৫০ লাখ ডলারে মুক্ত এমভি আব্দুল্লাহর নাবিকেরা: রয়টার্স

জাতীয়

সোমালিয়ার জলদস্যুদের কাছে জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ ও ২৩ নাবিককে ৫ মিলিয়ন বা ৫০ লাখ ডলার মুক্তিপণের বিনিময়ে মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। দুই জলদস্যুকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থাটি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

জলদস্যুদের একজন আব্দিরাশিদ ইউসুফ রয়টার্সকে বলেন, ‘দুই রাত আগে আমাদের কাছে টাকা পৌছে দেওয়া হয়। টাকাগুলো নকল কিনা এটা আমরা যাচাই করে দেখি। এরপর আমরা নিজেদের মধ্যে এগুলো ভাগাভাগি করে সরকারি বাহিনীকে এড়িয়ে চলে যাই।’

সোমালিয়ার সরকারি কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগর থেকে কয়লাবোঝাই এমভি আবদুল্লাহ ছিনতাই করে সোমালি জলদস্যুরা। এ সময় জাহাজটিতে থাকা ২৩ বাংলাদেশি নাবিককেও জিম্মি করা হয়। নাবিকদের উদ্ধারে নানা চেষ্টা করা হয়। চলে কূটনৈতিক তৎপরতাও। কিন্তু অগ্রগতি আসতে সময় লাগছিল।

জাহাজটির জিম্মি নাবিকদের ঈদও কাটে বন্দী দশায়। তবে তাঁদের ঈদের দিন ভালো খাবার দেওয়া হয় বলে খবর পাওয়া গিয়েছিল।

শনিবার দিবাগত মধ্যরাতে ২৩ নাবিকসহ সোমালিয়ার জলদস্যুদের কাছ থেকে মুক্তি পায় বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। রোববার দুপুরে মুক্তির বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরে জাহাজটির মালিক প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম গ্রুপ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শনিবার দিবাগত রাত ৩টায় চট্টগ্রামের এস আর শিপিংয়ের প্রধান নির্বাহী মেহেরুল করিমের কাছে একটি বার্তা আসে এমভি আবদুল্লাহর ক্যাপ্টেন আব্দুর রশীদের কাছ থেকে। বার্তায় বলা হয়, জিম্মি জাহাজ মুক্ত হয়েছে। নাবিকরা দুবাইয়ের পথে রওনা হয়েছে।
জিম্মি জাহাজ ও নাবিকদের মুক্ত করতে কত টাকা মুক্তিপণ দিতে হয়েছে বা মুক্তিপণ আদৌ দিতে হয়েছে কিনা তা নিয়ে মুখ খোলেনি জাহাজটির মালিক প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম গ্রুপ। সংবাদ সম্মেলনে কেএসআরএম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুল করীম জানান, যা হয়েছে সব বৈধ উপায়েই হয়েছে।

মেহেরুল করীম বলেন, ‘জলদস্যুদের সাথে যোগাযোগে আমি আন্তর্জাতিক ও স্থানীয়ভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলাম। আমার সঙ্গে ওদের একটা কমিটমেন্ট আছে। যেটা নাকি কনফিডেন্সিয়াল এগ্রিমেন্ট। নট টু ডিসকাস আব্যাউট র্যানসাম। সো, আমাকে আপনারা যতই চেষ্টা করেন আই উইল নট। এই ব্যাপারে আমি আপনাদের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি, আমার কনফিডেন্সিয়াল এগ্রিমেন্ট অনুযায়ী আমি আপনাদের সাথে কিছুই শেয়ার করতে পারব না। কারণ আমি ওইটায় সাইন করেছি। আমি আপনাকে আবার বলি, আমরা আমেরিকার নিয়ম মেনেছি, আমরা ইউকের নিয়ম মেনেছি, ফাইনালি কেনিয়ার নিয়ম মেনেছি। এভ্রিথিং লিগ্যাল ওয়েতে করা হয়েছে।’

অবশ্য মুক্তিপণের বিষয়টি সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। তিনি দাবি করেছেন, আন্তর্জাতিক চাপ ও সমঝোতার মাধ্যমেই এমভি আবদুল্লাহ জাহাজ ও নাবিকদের মুক্ত করা হয়েছে।

রোববার সকালে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘মুক্তিপণ সংক্রান্ত যে সংবাদ ও ছবি প্রচার করা হচ্ছে এসবের সত্যতা নেই। ব্যাপক আন্তর্জাতিক চাপ ও সমঝোতার মাধ্যমেই নাবিকদের মুক্ত করা সম্ভব হয়েছে। তাদের ফিরে আসতে ১৫ থেকে ২০ দিন লাগতে পারে।’

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *