৪ নেতায় বন্দি সিলেট যুবদল

সিলেট

সিলেট যুবদলের ১৯ বছরের অপেক্ষা শেষ হয়েছিল ২০১৯ সালের ১লা নভেম্বর। এর আগে দীর্ঘদিন হয়নি কোনো কমিটি। অপেক্ষায় থেকে থেকে অনেকেই রাজনীতি ছেড়ে দেন। আবার কেউ প্রবাসে, কেউ বা মূলদল বিএনপিতে এসে রাজনীতিতে যুক্ত হন। সেই অপেক্ষা ঘোচাতে ৪ বছর আগে তৎপর হয়েছিলেন বিএনপি’র চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির। তিনি উদ্যোগী হয়ে ৪ বছর আগে জেলা ও মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেছিলেন। তখন জেলার আহ্বায়ক করা হয়েছিল সিদ্দিকুর রহমান পাপলুকে ও মহানগর আহ্বায়ক করা হয় নজিবুর রহমান নজিবকে। এই দুই নেতার নেতৃত্বে যুবদলের আহ্বায়ক কমিটি আরও ৩ বছর পাড় করে। তবে গত বছরের সেপ্টেম্বরে অনেকটা ঢাকঢোল পিটিয়ে জেলা ও মহানগর যুবদলের সম্মেলন করা হয়। ১০ই সেপ্টেম্বর হয় জেলার ও ১১ই সেপ্টেম্বর হয় মহানগর যুবদলের সম্মেলন।

জেলার সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হন এডভোকেট মুমিনুল ইসলাম মুমিন ও সাধারণ সম্পাদক হন মকসুদ আহমদ।

আর মহানগরের সভাপতি হন শাহ নেওয়াজ বক্ত তারেক ও সাধারণ সম্পাদক হন মির্জা সম্রাট হোসেন। জমকালো আয়োজনের মধ্যদিয়ে সম্মেলন শেষ হওয়ার পরপরই ঘোষণা করা হয়েছিল দ্রুততম সময়ের মধ্যে পূর্র্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে। কিন্তু ৯ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো জেলার কিংবা মহানগর কোনোটির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়নি। এই অবস্থায় আগামী ৯ই জুলাই সিলেটে বিএনপি’র তারণ্যের সমাবেশ। সেখানে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখার কথা যুবদলের নেতাদের। কিন্তু তারণ্যের সমাবেশ নিয়ে এখনো সিলেটে তেমন তোড়জোড় নেই; বরং জেলা ও মহানগর যুবদলের ৪ নেতা নীরবে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছেন।

সিলেট যুবদলের নেতারা জানিয়েছেন, সিলেটে যুবদলকে ‘ডেড হর্সে’ পরিণত করা হয়েছে। অথচ বিএনপি’র শাসনের সময় সিলেটে সবচেয়ে শক্তিশালী সংগঠন ছিল যুবদল। পদ-পদবি নিয়ে দ্বন্দ্বের জন্য পরিস্থিতি বিবেচনা করে এতদিন যুবদলকে ঘুমন্ত করে রাখা হয়েছিল। এখন সম্মেলন হলেও আগের মতোই প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে। তাদের মতে, এখন ৪ নেতার হাতে বন্দি সিলেট যুবদল। ওই নেতারা কমিটি গঠনে কোনো প্রক্রিয়াই শুরু করেননি; বরং তারা নিজেরা নিজেদের রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত। এখনো কেন্দ্রে কোনো কমিটির তালিকা পাঠানো হয়নি। তারুণ্যের সমাবেশকে সামনে  রেখে সিলেট যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। যুবদলের নেতাকর্মীরা কমিটি গঠন না হওয়ায় অসন্তুষ্ট।

তবে যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু জানিয়েছেন- ‘সিলেট জেলা ও মহানগর যুবদলের কমিটি দ্রুততম সময়ে গঠন করতে আমরা নির্দেশনা দিয়েছি। সংশ্লিষ্ট নেতারা এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিচ্ছেন।

এবার আর কালক্ষেপণ না করে সিলেটের দুটি কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হবে।’

এদিকে জেলা যুবদলের সভাপতি এডভোকেট মুমিনুল ইসলাম মুমিন জানিয়েছেন- ‘সিলেটে তারুণ্যের সমাবেশ সামনে। এ নিয়ে আমরা প্রস্তুতি চালাচ্ছি। এ সমাবেশের পর পরই সিলেটে যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের চূড়ান্ত প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।

ইতিমধ্যে তারা কমিটি গঠন প্রক্রিয়ার কাজ অনেক দূর এগিয়ে নিয়েছেন বলে জানান। পূর্ণাঙ্গ করতে বেশি সময় লাগবে না বলে জানিয়েছেন।’ তবে দীর্ঘ ৯ মাসেও কমিটি দুটি পূর্ণাঙ্গ না হওয়ায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন সিলেটে অপেক্ষায় থাকা নেতাকর্মীরা।

মহানগর যুবদলের সভাপতি পদে প্রার্থী ছিলেন তোফাজ্জল হোসেন বেলাল। তিনি জানিয়েছেন- ‘৯ মাসেও কমিটি পূর্ণাঙ্গ না হওয়া হতাশাজনক। নেতাকর্মীরাও অপেক্ষায় থাকতে থাকতে হতাশ। এই অবস্থায় সিলেটে তারুণ্যের সমাবেশের আয়োজন করা হচ্ছে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি থাকলে কাজ আরও দিগুণ গতিতে করা সম্ভব হতো। জেলার সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন লিটন আহমদ। এতদিনেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন না হওয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ।

জানিয়েছেন- যারা দায়িত্বে রয়েছেন তাদের অন্যতম কাজ হচ্ছে দলকে গুছিয়ে শক্তিশালী করা। সামনে কঠিন সময়ে নেতাকর্মীরা তাদের দলীয় কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকতে চায়। তাদের এই চাহিদার দিকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *