নির্ধারিত সময় শেষের পাঁচ মিনিট আগে অধিনায়ক হ্যারি কেইনের সামনে সুযোগ ছিল ম্যাচে সমতা আনার, সমতা আনলে ম্যাচ গড়াতে পারত অতিরিক্ত সময়ে। কিন্তু সেটা হলো না। পেনাল্টি মিস করলেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক। ফলে হতাশার হারে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিলো ইংল্যান্ড। ফ্রান্স আরও একবার পৌঁছাল সেমিফাইনালে।
শনিবার রাতে আল বাইত স্টেডিয়ামে সেমিফাইনালে ওঠার ওঠার লড়াইয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ফ্রান্স জিতেছে ২-১ গোলে।
ফ্রান্সের পক্ষে গোল করেছেন অরিলেয়ে শুয়ামেনি ও অলিভার জিরুদ। ইংল্যান্ডের পক্ষে একটি গোল করেন হ্যারি কেইন। ম্যাচে দুইটি পেনাল্টি পেয়েছিল ইংল্যান্ড, এর প্রথমটি থেকে হ্যারি কেইন গোল করতে পারলেও দ্বিতীয়টি মিস করেন।
ম্যাচের শুরু থেকই আক্রমণাত্মক খেলে ফ্রান্স। এমবাপে–গ্রিজমান–জিরুদেরা ইংল্যান্ডের রক্ষণে চাপ তৈরি করে। ফ্রান্সের ছন্দময় আক্রমণে কিছুটা ছন্নছাড়া হয়ে পড়ে ইংলিশরা। ১১ মিনিটে অলিভার জিরুদের হেড জমা পড়ে জর্দান পিকফোর্ডের গ্লাভসে। হাই প্রেসিংয়ের চেষ্টা করেও সুবিধা করতে পারছিল না ইংল্যান্ড।
চাপের মুখে ১৬ মিনিটে ঠিকই ভেঙে পড়ে ইংলিশ রক্ষণ। দারুণ এক সংঘবদ্ধ আক্রমণে আঁতোয়ান গ্রিজমানের কাছ থেকে বল পেয়ে ডি–বক্সের বাইরে থেকে শট নিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন শুয়ামেনি।
গোল খেয়ে যেন জেগে ওঠে ইংলিশরা। ফ্রি কিক থেকে ২০ মিনিটে লুক শর শট ঠেকান হুগো লরিস। ২৩ মিনিটে ফের কেইনকে গোল বঞ্চিত করেন ফরাসি গোলরক্ষক। ২৫ মিনিটে হ্যারি কেইন ডি–বক্সে পড়ে গেলে পেনাল্টি আবেদন করেন ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়েরা। ভিএআরের সাহায্য নিয়ে পেনাল্টির আবেদন বাতিল করেন রেফারি। ২৯ মিনিটে কেইনের বুলেট শট কোনোরকমে ঠেকান হুগো লরিস।
বিরতির পরপর ৪৭ মিনিটে জুট বেলিংহামের দারুণ এক ভলি আরও দারুণভাবে ঠেকিয়ে দেন লরিস। পরের মুহূর্তে জটলা থেকে সুযোগ তৈরি হলেও এবারও লরিস বাধা পেরোতে পারেনি ইংল্যান্ড। তবে ফরাসি ডিফেন্সে চাপ প্রয়োগ করে ঠিকই পেনাল্টি আদায় করে নেয় ইংলিশরা।
ডান প্রান্ত দিয়ে বারবার হুমকি তৈরি করা বুকায়ো সাকা ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টি পায় থ্রি লায়নসরা। হ্যারি কেইনের বুলেটগতির শটটা থামানোর সাধ্য ছিল না লরিসের!
এই গোলে ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ গোলে ওয়েইন রুনিকে ছুঁলেন কেন। দুজনের গোল এখন ৫৩। ৫৫তম মিনিটে ফ্রান্সের আক্রমণ রুখে দেন লরিস।
৭০তম মিনিটে হ্যারি ম্যাগুয়েরের হেড পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়। একটু পর দারুণ এক আক্রমণে বল পোস্টের রাখতে ব্যর্থ হন সাকা। ৭৭তম মিনিটে ফ্রান্সের দারুণ একটি আক্রমণ ঠেকিয়ে দেন পিকফোর্ড। তবে ৭৮তম মিনিটে আর শেষ রক্ষা হয়নি। এবারও দৃশ্যপটে সেই গ্রিজমান। তার দারুণ এক ক্রসে হেডে লক্ষ্যভেদ করেন জিরুদ।
একটু পর আবার নাটক। ফের পেনাল্টি পেল ইংল্যান্ড। বদলি নামা ম্যাসন মাউন্টকে ফেলে দিয়ে ইংল্যান্ড পায় পেনাল্টি। স্পট কিকে এবার উড়িয়ে মেরে সমতায় ফেরার সুযোগ নষ্ট করেন কেইন। সে সঙ্গে নিশ্চিত করেন ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ও।
ফ্রান্স সেমিফাইনালে মরক্কোর মুখোমুখি হবে; অপর সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার প্রতিপক্ষ আর্জেন্টিনা।
শেয়ার করুন