হেমন্তের শুরুতেই শীতের ছোঁয়া

জাতীয়

হেমন্তের শুরুতেই কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে দক্ষিণের জেলা ঝালকাঠি। সকাল ৮টার আগে মিলছে না সূর্যের দেখা। এতে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে যানবাহন। তবে নদীতে খেয়া নৌকা পারাপারে পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্য আলো ছড়ালেও সকালের আকাশ এখনো মেঘ-কুয়াশাচ্ছন্ন।

শরতের শেষের দিকেই এ কুয়াশা নিয়ে এসেছে শীতের আগমনী বার্তা। অগ্রহায়ণে শীত পড়তে শুরু করলেও প্রায় মাসখানেক আগেই কুয়াশা পড়তে শুরু করেছে নদী তীরবর্তী উপকূলীয় অংশে। এ কুয়াশা কিছু মানুষের জন্য উপভোগের হলেও শিশু-বয়স্ক ও কৃষকদের জন্য আতঙ্কের কারণ।

পৌর শহরের বান্দাঘাটা এলাকার বাসিন্দা মো. জহির বলেন, দেশের ষড়ঋতু এখন আর ঠিক নেই, কেমন যেন বৈচিত্র্যময় হয়ে গেছে। কারণ গরমের মধ্যে শীত, শীতের মধ্যে বৃষ্টি, বৃষ্টির মৌসুমে কুয়াশা পড়ছে। ভোরে প্রচণ্ড কুয়াশা সকাল ৭টা পর্যন্ত সূর্যের দেখা মেলেনি।

ছৈলাবুনিয়া এলাকার বাসিন্দা মো. কামাল হোসেন বলেন, ভোরে যেভাবে কুয়াশা পড়েছে, মনে হচ্ছে যেন এখন শীতকাল। ঠান্ডা ঠান্ডা আছে তার মধ্যে আবার ভ্যাপসা গরমও।

শহরতলীর কিস্তাকাঠি এলাকার বাসিন্দা মো. জামাল হোসেন বলেন, ভোরের কুয়াশায় রাস্তায় চলাচলে কষ্ট হচ্ছে। গাড়ির হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। বেশি ভোগান্তি হচ্ছে নদীর খেয়া পার হতে। ষড়ঋতুর বৈচিত্র্যময় পরিবর্তন ঘটায় এখন গরম, শীত ও বর্ষাকাল পরিলক্ষিত হচ্ছে।

অসময়ে শীতের কুয়াশায় মাঠ ফসলের ক্ষতিসহ মানুষের মাঝেও নানা রোগবালাইয়ের প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। ঝালকাঠির সিভিল সার্জন ডা. এইচএম জহিরুল ইসলাম বলেন, রাতের-ভোরের কুয়াশায় ঠান্ডা ও দিনের বেলার গরমের ঘাম বসে শিশু-বৃদ্ধদের ফুসফুস আক্রান্ত হয়ে শ্বাসকষ্ট বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, অসময়ে কুয়াশার কারণে মাঠের ধানে কারেন্ট পোকার আক্রমণ ঘটতে পারে। এ ছাড়া নরম সবজি হিসেবে আলু, পুইশাক ও টমেটোতে পচন ধরা রোগ দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ঝালকাঠির পরিবেশবিদ মুহাম্মদ আলআমিন বাকলাই বলেন, মূলত জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণেই ষড়ঋতুর বৈচিত্র্যময় পরিবর্তন পরিলক্ষিত হচ্ছে। যার বিরূপ প্রভাব পড়ছে মানুষের জীবন, পরিবেশ ও প্রকৃতিতে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *