সুরমা নদী

মুক্তমত

মণিপুর পাহাড়ে মাও সংসাং হতে বরাক নদীর উৎপত্তি। আসামের নাগা মণিপুর অঞ্চল থেকে উৎপন্ন হয়ে বাংলাদেশ সীমান্তে নদীটি দুই শাখায় বিভক্ত হয়ে জকিগঞ্জ, কানাইঘাট,বিয়ানীবাজার, সিলেট সদর, দক্ষিণ সুরমা উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সিলেট জেলায় প্রবেশ করেছে। এর উত্তরের শাখাটি সুরমা পশ্চিম দিকে বিশ্বনাথ উপজেলা হয়ে সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। আজমেরিগঞ্জের কাছে উত্তর সিলেটের সুরমা, আর দক্ষিণের শাখা সিলেটের কুশিয়ারা নদী এবং হবিগঞ্জে সিলেটের কালনী নদী একসঙ্গে মিলিত হয়েছে। এর পরে সুরমা ও কুশিয়ারার মিলিত প্রবাহ কালনী নামে দক্ষিণে কিছুদূর প্রবাহিত হয়ে মেঘনা নাম ধারণ করেছে। মেঘনা ভৈরব বাজারে পুরাতন বহ্মপুত্রের সঙ্গে এবং চাঁদপুরের কাছে পদ্মার সঙ্গে মিলিত হয়ে মেঘনা নামে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়েছে।

সুরমা নদী বাংলাদেশের প্রধান নদীসমূহের অন্যতম। এটি সুরমা-মেঘনা নদী ব্যবস্থার অংশ। উত্তর পূর্ব ভারতের বরাক নদী বাংলাদেশে প্রবেশ করার সময় সুরমা ও কুশিয়ারা নদীতে বিভক্ত হয়ে যায়। সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ এর উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে মেঘনায় মিশেছে। বাংলাদেশের নদী ব্যবস্থাকে ৪ টি ভাগে ভাগ করা হলে সুরমার মিল হয় মেঘনা নদীর সাথে। এই দুটি নদী কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরববাজারের কাছে পুনরায় মিলিত হয়ে মেঘনা নদী গঠন করে। এবং পরিশেষে বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়। আবার সুরমা ও কুশিয়ারা মিলিত হয়ে কালনী নাম ধারন করে। কালনী নদী পরে ভৈরব বাজারে এসে মিলিত হয়।

সিলেট একটি প্রাচিন জনপদ। বাংলাদেশের বিশাল অংশ যখন সাগরের গর্বে বিলীন, সিলেটে তখনো ছিল সভ্য সমাজ। সিলেটের ভাটি এলাকাও এক সময় ছিল সমুদ্র। কিন্তু উচু ও পার্বত্য এলাকায় ছিল জনবসতি। খৃষ্টপূর্ব চার হাজার অব্দেও সিলেটে উন্নত সমাজ ছিল। ১৩০৩ খৃষ্টাব্দে হযরত শাহজালাল (র:) আগমনের পর এ ভূখন্ড শিলহট, জালালাবাদ, বা সিলেট নামে পরিচিত হয়ে উঠে। বিভিন্ন তন্ত্রতে সিলেটের উল্লেখ আছে। তন্ত্রগুলোতে সিলেটকে শ্রীহট্ট, শিরিহট্ট, শিলহট্, শিলহট বলা হয়েছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *