প্রথমবারের মতো বিপিএলের ফাইনালে উঠলেও শিরোপা অধরাই থাকল সিলেটের। সিলেট স্ট্রাইকার্সকে – উইকেটে হারিয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ৯ম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের অধীনে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা এ নিয়ে চতুর্থবার শিরোপা জিতল, যা অধিনায়ক হিসেবে ইমরুল কায়েসের ৩য় শিরোপা।
‘হোম অব ক্রিকেট’ খ্যাত মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ইমরুল কায়েস। প্রথম ওভারেই সিলেটের নামের পাশে জড়ো হয় ১৮ রান! সিলেটের ওপেনার তৌহিদ হৃদয়ের জন্য দিনটা সোনায় মোড়ানো। প্রথমবারের মতো ডাক পেয়েছেন জাতীয় দলে, ইংল্যান্ড সিরিজের ওয়ানডে স্কোয়াডে। তবে ব্যাট হাতে দিনটা রাঙাতে পারেননি মোটেও।
সিলেটের ছন্দপতন ঘটাতে তানভীর ইসলাম ২য় ওভারের প্রথম বলে হৃদয়কে ‘ডাক’ এর স্বাদ দিয়ে ম্যাচে ফেরান দলকে। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা টানা দ্বিতীয় ম্যাচে নামেন ওয়ান ডাউনে। তবে এবার আর ক্যামিও খেলা হয়নি। ২৬ রানে ২ উইকেট হারিয়ে সিলেট চাপে পড়ে গেলে মুশফিকুর রহিমের সাথে দলের হাল ধরেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
টুর্নামেন্টে ৫০০ রানের মাইলফলক অর্জন করে ‘অশান্ত’ শান্ত ক্ষান্ত হন ৬৪ রানে। ততক্ষণে খেলেছেন ৪৫ বল, ৯টি চারের সাথে হাঁকিয়েছেন ১টি ছক্কাও। এরপর মুশফিক একপ্রান্ত আগলে রাখলেও অপর প্রান্তে রায়ান বার্ল, থিসারা পেরেরা, জর্জ লিন্ডে, জাকির হাসান- কেউই থিতু হতে পারেননি।
তবে মুশফিক জ্বলে উঠেছেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে। শান্ত অর্ধশতক করেছিলেন ৩৮ বলে, মুশফিক ছিলেন আরও মারকুটে ভঙ্গিতে, তিনি ফিফটি করেন ৩৫ বলে। ইনিংসের শেষপর্যন্ত ধরে রাখেন নাটাই। আন্দ্রে রাসেলের নো বলের সুবাদে অপরাজিত থেকেই মাঠ ছাড়েন। ৪৮ বলে ৫টি চার আর ৩টি ছক্কা হাঁকিয়ে ৭৪ রান করে মিস্টার ডিপেন্ডেবল। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে সিলেটের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৭৫ রান।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে কুমিল্লার শুরুটা ভালো হয়নি। লিটন দাস শুরু থেকেই আগ্রাসী হয়ে খেলতে থাকলেও সুনীল নারাইন ৫ বলে ১০ ও অধিনায়ক ইমরুল কায়েস ৩ বলে ২ রান করে ফেরেন সাজঘরে। তবে ত্রাতা হয়ে লিটন কুমার দাস যে তখনও রয়ে গেছেন ক্রিজে! আর তাই কুমিল্লাকেও দুর্ভাবনায় পড়তে হয়নি।
জনসন চার্লসকে সঙ্গে নিয়ে লিটন কুমিল্লার স্বপ্নের সারথি হলেন। তানজিম হাসান সাকিবদের ওপর চড়াও হয়ে তিনি যখন সাজঘরে ফিরলেন, কুমিল্লা তখন জয়ের দৌড়ে বেশ এগিয়ে। বিদায়ের আগে ৩৯ বলে ৮৮ রান করা লিটন নিজের জন্মদিনে হাঁকান ৭টি চার আর ১টি ছক্কা। আর এই ইনিংসেই শেষপর্যন্ত জয়ের পুঁজি পায় কুমিল্লা।
লিটনের বিদায়ের পর বাকি কাজটুকু সারেন চার্লস, যাকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন মঈন আলী। চার্লসের ৫২ বলে ৭৯ ও মঈনের ১৭ বলে ২৫ রানের অপরাজিত দুই ইনিংসে ৪ বল ও ৭ উইকেট হাতে রেখেই কুমিল্লা পৌঁছে যায় জয়ের বন্দরে।
শেয়ার করুন