৫ আগস্টের পরে কতো কমেছে ভারত থেকে আমদানি?

জাতীয়

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর থেকে বাংলদেশ-ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এতে বেশি প্রভাবিত হয়েছে আমদানি-রপ্তানি সম্পর্ক।

আগস্ট মাসের পর বাংলাদেশে ভারত থেকে রপ্তানি এক লাফে প্রায় ২৮ শতাংশ কমে গিয়েছিল। যদিও তা সেপ্টেম্বর মাসে ধীরে ধীরে কিছুটা স্বাভাবিক পর্যায়ে ফিরে এসেছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, চলতি মাসে যেভাবে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যেকার বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থল বন্দর নানা কারণে দিনের পর দিন বন্ধ থেকেছে, তাতে এই মাসেই দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ আবারও কমে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

এরই মধ্যে গত মাসের মাঝামাঝি ভারত বাংলাদেশে পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর বেশ কিছু বিধিনিষেধ তুলে নেয়। যদিও পর্যবেক্ষকদের ধারণা, সেই সিদ্ধান্তের পেছনে আসল কারণ ছিল মহারাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচন।
ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় প্রতি মাসে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করে, তা থেকেই স্পষ্ট যে গত অগাস্টে বাংলাদেশে পণ্য রপ্তানি একটা বড়সড় হোঁচট খেয়েছিল।
তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অগাস্টে যেখানে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রায় ৯৪৪ মিলিয়ন বা ৯৪ দশমিক ৪ কোটি ডলারের পণ্য (‘মার্চেন্ডাইজ’) রপ্তানি করা হয়েছিল, ২০২৪-এর অগাস্টে সেটাই কমে দাঁড়ায় মাত্র ৬৮১ মিলিয়ন বা ৬৮ দশমিক ১ কোটি ডলারে।

ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান খুঁটিয়ে দেখলে অবশ্য দেখা যাবে যে, বাংলাদেশে সব ধরনের পণ্যের রপ্তানিই যে কমেছে, তা কিন্তু নয়। বরং কোনো কোনো বিশেষ পণ্যর রপ্তানি অগাস্ট মাসেও বেড়েছে।

ভারতের পেট্রাপোল ও বাংলাদেশের বেনাপোলের মাঝে সীমান্তে যে স্থলবন্দর রয়েছে, দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ পণ্যের আদানপ্রদান হয় সেই পথ দিয়েই। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ৩০ শতাংশেরও বেশি এই একটি বন্দরই সামলায়।

পেট্রাপোল প্রান্তে অবস্থিত ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্ট বা আইসিপি-টি দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম স্থলবন্দরও বটে।

ভারতের সবচেয়ে পুরনো রেটিং এজেন্সি, মুম্বাই-ভিত্তিক ‘ক্রিসিল’ গত মাসে তাদের একটি রিপোর্টে দেখিয়েছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ভারতের কোম্পানিগুলোর ‘ক্রেডিট কোয়ালিটি’তে কী ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।

তারা ওই রিপোর্টে বলেছে, বাংলাদেশে যা ঘটেছে ভারতের ‘সার্বিক বাণিজ্যে’ তার অভিঘাত সামান্যই হবে – এবং ভারতের কোম্পানিগুলির ক্রেডিট কোয়ালিটিতে (ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা) স্বল্পকালীন প্রভাবও (নিয়ার-টার্ম ইমপ্যাক্ট) হয়তো তেমন একটা পড়বে না।

তবে ভারতের যে সব বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলো বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বেচে, তাদের বকেয়া অর্থ পেতে সমস্যা হতে পারে বলেও ক্রিসিল সাবধান করে দিয়েছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *