২২ বছরের রেকর্ড ভাঙলো বৃষ্টি

জাতীয়

গত কয়েকদিন ধরে দেশব্যাপী তুমুল বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বিশেষ করে গত এক সপ্তাহ বা অক্টোবরে এ বৃষ্টিপাতার পরিমাণ বেশি ছিল, যা গত ২২ বছরের বৃষ্টিপাতের রেকর্ড ভেঙেছে। কিশোরগঞ্জের নিকলিতে এই বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ জানান, শুক্রবার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগের ২৪ ঘণ্টায় নিকলিতে বৃষ্টিপাত হয়েছে ৪৭৬ মিলিমিটার।

এর আগে, ২০০১ সালে সন্দ্বীপে ২৪ ঘণ্টায় ৫৯০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছিল। মধ্যে ২০১২ সালের ২৬ জুন চট্টগ্রামে হয়েছিল ৪৬৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত।

 

শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে আগের ২৪ ঘণ্টায় ময়মনসিংহে সর্বোচ্চ ৩৭৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়, এতে শহরে কোমর পর্যন্ত জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এর আগে, ১৯৭১ সালের ২ অক্টোবর ৩৮১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল এ শহরে।

মৌসুমি বায়ু তথা বর্ষা বর্তমানে বিদায় নেওয়া প্রক্রিয়ায় রয়েছে। এ জন্য বাতাসে প্রচুর জলীয় বাষ্প রয়েছে। আর এর সঙ্গে মিশে যাচ্ছে পশ্চিমা লঘুচাপ। ফলে বৃষ্টিপাত বেশি হচ্ছে। প্রতি বছরই এই সময় কিছুটা বৃষ্টিপাত হয়। তবে এতো বেশি হয় না।

এক পূর্বাভাসে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে।

মৌসুমি বায়ুর অক্ষ পূর্ব উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।

শনিবার (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়; খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।

শনিবার সন্ধ্যা থেকে রোববার (৮ অক্টোবর) সন্ধ্যা পর্যন্ত ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়; ঢাকা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, রংপুর ও খুলনা বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পাবে।

রোববার সন্ধ্যা থেকে সোমবার (০৯ অক্টোবর) সন্ধ্যা পর্যন্ত সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়; ময়মনসিংহ, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে। সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পাবে। বর্ধিত পাঁচ দিনের আবহাওয়ায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমতে পারে।

শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে ময়মনসিংহ ৩৪০ মিলিমিটার, নেত্রকোনায় ৩১১ মিলিমিটার, সিলেটে ১৩৬ মিলিমিটার, টাঙ্গাইলের ৮৮ মিলিমিটার, বগুড়ায় ৮৩ মিলিমিটার ও ঢাকায় ৮০ মিলিমিটার। এছাড়া অন্যান্য স্থানেও হালকা থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে।

শনিবার দুপুর ১২ পর্যন্ত ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগে অতিভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকতে পারে। এরপর সারাদেশেই বৃষ্টিপাত কমে আসবে বলে জানান আবহাওয়াবিদরা।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *