১৬ বছরের বর্ণিল ক্যারিয়ারে তামিমের যত অর্জন

খেলাধুলা

গত বছর ১৬ জুলাই আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছিলেন ৩৪ বছর বয়সি ওপেনার তামিম ইকবাল। আজ ওয়ানডে ও টেস্ট থেকেও অবসরের ঘোষণা দিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকালের সেরা ওপেনার। 

সংবাদ সম্মেলনে অশ্রুসজল চোখে তামিম বলেছেন, ‘আফগানিস্তানের বিপক্ষে গতকালের ম্যাচটিই আমার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ। এ মুহূর্ত থেকে আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাচ্ছি।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার বিচরণ শুরু সেই ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে। স্রেফ চার ওয়ানডের অভিজ্ঞতায় খেলতে যান বিশ্বকাপে। খেলতে নেমে প্রথম ম্যাচেই ভারতের বিপক্ষে স্মরণীয় এক জয়ে দাপুটে ফিফটি করে নজর কাড়েন ক্রিকেটবিশ্বের।

এর পর নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ক্রমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন দেশের সফলতম ব্যাটসম্যান হিসেবে। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে বাংলাদেশের ব্যাটিং রেকর্ডের অনেক কিছুই নিজের করে নেন তামিম। বাংলাদেশের ক্রিকেটে অনেক ‘প্রথম’ কিছুর জন্ম হয় তার হাত ধরে।

বিদায়বেলায় তার নামের পাশে ৭০ টেস্টে ৩৮.৮৯ গড়ে রান ৫ হাজার ১৩৪। সেঞ্চুরি ১০টি, ফিফটি ৩১টি। টেস্টে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান ও সেঞ্চুরি তার।

ওয়ানডে ২৪১টি খেলে ৩৬.৬২ গড়ে রান করেছেন ৮ হাজার ৩১৩। ১৪ সেঞ্চুরির পাশে এখানে ফিফটি ৫৬টি। এই সংস্করণে দেশের হয়ে রান, সেঞ্চুরি, ফিফটি— সবকিছুতেই তিনি সবার ওপরে।

৭৪ ম্যাচে ১ হাজার ৭০১ রান নিয়ে তিনি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিকে বিদায় বলেছেন গত জুলাইয়েই। এ সংস্করণে দেশের হয়ে একমাত্র সেঞ্চুরিয়ান তিনি।

তিন সংস্করণ মিলিয়ে ১৫ হাজার রান করা দেশের একমাত্র ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার সেঞ্চুরি ২৫টি। বাংলাদেশের হয়ে ২০ সেঞ্চুরিও নেই আর কারও।

২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ড সফরে নিয়মিত অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের চোটের কারণে ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়ে দেশের হয়ে প্রথম অধিনায়কত্বের স্বাদ পান তামিম। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর পর শ্রীলংকা সফরে তিন ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দেন তিনি মাশরাফি বিন মুর্তজার চোটে পড়ায়। ২০২০ সালে মাশরাফি নেতৃত্ব ছাড়ার পর ওয়ানডে দলের নিয়মিত অধিনায়কের দায়িত্বও পান তামিম।

সব মিলিয়ে ৩৭ ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি, জয়ের দেখা পেয়েছেন ২১টিতে। অন্তত ৫টি ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দেওয়া ক্রিকেটারদের মধ্যে সাফল্যের শতকরা হারে বাংলাদেশের সফলতম অধিনায়ক তিনিই।

বর্ণাঢ্য এই ক্যারিয়ারে নিশ্চিতভাবেই একটি বড় আক্ষেপ হয়ে থাকবে বিশ্বকাপ। চারটি ওয়ানডে বিশ্বকাপে ২৯ ম্যাচ খেলে তার সেঞ্চুরি নেই। চারটি ফিফটিতে ৭১৮ রান করেছেন কেবল ২৪.৭৫ গড়ে। ২০১৫ বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৩১৯ রান তাড়ায় ৯৫ রানের ইনিংসটিই বিশ্বকাপে তার ক্যারিয়ার।

আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজের ঘরের মাঠে এই সংস্করণেই তার শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেললেন তামিম।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *