ছাতকে বিলের পাহারাদার সাজিয়ে ইউপি সদস্যকে গুম মামলার আসামী করায় ইউনিয়নবাসীর প্রতিবাদ

সুনামগঞ্জ

ছাতক প্রতিনিধিঃ

ছাতকের পল্লীতে বিলে মাছ ধরতে গিয়ে শ্রমিক নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় দায়েরী মামলায় এক ইউপি সদস্য তার পুত্রকে বিলের পাহারাদার সাজিয়ে আসামী করায় পরিষদের সহকর্মী সহ এলাকার লোকজন প্রতিবাদী হয়ে উঠেছেন। তাদের দাবী গুম মামলায় ষড়যন্ত্রমুলকভাবে ইউপি সদস্য ও তার পুত্রকে আসামী করা হয়েছে। বিষয়টি নিরপেক্ষ ও সুষ্ট তদন্তের মাধ্যমে উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য, ঠেংগারগাঁও গ্রামের বাসিন্দা নিরপরাধ আবুল খায়ের ও তার পুত্র জাহার মিয়ার নাম মামলা থেকে প্রত্যাহারের দাবী জনান। শনিবার দুপুরে নোয়ারাই ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে এসব দাবী জানান তারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইউপি সদস্য আবুল খয়ের জানান, নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই পরিষদের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে ওয়ার্ডের উন্নয়নে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এলাকার কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠির সাথে তার কোনো বিরোধ বা শত্রুতা নেই। কিন্তু তার বাড়ি থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে ইসলামপুর ইউনিয়নের অজ্ঞাত এক নিখোঁজ ব্যক্তির ঘটনায় দায়েরী একটি মামলায় ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সে এবং তার পুত্রকে আসামী করা হয়েছে। এ মামলার ঘটনা, স্থান, বাদী, অন্যান্য আসামী, স্বাক্ষী এবং নিখোঁজ ব্যক্তির সাথে তার এবং তার পরিবারের কোন রকম পরিচয়, যোগাযোগ বা সম্পর্ক নেই। আসামী হওয়ার খবর পেয়ে তিনি মামলার নকল সংগ্রহ করে জানতে পারেন, ইসলামপুর ইউনিয়নের সৈদাবাদ গ্রামের মৃত আব্দুল মনাফের পুত্র নিখোঁজ আবুল হোসেন পেশায় একজন পাথর শ্রমিক। নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় তার স্ত্রী সবতুন বেগম বাদী হয়ে সৈদাবাদ গ্রামের ইন্তাজ আলীর পুত্র শুকুর আলী, মন্তাজনগর গ্রামের আব্দুল আজিজের পুত্র মনির উদ্দিন ও সফিক উদ্দিন, নোয়াগাঁও গ্রামের ফরিদ মিয়ার পুত্র হাজী বুলবুল সহ সে ও তার পুত্রকে আসামী করা হয়েছে। মামলার বিবরনে বলা হয়েছে আবুল হোসেনের বাড়ির পাশেই রয়েছে গোয়াবিল। এ সুবাধে প্রায়ই আবুল হোসেন গোয়া বিলের পাশে উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছ ধরতে যায়। এতে দেশীয় অস্ত্রধারী বিলের পাহারাদারা মাছ ধরতে বাধা-নিষেধ ও ভয়-ভিতি প্রদর্শন করেও আবুল হোসেনকে মাছ ধরা থেকে বিরত রাখতে পারেনি। এতে গোয়া বিলের পাহারাদাররা আবুল হোসেনের উপর আক্রোশান্বিত হয়ে ২১ অক্টোবর ভোর ৪টায় আসামীরা আবুল হোসেনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এর পর সে আর বাড়ি ফিরে আসেনি। ২ নভেম্বর সুনামগঞ্জ আমল গ্রহনকারী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে দায়েরী মামলার বিবরণে বলা হয়েছে আসামীরা সকলেই গোয়া বিলের পাহারাদার। তাদের বাধা-নিষেধ উপেক্ষা করে গোয়া বিলের পাশে উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছ ধরার কারনে ক্ষোব্ধ ও আক্রান্বিত হয়ে মামলার ৬ নং আসামী হাজী বুলবুল’র নির্দেশে পাহারাদাররা আবুল হোসেনকে অপহরণ করে ধারালো অস্ত্র দ্বারা হত্যা এবং লাশ গুম করে রেখেছে। আবুল খয়ের ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, তিনি নোয়ারাই ইউনিয়নের একজন নির্বাচিত সদস্য। কোথাকার কোন বিলে পাহারাদারের দায়িত্ব পালনের জন্য ওয়ার্ডবাসী তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেনি। করো প্ররোচনায় অথবা অবৈধ অর্থ প্রাপ্ত হয়ে বাদীনী এ মামলায় সে এবং তার পুত্রকে আসামী করেছে বলে তিনি মনে করেন। বিষয়টি সুষ্ট তদন্তের মাধ্যমে এ মামলা থেকে সে এবং তার পুত্র জাহার মিয়ার নাম প্রত্যাহরের জন্য পুলিশ প্রশাসনের প্রতি সবিনয় অনুরোধ জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, ইউপি সদস্য মঈনূল হোসেন রাসেল, ফারুক মিয়া, সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ, সদস্যা জোছনা বেগম, রুশনা বেগম, সফিজা বেগম, স্থানীয় সালেহ আহমদ, আব্দুল আওয়াল আব্দুল মানিক, লায়েক মিয়া, নূরুল আমি, ইউসূফ আলী, শুকুর আলী, সাইদুর রহমান প্রমূখ।##

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *