ভুল চিকিৎসায় নারীর মৃত্যুর অভিযোগে গ্রেফতার ডা. এস কে ঘোষের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা ও গ্রেফতারের প্রতিবাদে হবিগঞ্জে সব ধরনের প্রাইভেট চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচার অনির্দিষ্টকালে জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছেনচিকিৎসকরা। শনিবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যার জেলা সদর হাসপাতালের সভাকক্ষে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
হবিগঞ্জে সর্বস্তরের চিকিৎসকগণ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জানিয়ে হবিগঞ্জের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুখলিছুর রহমান উজ্জল জানান- সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবা দেয়া হবে। শনিবার থেকে হবিগঞ্জে সকল ধরনের প্রাইভেট চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন হবিগঞ্জের সর্বস্তরের চিকিৎসকগণ।
ডা. আশিকুল মোহিত খান বলেন ডা. এসকে ঘোষ একজন সিনিয়র চিকিৎসক। তাকে মিথ্যা মামলায় হয়রানীর জন্য কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। আমরা এই মিথ্যা মামলা ও হয়রানীর প্রতিবাদে হবিগঞ্জের সকল ডাক্তার প্রাইভেট চিকিৎসা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমারা ডা. এস কে ঘোষের মুক্তি চাই। এছাড়াও চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় হয়রানী বন্ধেরও দাবী জানাই।
দুপুরে অনুষ্ঠিত সভার সভাপতি ডা. অসিত রঞ্জন দাস গুপ্ত বলেন- আমরা কোন সংগঠনের ব্যানারে এই সিদ্ধান্ত নেইনি। আমি সিনিয়র হিসেবে আমাকে সভাপতি করা হয়েছে। সকল চিকিৎসকগণের মতামত অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য আমি বলেছি।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক দেবী চন্দ বলেন- এখনো ডাক্তারদের কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত জানিনি। আমি বিষয়টি দেখছি।
হবিগঞ্জে ‘দি জাপান বাংলাদেশ হসপিটাল’ নামের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় রহিমা খাতুন নামের এক নারীর মৃত্যুর অভিযোগে গাইনী বিশেষজ্ঞ ডা. এস কে ঘোষসহ চারজনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) তারা আগাম জামিন নিতে গেলে বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও মো. বশির উল্লার বেঞ্চ তাদের জামিন আবেদন খারিজ করে দেন।
গত ৯ সেপ্টেম্বর হবিগঞ্জ শহরের দি জাপান বাংলাদেশ হসপিটালে রহিমা খাতুন (৫৫) নামে নারীর পেটে টিউমার অপারেশ করেন ডা. এস কে ঘোষ। ১২ সেপ্টেম্বর ছাড়পত্র দিয়ে রোগীকে হাসপাতাল ছাড়তে বাধ্য করা হয়। এরপর ওই নারীর অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রহিমা খাতুনের মৃত্য হয়।
এরপর ভুল চিকিৎসার অভিযোগ এনে ওই নারীর চাচাত ভাই হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বড় বহুলা গ্রামের রহমত আলী হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। এতে ডা. এস কে ঘোষকে প্রধান করে পরিচালক এ কে আরিফুল ইসলাম, তার ভাই তাবির হোসাইন ও হাসপাতালের ম্যানেজার জনি আহমেদকে আসামী করা হয়। আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসাইন মামলার গুরুত্ব, প্রকৃতি ও নিবিড়ভাবে তদন্তের স্বার্থে মামলাটি হবিগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জকে এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করতে নির্দেশ দেন। গত ৮ নভেম্বর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মঈন খান এলিসের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য রহিমা খাতুনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়।
শেয়ার করুন