হবিগঞ্জ বৃন্দাবন সরকারি কলেজে দিনেদুপুরে প্রহরী দ্বারা ধর্ষণের অভিযোগ এনে প্রিন্সিপালের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরও কলেজের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে প্রতিবেদন দেয়ার কথা থাকলেও তা প্রকাশ করেনি। নির্যাতিত শিক্ষার্থী ও তার পরিবার সামাজিক হেনস্থার ভয়ে মামলায় যায়নি। কিন্তু জেলার এই সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে শিক্ষার্থী হেনস্থার অভিযোগ নিয়ে সর্বত্র আলোচনা চলছে। অবশ্যই ৭২ ঘন্টার মধ্যে কলেজ কর্তৃপক্ষ, পুলিশ বা প্রশাসন স্বপ্রণোদিত বাদি হয়ে মামলা দায়ের করতে হবে। যাতে দোষী ব্যক্তি ও তার সহযোগীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা যায়।
বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) বেলা ১২টায় হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে বৃন্দাবন সরকারি কলেজে প্রহরী দ্বারা শিক্ষার্থী ধর্ষণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা এই আল্টিমেটাম দেন। সম্মিলিত নাগরিক আন্দোলনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই বিক্ষোভে নানা শ্রেণী-পেশার লোকজন উপস্থিত থেকে সংহতি জানান।
সংগঠনটির আহ্বায়ক পীযুষ চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে ও লেখক সিদ্দিকী হারুনের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন রাজনীতিক এডভোকেট জুনায়েদ আহমেদ, বৃন্দাবন সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি আবু হেনা মোস্তফা কামাল, বাপা হবিগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল, খোয়াই থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন খা, নারী অধিকারকর্মী মাহমুদা খা, নাট্যশিল্পী অদ্বিতীয়া ধর প্রমুখ। এসময় শিক্ষার্থীরা ধর্ষণের বিরুদ্ধে নানা ধরণের প্লেকার্ড প্রদর্শন করেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কলেজ কর্তৃপক্ষের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি। শুধু সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে। শিক্ষার্থী ধর্ষণের অভিযোগটি গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন নিজে থেকে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। উল্টো ধর্ষণে অভিযুক্ত কলেজ প্রহরী রোমান মিয়া ও তার সহযোগীরা ফেসবুকে ভিডিও বক্তব্য প্রচার করে অভিযোগকারী সম্পর্কে অশ্লীল মন্তব্য প্রচার করছে। যারা সরাসরি ধর্ষণে অভিযুক্তের পক্ষে ফেসবুকে প্রচারণা চালাচ্ছে তাদেরকেও দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।
এডভোকেট জুনায়েদ আহমেদ বলেন, আগে এই কলেজ ছিল মুক্ত স্বাধীন। এই শিক্ষাঙ্গণের শিক্ষার্থী ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্বে দিয়েছে। কিন্তু এখন কলেজকে একটি কারাগারের মত করা হয়েছে। ছাত্রদের কোন ক্ষমতা নেই কলেজটিতে। ছাত্র রাজনীতিও প্রায় শূন্যের কোঠায়। এজন্যই একজন প্রহরী দিনেদুপুরে একজন শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের দুঃসাহস রাখে।
বিক্ষোভ সমাবেশের সভাপতি পীযুষ চক্রবর্তী তিনটি দাবি উত্থাপন করে বলেন, ৭২ ঘন্টার মধ্যে কলেজ কর্তৃপক্ষ বা প্রশাসন স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলা দায়ের করে আইনী প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। রোমান মিয়া ও তার সহযোগীদের গ্রেফতার করতে হবে। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীকে সর্বোচ্চ শাস্তি পর্যন্ত নিয়ে যেতে হবে।
শেয়ার করুন