ফেঞ্চুগঞ্জে কুশিয়ারা সেতুতে চলছে অবৈধভাবে টোল আদায়

সিলেট

সিলেট মৌলভীবাজার আঞ্চলিক মহাসড়কের মধ্যে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ভেতরে অবস্থিত কুশিয়ারা নদীর উপর নির্মিত কুশিয়ারা সেতুর টোল ফি আদায় করা হচ্ছে ২০০১ সাল থেকে৷ এ পর্যন্ত ২০১৬ সাল পর্যন্ত তা বৈধভাবে ইজারার মাধ্যমে টোল ফি আদায় করা হয়েছিল। কিন্তু বিগত ২০১৬ সাল থেকে এই টোলবক্সসহ আরেকটি অস্থায়ী টোলবক্স যা ফেঞ্চুগঞ্জ থেকে বালাগঞ্জ ও উপজেলার উত্তর ফেঞ্চুগঞ্জ ইউনিয়নের রাস্তার মুখে অবস্থিত। সেটিতেও নিয়মিত আদায় করা হচ্ছে অবৈধ টোল ফি। কিন্তু এসব অর্থ সঠিকভাবে কোন কোষাগারে জমা হচ্ছে তা সঠিকভাবে জানাতে পারেননি দায়িত্বে থাকা টোল ফি আদায়কারীরা। গাড়ি চালকদের কাছ থেকে জানা যায়, তারা টোল ফি দেন কিন্তু তার কোন রসিদ বা প্রমানপত্র তাদেরকে দেওয়া হয় না৷

এমনকি প্রধান টোলবক্সে সরজমিন ঘুরে দেখা গেল সেখানে থাকা একটি সিসিটিভি ক্যামেরা প্রায় এক বছরের অধিক সময় থেকে অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে। যা ঠিক করার কোন প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন না কতৃপক্ষ। এমনকি জানা যায় এখানে কোন একটি প্রভাবশালী মহল কিছুদিন পর পর এসে হামলা করে হাতিয়ে নেয় বিপুল পরিমাণ অর্থ।

অন্যদিকে অস্থায়ীভাবে গড়ে উঠা টোলবক্সটিতে নেই কোন রসিদ বা কাগজ কলম। সেখানে গাড়ি থামিয়ে কিছু লোক আদায় করেন টোল ফি। আবার লক্ষ করা যায় মাঝে মাঝে কোন কোন গাড়ি টোল ফি না দিয়েই ইচ্ছেমত চলে যায়। এই অনিয়মের নেপথ্যে কে বা কারা তা বুঝা না গেলেও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা প্রশাসক মোঃ জসীম উদ্দিন যে আশ্বাস দিয়েছিলেন সেখানে তিনি অভিযান চালিয়ে অনিয়মের বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন তা তিনি আজও দেখেননি। এমনকি এব্যপারে প্রমানসহ সড়ক ও জনপদ বিভাগে যোগাযোগ করলেও তা গ্রহণযোগ্যতা পায় নি৷ সর্বশেষ দুদকের কাছে অভিযোগ তারা আমলে নিয়েছেন বলে জানালেও তার বাস্তব রুপ এখনো পাওয়া যায় নি। এই অর্থ কোথায় যায় আর কতদিন এভাবে চলবে অর্থ আদায় তা নিয়ে রয়েছে জনমনে উদ্বেগ।

এছাড়াও এখানকার অর্থ আসলে কোন ব্যংকে দৈনিক কতটাকা জমা হয় এবং এই অর্থ কে বা কারা নেয় তারও কোন সন্ধান মেলেনি। এই দুর্নীতি আর অনিয়মের কারণে প্রতি বছর সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে প্রায় দশ কোটি টাকার সমপরিমাণ। এখন চালক ও জনগণের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে এই টোলবক্স কোন দুর্নীতির জন্য নাকি কারও ব্যক্তিগত ক্ষমতার অপব্যবহার। তা নিয়ে আবারও বুঝা গেলো তেমন একটা চিন্তিত নন প্রশাসন ও সড়ক বিভাগ।
সর্বশেষ জানা যায় ২০১৬ সালে এব্যপারে ইজারাদার না থাকায় একটি সুরাহা হওয়ার কথা ছিল কিন্তু স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী মহল তা ঠেকিয়ে রাখে যে কারণে এখনো সেখানে অবৈধ টুল আদায় করা হচ্ছে।

জানা যায়, ২০১২ সালে তিন বছরের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে মার্গানেট ওয়ান লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান ৯ কোটি ৯২ লাখ ৪৩০ টাকায় সেতুর টোল আদায়ের অনুমতি পায়। ২০১৫ সাল পর্যন্ত টোল আদায়ের পর আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক আরও ১ বছর প্রতিষ্ঠানটি টোল আদায় করে। ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর ঐ প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ শেষ হয়। পরে ফেঞ্চুগঞ্জ সেতুর টোল আদায়ের দায়িত্ব সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর থেকে টোল আদায় হচ্ছে নিয়মিত। এ নিয়ে অসন্তোষ চালক মালিকদের ভিতরে। এ বিষয়ে জানতে টোল প্লাজায় গেলে ম্যানেজার জানান, টোল কার ইজারায় তা তার জানা নেই। তারা টাকা তুলে দেন এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের লোকজন এসে টাকা নিয়ে যায়।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *