সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগসহ ৮ দফা দাবিতে প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনে তালা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকদের পক্ষ থেকে কয়েকবার তাদের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করা হলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি।
আজ রবিবার (২৭ অক্টোবর) সকাল থেকে বিভিন্ন প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনে তালা দিয়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
এসময় শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকার পরেও একটি ছাত্র সংগঠনের ব্যানার ক্যাম্পাসে লাগানো হয়েছে। এ বিষয়ে প্রশাসনকে অবহিত করা হলেও কোন পদক্ষেপ নেন নি তারা। যার প্রেক্ষিতে ব্যানার ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করা হয়। ২৪ অক্টোবর সংঘর্ষের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে প্রশাসন। এছাড়া প্রশাসন বিভিন্ন গণমাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আওয়ামী লীগের পৃষ্ঠপোষক ও রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে আখ্যা দিয়েছে, যা অপমানজনক। প্রক্টর ও রেজিস্ট্রার অবিলম্বে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরা সব একাডেমি কার্যক্রম বর্জন করেছি।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো-
১. বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, রেজিস্ট্রার ও জনসংযোগ ও প্রকাশনা কর্মকর্তা খসরু মোহাম্মদ সালাউদ্দিন সহ সকলকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করতে হবে।
২. ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত ও আরও জোরালো করতে হবে।
৩. ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ার পরেও ভিসি মহোদয়কে রাজনৈতিক ব্যানারে সম্ভাষনকারীদের শাস্তি নিশ্চিত সহ, সকল প্রকার রাজনৈতিক কর্মকান্ড সম্পূর্নরুপে ও স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে হবে।
৪. ২৪ শে অক্টোবর ২০২৪ রাতের সংঘর্ষ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগত ছাত্রদলের সম্পূর্ন বিষয় যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করে দ্রুত দোষীদের গ্রেফতার নিশ্চিত করতে হবে।
৫. সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত ভুয়া বিবৃতি প্রত্যাহার করে সত্য ও সঠিক বিবৃতি প্রদান করতে হবে।
৬. শিক্ষার্থীদের অ্যানোনিমাস মার্কিং ও পরীক্ষার ফল প্রকাশের ১ মাসের মধ্যে ফেলকৃত বিষয়ের ইমপ্রুভ পরীক্ষা গ্রহন করতে হবে। শুধু রিক্যারির (একটি বিষয়ে দুবার ফেল) মাধ্যমে ইয়ার ড্রপ ব্যবস্থা বাতিল করতে হবে।
৭. অন্যান্য কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিটি পরীক্ষায় ৪০ নম্বরে পাগমার্ক নিশ্চিত করতে হবে।
৮. বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র সার্বক্ষনিক (২৪/৭) খোলা রাখতে হবে।
এ
বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ প্রফেসর ও চেয়ারম্যান সুলতানা আহমেদ, আমরা শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলছি। সমস্যা সমাধানে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দল ভাইস চ্যান্সেলর সাথে কথা বলবেন। আশা করি দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে। শিক্ষার্থীদের রাষ্ট্রদ্রোহী আখ্যা দিয়ে দেওয়া বিবৃতি ভুল করে দেওয়া হয়েছে এবং এ নিয়ে তদন্ত চলছে বলে জানান তিনি।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার নতুন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানিয়ে ছাত্রদলের টানানো দুইটি ব্যানার ছিড়ে ফেলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের সময় কিছু বহিরাগত এতে যোগ দেয় বলে অভিযোগ আছে। এতে প্রক্টোরসহ মোট ১০ জন আহত হন। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এছাড়া কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।
শেয়ার করুন