হবিগনজ প্রতিনিধিঃ নবীগঞ্জ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ৮৭টি ও পৌরসভায় ৭টি মিলে ৯৪টি পূজার মন্ডপে এবার অনুষ্টিত হচ্ছে পূজা। আগামী ১ অক্টোবর শনিবার ষষ্টীবিহিত পূজার মাধ্যমে শুরু হচ্ছে ৫ দিনব্যাপী বাঙ্গালী হিন্দু সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ উৎসব শারদীয় দুর্গাপুজা। আনন্দময়ীর আগমনে ধনী-গরিব আবালবৃদ্ধ সকল পূজারী ও ভক্তবৃন্দের মাঝে যেন আনন্দের কমতি নেই কোন অংশেই। গতকাল শুভ মহালয়ার মাধ্যমেই বাঙ্গালী হিন্দুদের সর্ববৃহৎ উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজার আগমনী সুর ইতিমধ্যে সকলের মাঝে বিরাজ করছে।
প্রতিটি পূজা মন্ডপে প্রতিমা তৈরীর কাজ সম্পাদন করার জন্য দিনরাত নিরবিছিন্ন ভাবে কাজ করে প্রতিমা তৈরীর কাজ প্রায় শেষ করছেন বলে জানিয়েছেন নিয়োজিত প্রতিমা শিল্পী সঞ্জিত পাল। প্রতিমা তৈরীর কাজ শেষ করে রং তুলির আছড়ে সৌন্দর্য্য বর্ধনের কাজও শুরু করে শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রতিমা রঙ্গের চিত্রশিল্পীরা। তারপর মন্ডপ সাজসজ্জার কাজ শেষ করলেই উৎসবের আমেজে মেতে উঠবেন সবাই। তাই শারদীয় এ পূজাকে কেন্দ্র করে হিন্দু ধর্মাবলম্বী সকল পূজারী ও ভক্তবৃন্দের মাঝে বিপুল আনন্দ ও উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে। আনন্দ ও উৎসাহ উদ্দীপনা ঘাটতি নেই বিভিন্ন সংগঠন ও সামাজিক লোকজনের মাঝেও। বৈশ্বিক মহামারী করোনা পরবর্ত্তী সময়ে সরকার নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পূজার আনন্দ ভাগাভাগি করবেন বলে জানিয়েছেন সকল পূজারীবৃন্দ।
শাস্ত্রমতে জানা যায়, এ বছর দেবীর গজে আগমন ফল শষ্যপূর্না বসুন্ধরা এবং দেবীর নৌকায় গমন করবেন ফল শষ্যবৃদ্ধি তথা জলবৃদ্ধি। সমাজের সকল আসুরিক শক্তির বিনাশ সাধন করে সর্বত্র শান্তি স্থাপনের মুলমন্ত্রই হলো শারদীয় দুর্গাপূজার মুল উদ্দেশ্য। সারা দেশের ন্যায় এ বছর নবীগঞ্জ ১৩টি ইউনিয়নে ৮৭টি এবং পৌরসভায় ৭টি মন্ডপে সাড়ম্বরে পূজা অনুষ্টিত হবে। প্রত্যেক পূজা মন্ডপের নিরাপত্তা রক্ষায় এ বছর সরকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পুলিশ ও আনসার বাহিনীর লোকসহ স্বেচ্ছাসেবকরাই প্রতিটি পূজামন্ডপে দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া উপজেলায় ৯৪ টি পূজা মন্ডপের জন্য নবীগঞ্জ থানা পুলিশের মোবাইল টীম ও স্টাইকিং ফোর্সসহ সার্বক্ষনিক নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্ব পালন করবে। ইতিমধ্যে গত ২৪ সেপ্টেম্বর নবীগঞ্জ থানা প্রশাসন শারদীয় দূর্গাপুজায় যথাযথভাবে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বিশেষ আইন শৃঙ্খলা সভাসহ ব্যাপক প্রস্তুতি হাতে নিয়েছেন। আজ সোমবার উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ও বিশেষ আইন শৃংখলা কমিটির সভা অনুষ্টিত হবে বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইমরান শাহরিয়ার জানান। এখন শুধু মাত্র অপেক্ষার পালা। আর মাত্র ৪ দিন পরেই প্রতিটি পূজামন্ডপে পঞ্চমীর বোধনের মাধ্যমে অসুর শক্তি বিনাশীনি দেবী দুর্গা এ মর্ত্যধামে আবাহন করবেন। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ নবীগঞ্জ উপজেলা কমিটির সভাপতি সুখেন্দু রায় বাবুল ও সাধারন সম্পাদক নির্মলেন্দু দাশ রানা বলেন, আসন্ন শারদীয় দুর্গাপুজা সুন্দর ও সুষ্টভাবে সম্পাদনের জন্য আমাদের সেচ্ছাসেবক ও পুলিশ প্রশাসনসহ সকল শ্রেনীপেশার মানুষের সহযোগীতা কামনা করি।
উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি নারায়ন রায় ও সাধারণ সম্পাদক ও প্রেসক্লাব সাবেক সভাপতি উত্তম কুমার পাল হিমেল বলেন, নবীগঞ্জ উপজেলার ৯৪টি পূজা মন্ডপে সর্ববৃহৎ উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা সাড়ম্বরে পালনের প্রস্ততি হাতে নেওয়া হয়েছে। পৌর এলাকাসহ কিছু ঝুকির্পূণ মন্ডপসহ সবকটি মন্ডপেই ইতিমধ্যে প্রশাসনিক ব্যবস্থা জোরদারের প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। দুর্গাপূজা সুন্দর ও সুষ্টভাবে সম্পাদনের জন্য ধর্মবর্ণ নিবিশেষে সকল শ্রেনী পেশার মানুষের সহযোগীতা কামনা করি।
ওসি ডালিম আহমদ বলেন,শারদীয় দুর্গাপুজা সুন্দরভাবে পালনের জন্য সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক থানা পুলিশের পক্ষ থেকে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান শাহরিয়ার বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা সুন্দর ও সুষ্টভাবে পালনের জন্য সরকার ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাযথভাবে সরকারী নির্দেশনা মেনে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহায়তার জন্য গতকাল বিশেষ আইনশৃঙ্গলা সভা হয়েছে।
শেয়ার করুন