বায়ার্ন উইঙ্গার আলফনসো ডেভিস। ডি-বক্সের বাঁ প্রান্ত দিয়ে ভেতরে ঢুকে কারবাহাল-রুডিগারদের পাশ কাটিয়ে কোণাকুনি দারুণ এক শটে বল লক্ষ্যে পৌঁছান এই কানাডিয়ান ফুটবলার।

পিছিয়ে পড়ে একের পর সুযোগ তৈরি করেও সমতায় ফিরতে পারছিল না রিয়াল। আক্রমণ বাড়াতে ৮১তম মিনিটে ফেদে ভালভার্দেকে তুলে হোসেলুকে নামান আনচেলত্তির। সেই সাবই শেষ পর্যন্ত পরিণত হলো সুপার সাবে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *