স্টাফ রিপোর্টার : আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি, বাংলাদেশের ইতিহাসের এক কলঙ্কময় দিন। ১৪ বছর আগে, ২০০৯ সালের এই দিনে ততকালীন বিডিআর জওয়ানরা সশস্ত্র বিদ্রোহে ৫৭ জন সেনাকর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যা করে। স্তব্ধ হয়ে যায় পুরো জাতি।
সেদিন বুধবার সকাল ৯ টা ২৭ মিনিট। পিলখানার ভেতর থেকে ভেসে আসে গুলির শব্দ। অনেকেই ভেবেছিলেন নিয়মিত মহড়া। কিন্ত ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যেই জানা যায় বিদ্রোহের ঘটনা।
সেদিন বিডিআর সদর দপ্তরে ছিল বার্ষিক দরবার। একদল বিদ্রোহী বিডিআর সৈনিক দরবার হলে ঢুকে, কর্মকর্তাদের ওপর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে ছড়িয়ে পড়ে পুরো পিলখানায়। শুরু হয় তাণ্ডব। চলে সেনা কর্মকর্তাসহ তাদের পরিবারকে নির্যাতন, জিম্মি, লুটপাট আর অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা। হত্যা করা হয়য় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে।
খবর পেয়ে সাভার ও ঢাকা সেনানিবাস থেকে সাঁজোয়া যান এবং ভারী অস্ত্র নিয়ে পিলখানার দিকে রওয়ানা হন সেনাসদস্যরা। বেলা ১১টার মধ্যেই তারা ধানমন্ডি ও নীলক্ষেত মোড়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নেন। দেড়টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সাদাপতাকা নিয়ে পিলখানার ৪ নম্বর ফটকের সামনে যান যুবলীগের তৎকালীন চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির নানক ও হুইপ মির্জা আজম।
বিকেলে বিদ্রোহী সদস্যরা ডিএডি তৌহিদের নেতৃত্বে তাদের দাবির কথা জানাতে যান প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে। চলে বৈঠক। রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অস্ত্র সমর্পন করে কিছু বিডিআর সদস্য। জিম্মি দশা থেকে মুক্ত হয়ে আসেন বেশ কয়েকজন সেনা কর্মকর্তা ও তাদের পরিবার।
২৬ ফেব্রুয়ারী প্রধানমন্ত্রীর আহবানে বিদ্রোহী জওয়ানেরা অস্ত্র সমর্পণে সাড়া দেয়ার পর ২৭ ফেরুয়ারি সন্ধ্যায় পিলখানার ভেতরে ঢোকে পুলিশ। উদ্ধার করা হয় বন্দী সেনা কর্মকর্তাসহ অন্যদের মৃতদেহ। একটি রক্তাক্ত অধ্যায়ে শেষ হয় শ্বাসরুদ্ধকর তিনটি দিন। সেদিনের স্বজন হারানো ব্যাথা বুকে লালন করে আজো নীরবে কাদে বাংলাদেশ।
এ ঘটনায় ২০১৩ সালে রাজধানীর বকশিবাজারে বিশেষ আদালতে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়।