ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রতিষ্ঠার ১০৩ বছর পেরিয়ে ১০৪ বছরে পদার্পণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। ১৯২১ সালের আজকের এই দিনে ৮৪৭ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু। সে-সময় ছিল ৩টি অনুষদ ও ১২টি বিভাগ।
তরুণ প্রজন্মের দক্ষতা উন্নয়নে উচ্চশিক্ষা-এই প্রতিপাদ্য নিয়ে বর্ণাঢ্য কর্মসূচির মাধ্যমে দিনটি উদযাপন করা হবে। রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে প্রেরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
ব্রিটিশ শাসন থেকে শুরু করে আজ অবধি দেশের মাটি ও মানুষের সবধরনের ক্রান্তিলগ্নে সামনের সারিতে থেকে পথের দিশা, আলোর ঝলকানি দেখিয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়। বঙ্গভঙ্গের কারণে ক্ষুণ্ণ হওয়া পূর্ববঙ্গের মুসলমানদের স্বার্থরক্ষার জন্য জন্ম নিয়ে পরে দেশভাগ থেকে শুরু করে ভাষা আন্দোলন, ৬ দফা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ সব যৌক্তিক আন্দোলনের সূতিকাগার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল এদিন ১০টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র সম্মুখস্থ পায়রা চত্বরে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কর্মসূচি অনুযায়ী আগামীকাল সকাল ৯ টা ৩০মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল হল ও হোস্টেল থেকে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ শোভাযাত্রা সহকারে স্মৃতি চিরন্তন চত্বরে সমবেত হবেন।
স্মৃতি চিরন্তন চত্বর থেকে সকাল ৯ টা ৪৫ মিনিটে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অ্যালামনাই, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা সহকারে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের সম্মুখস্থ পায়রা চত্বরে গমন করবেন। সকাল ১০টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র সম্মুখস্থ পায়রা চত্বরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকা, বিশ্ববিদ্যালয় ও হলসমূহের পতাকা উত্তোলন, পায়রা, বেলুন ও ফেস্টুন উড়ানো, কেক কাটা এবং সংগীত বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয়ের থিম সং ও উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশিত হবে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপনের কারণে, সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত নীলক্ষেত ও ফুলার রোড সংলগ্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। এ সময় বিকল্প রাস্তা ব্যবহারের অনুরোধ জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
সকাল পৌনে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের এক শোভাযাত্রা ভিসি চত্বর থেকে টিএসসির পায়রা চত্বরে গিয়ে শেষ হবে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের বিভিন্ন কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর সকাল ১০.৩০টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের প্রতিপাদ্য ‘তরুণ প্রজন্মের দক্ষতা উন্নয়নে উচ্চশিক্ষা’ বিষয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যানসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অ্যালামনাই ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করবেন।
আলোচনা সভার শুরুতে দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রকাশিত ‘স্মরণিকা’ ও ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইতিহাস ও ঐতিহ্য’ শীর্ষক গ্রন্থের ২য় খণ্ডের মোড়ক উন্মোচন করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল গণমাধ্যমকে বলেন- একাডেমিক পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ২০৩৫ সালের মধ্যে এ বিদ্যাপীঠ উচ্চতর গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হবে, যা কার্নেগির শ্রেণিবিভাজন অনুযায়ী আরটু বিশ্ববিদ্যালয়। এ ধারাবাহিকতায় ২০৪৫ সালের মধ্যে এটি রূপান্তরিত হবে গবেষণা-প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ে, যা কার্নেগির বিভাজনে আর-ওয়ান বিশ্ববিদ্যালয়।
শেয়ার করুন