সৌদি গিয়ে বিপাকে হবিগঞ্জের তরুণী, দেশে ফেরার আকুতি

হবিগঞ্জ

সৌদি আরবে মালিক ও তার পরিবারের সদস্যদের নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের এক তরুণী। তাই দেশে ফিরতে ভিডিও কলে তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি আকুতি জানিয়েছেন তিনি।

নির্যাতনের শিকার তরুণী শিল্পী আক্তার (২৫) চুনারুঘাট উপজেলার আহম্মদাবাদ ইউনিয়নের তৈইগাঁও গ্রামের আব্দুল মজিদের মেয়ে।

ওই তরুণীর পরিবার জানায়, পরিবারের অস্বচ্ছলতার কথা চিন্তা করে ২০১৯ সালের এপ্রিলে সৌদি আরবে যান শিল্পী আক্তার। সেখানে যাওয়ার পর একটি বাসায় গৃহকর্মীর চাকরি নেন তিনি। কাজও করতে থাকেন সেখানে। তবে কাজে ছোটখাট ভুল হলেই মারধরের শিকার হন শিল্পী। প্রতিনিয়ত তাকে শারীর নির্যাতন করেন বাসার মালিক ও ছেলে ও মেয়েরা।

পরিবার থেকে জানানো হয়, মা ও বাবা এবং অস্বচ্ছল পরিবারের কথা চিন্তা করে সব নির্যাতন নীরবে সয়ে যান শিল্পী। কথা ছিলো দুই বছর সেখানে থাকার পর ২০২১ সালের এপ্রিলে তাকে দেশে পাঠিয়ে দেবে। কিন্তু দুই বছর অতিক্রম হলেও তাকে দেশে পাঠানো হয়নি। উল্টো ভিসার মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছে। দেশে আসার কথা বললে শিল্পীর ওপর নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনে বর্তমানে শিল্পী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। মা-বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলতে চাইলেও কথা বলতে দেওয়া হয় না।

শিল্পী আক্তারের মা নূরচাঁন বিবি বলেন, আমি আমার মেয়েকে ফিরে চাই। কিন্তু তারা আমার মেয়েকে আসতে দিচ্ছে না। ট্র্যাভেলসের লোকেরাও মেয়েকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করছে না। তাই বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ আমার মেয়েকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা যেন করা হয়।

নূরচাঁন বিবি জানান, মেয়ে কেঁদে কেঁদে তাকে বলেছেন, ‘তুমরার কাছে আমি ভিক্ষা চাই। আমারে দেশে ফিরাইয়া নেও। তিন বছর ধইরা আমারে আটকাইয়া রাখছে। আমারে ধরে-মারে। মালিকে মারে, মালিকের পুলা-পুইরে মারে। আমারে খানি দেয় না, একবার দিলে-আরেকবার দেয় না। ঘরের ভেতরে তালা মাইরা রাখে। দেশে ফিরাইয়া না নিলে আমারে মাইরালাইব, লাশ কইরা বাংলাদেশে পাঠাইব।’

শিল্পীর স্বজনরা জানান, ঢাকার পুরানা পল্টন এলাকার ‘৪ সাইট ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড’র মাধ্যমে সৌদি আরব যান শিল্পী। এই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক খালেদ হোসাইন বলেন, মেয়েটিকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ে এক মাস আগে যোগাযোগ করা হয়েছে। আশা করি দ্রুত তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।

চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সিদ্ধার্থ ভৌমিক বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। দূতাবাসের মাধ্যমে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *