চলতি বছর সরকারি ও বেসরকারিভাবে হজে যেতে নিবন্ধন শুরু হবে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি (বুধবার)। নিবন্ধন শেষ হবে ২৩ ফেব্রুয়ারি। এবার বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন।
রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) হজযাত্রী নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়। সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক-নিবন্ধনের ক্রমিক ৪২ হাজার ২৯৩ পর্যন্ত এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রাক নিবন্ধনের সর্বশেষ ক্রমিক ৭ লাখ ৮ হাজার ৩৬৪ পর্যন্ত নিবন্ধন করতে পারবেন।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ২৭ জুন (৯ জিলহজ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। সৌদি আরবের সঙ্গে হজচুক্তি অনুযায়ী, এবার বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার জন ও অবশিষ্ট এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করার সুযোগ পাবেন।
চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় একটি প্যাকেজের মাধ্যমে হজ পালনের নিয়ম রাখা হয়েছে। এবার সরকারিভাবে হজ পালনে খরচ হবে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা। অন্যদিকে বেসরকারিভাবে এজেন্সির মাধ্যমে হজ পালনে সর্বনিম্ন খরচ ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা।
সরকারি ও বেসরকারি হজযাত্রীকে আনুমানিক এক হাজার সৌদি রিয়াল কোরবানি বাবদ সঙ্গে নিতে হবে বলেও ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ রোববারের হিসাব অনুযায়ী, হজে যেতে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার ৪৩৬ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ২ লাখ ৫৪ হাজার ১৪০ জন অপেক্ষমাণ প্রাক-নিবন্ধিত রয়েছেন।
নিবন্ধনের জন্য হজযাত্রীর পাসপোর্টের মেয়াদ আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত থাকতে হবে। নিবন্ধনের পর হজে যেতে না পারলে ইতোমধ্যে ব্যয় হওয়া অর্থ ছাড়া বাকি অর্থ ফেরত পাবেন। হজের খরচ বাড়লে তা প্যাকেজ মূল্য হিসেবে গণ্য হবে এবং হজযাত্রীকে পরিশোধ করতে হবে। কোন অর্থ উদ্বৃত্ত থাকলে তা হজযাত্রীকে ফেরত দেওয়া হবে।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের ভিসার জন্য নিবন্ধনের ৩ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট ও কোভিড ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট নিজ দায়িত্বে ঢাকার আশকোনার হজ অফিসে জমা দিতে হবে।
হজ ফ্লাইট ঢাকা-জেদ্দা, ঢাকা-মদিনা, জেদ্দা-ঢাকা ও মদিনা-ঢাকা রুটের জন্য নির্ধারিত ফ্লাইটে হজে গমন ও প্রত্যাগমন করতে হবে। তবে চট্টগ্রাম ও সিলেট হতেও গমনাগমন করা যাবে।
শূন্য কোটা পূরণের জন্য প্রাক-নিবন্ধিতদের মধ্য হতে প্রাক-নিবন্ধনের ক্রমানুসারে নিবন্ধনের আহ্বান করা হবে।
প্রাক-নিবন্ধনের সময় নেওয়া ৩০ হাজার টাকার মধ্যে এক হাজার টাকা প্রসেস ফি কর্তনের পর অবশিষ্ট ২৯ হাজার টাকা সমন্বয় করে হজযাত্রীকে অবশিষ্ট ৬ লাখ ৫৪ হাজার ১৫ টাকা সোনালী ব্যাংক লিমিটেডর মতিঝিলে স্থানীয় কার্যালয় শাখায় হিসাব নং- 00026330000 (Sale Proceeds of Hajj Deposit) এ নিবন্ধন ভাউচারের মাধ্যমে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে জমা দিয়ে হজযাত্রী নিবন্ধন সনদ গ্রহণ করবেন।
এজেন্সিগুলো সরকারি ব্যবস্থাপনার হজ প্যাকেজের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে হজ প্যাকেজ ঘোষণা করবে এবং হজযাত্রীদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবে। এজেন্সির ঘোষিত হজ প্যাকেজ www.hajj.gov.bd, www.haabbd.com এবং এজেন্সির নিজস্ব ওয়েবসাইটে আপলোড করতে হবে এবং এর কপি হজ-১ শাখায় পাঠাতে হবে।
হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা বিধিমালা ২০২২ এর বিধি ১১ (২) অনুযায়ী এজেন্সিকে হজযাত্রীর সাথে চুক্তি সম্পাদন এবং ব্যাংকের মাধ্যমে সব লেনদেন করতে হবে।
প্রাক-নিবন্ধনের সময় নেওয়া ৩০ হাজার ৭৫২ টাকা থেকে মোট ৪ হাজার ৭৫০ টাকা কর্তনের পর অবশিষ্ট ২৬ হাজার ২ টাকা সমন্বয়যোগ্য। জেদ্দা-মক্কা-মদিনা ও মাশায়ের আল-হারামের পরিবহন ফি ৩৫ হাজার ১৬২ টাকা এবং বিমান ভাড়া এক লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকাসহ মোট ২ লাখ ৩২ হাজার ৯৫৯ টাকা। এর মধ্যে সমন্বয়যোগ্য ২৬ হাজার ২ টাকা বাদে অবশিষ্ট ২ লাখ ৬ হাজার ৯৫৮ টাকা নিবন্ধনকারী হজ এজেন্সির নির্ধারিত ব্যাংক একাউন্টে আগামী ২৮ মার্চের মধ্যে জমা দিতে হবে।
হজের ৫ দিন মিনা-আরাফাহ ও মুজদালিফায় মোয়াল্লেমের দেওয়া সেবার ভিত্তিতে চার ক্যাটাগরির তাবু থাকবে (ক্যাটাগরি এ, বি, সি ও ডি)। এজেন্সি যে ক্যাটাগরির তাবু গ্রহণ করবে অর্থাৎ ডি-ক্যাটাগরির জন্য ১ লাখ ৩৬ হাজার ১৩০ টাকা, সি-ক্যাটাগরির জন্য ১ লাখ ৬০ হাজার ৬৩০ টাকা, বি-ক্যাটাগরির জন্য ২ রাখ ২৪ হাজার ৬২১ টাকা এবং এ-ক্যাটাগরির জন্য ২ লাখ ৯০ হাজার ৯৩০ টাকা সার্ভিস চার্জ হজযাত্রীর কাছ থেকে আদায় করতে পারবে।
হজযাত্রীর কাছ থেকে প্যাকেজে ঘোষিত অর্থ প্রাপ্তির পরে সংশ্লিষ্ট এজেন্সি হজযাত্রীকে পিলগ্রিম আইডি (পিআইডি) প্রদান করবেন। হজ এজেন্সির কমপক্ষে ৯৭ জন নিবন্ধিত হজযাত্রী না থাকলে ‘হজ ও ওমরাহ ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০২২’ অনুসারে লিড এজেন্সি নির্ধারণ করতে হবে। এরপর সমঝোতাকারী এজেন্সিকে নিবন্ধিত হজযাত্রীদের অনলাইনে লিড এজেন্সির অনুকূলে স্থানান্তরসহ যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করতে হবে। স্থানান্তরিত হজযাত্রীদের সব দায়-দায়িত্ব লিড এজেন্সি (নিবন্ধনকারী) গ্রহণ করবে। মোনাজ্জেম লিড এজেন্সি হতে নিয়োগ হবে।
হজযাত্রী হজে যাওয়ার সময় কোন পচনশীল খাদ্যদ্রব্য, তামাক পান-সুপারি/জদ্দা অর্থাৎ নেশা জাতীয় দ্রব্য বহন করতে পারবেন না। নিয়মিত সেবন করতে হয় এমন ওষধ ও চিকিৎসা সামগ্রী (ব্লাড সুগার টেস্টের স্ট্রিপ, নিডিল, ইনসুলিন, ডায়াবেটিস ও উচ্চ এরূপ ওষুধ ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের ওষুধ) অবশ্যই (কমপক্ষে ৪৫ দিনের জন্য) সঙ্গে নিতে হবে। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রসহ চিকিৎসা সামগ্রী বহন করতে হবে।
শেয়ার করুন