ফারুক আহমদ,
স্টাফ রিপোর্টার:
শোকের মাস আগস্ট। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করেছিল ঘাতকরা। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা করা হয়। একই বছরের ৭ আগস্ট সিলেটে হোটেল গুলশানে আওয়ামী লীগের কর্মিসভা শেষে ভয়াল গ্রেনেড হামলা করা হয়েছিল। তৎকালীন সরকার এই হামলায় আমাকে আটক করে অমানুষিক নির্যাতন করেছিল।
সিলেটে ৭ আগস্ট ও ঢাকায় ২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা ছিল একই সূত্রে গাঁথা। আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করা ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হয়রানি করাই ছিল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের নীলনকশা।
তাই তো ৭ আগস্ট হোটেল গুলশানে গ্রেনেড হামলার পর আমাকে গ্রেফতার করে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে ঢাকায় জয়েন্ট ইন্টারগেশন সেলে (জেআইসি) নিয়ে গিয়েও করা হয় ব্যাপক নির্যাতন।
জেআইসিতে থাকাকালে আমাকে ক্রসফায়ারে মেরে ফেলার আয়োজনও করা হয়েছিল। এমনকি আমাকে রাতে অজ্ঞাত এক নির্জন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় ব্রিটিশ হাইকমিশন থেকে তৎকালীন সরকারের উচ্চপর্যায়ে যোগাযোগ করা হয়েছিল। এর ফলে আমাকে ফিরিয়ে আনা হয়।
সে সময়কার এক বিএনপি নেতা আমাকে গ্রেনেড হামলায় আসামি করার চেষ্টা করেন। তার নির্দেশেই আমার ওপর নির্যাতন করা হয়েছিল। তখন আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। আমাকে মুক্তি দিতে জোর দাবি জানিয়েছিলেন। সিলেটে আমার প্রাণপ্রিয় সংগঠন আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দও আমার মুক্তির জন্য সরব হয়েছিলেন। যুক্তরাজ্যের তখনকার এমপি উনা কিং আমাকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন।
প্রায় দুই মাস কারাবন্দি থাকার পর আমি আল্লাহর রহমতে ও সকলের দুআয়-প্রচেষ্টায় মুক্তি লাভ করেছিলাম।
আমাকে আটক করার পর পুলিশ আমার ওপর যে নির্যাতন করেছিল, তা কখনো ভুলবার নয়। সে দিনগুলোর কথা মনে হলে এখনো শিউরে উঠি। নির্যাতনের কারণে এখনো শরীরের বিভিন্ন অংশে খুব ব্যথা অনুভূত হয়।
২০০১-২০০৬ মেয়াদে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার শুধু লুটপাট করেনি, আওয়ামী লীগ তথা মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করতে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছিল। এখন বিএনপির মুখে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও সুশাসনের কথা শুনলে মনে হয়, ভূতের মুখে রাম নাম।
সাক্ষাতকারে ভয়াল সেই ৭ আগস্টের বিবরণ দিতে গিয়ে কথা গুলি বলেন সিলেটের শ্রেষ্ট উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম নুনু মিয়া।