অবৈধ পথে বিছনাকান্দি সীমান্তে ঢুকছে ভারতীয় গরু

সিলেট

সিলেটের সীমান্তবর্তী এলাকায় চোরাকারবারিদের বরাবরের মতই দৌরাত্ম্য চলছে। বিশেষ করে গোয়াইনঘাটের বিছনাকান্দি সীমান্ত চোরাচালানের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহার করছে চোরাকারবারিরা। বিছনাকান্দি সীমান্ত পথে দিন-রাতে ভারত থেকে স্রোতের মতো আসছে গরুসহ চোরাইপণ্য। ঢুকছে মাদক সহ নানা অবৈধ পণ্য।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই চোরাচালানের নেপথ্যে রয়েছে একাধিক সিন্ডিকেট। সিন্ডিকেট সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন বিছনাকান্দি এলাকার নাসির উদ্দিন, উপরগ্রামের গোলাম হোসেন, হাদারপার গ্রামের নুরুল ইসলাম, বদরুল ইসলাম, নাসির উদ্দিন, এবং বিএসএফ এর লাইনম্যান নামে পরিচিত হাইজ্জাসহ একটি চক্র। তারা বিজিবি ও থানা পুলিশকে ‘ম্যানেজ’ করে নিরাপদে এই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

গত ২ জুন শুক্রবার বিছনাকান্দি এলাকায় অভিযান চালিয়ে গোলাম হোসেন এর বাড়ি থেকে ৪০টি ভারতীয় গরু আটক করে গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসন। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঝেমধ্যে এসব লোকদেখানো অভিযান চালিয়ে চোরাই গরুসহ মালামাল আটক করলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায় মূল হোতারা। এসব তথ্য জানিয়েছেন সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা।

জানা যায়, ঈদুল আযহা উপলক্ষে কোরবানির জন্য গোয়াইনঘাটের বিছনাকান্দি সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন দেশে আসছে অসংখ্য গরু। সীমান্ত পেরোনোর পর সড়কপথ ভ্রমণ শেষে শহরে প্রবেশ করেছে গরুগুলো। কেবল বিছনাকান্দি দিয়েই প্রতিদিন সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে প্রায় পাঁচশ’ গরু অবৈধভাবে দেশে আসছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাতের আঁধারে বিজিবি ও বিএসএফ এর সমন্বয়ে সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া খুলে দলবেঁধে নামানো হয় গরু। এপারে আসার পর আরও কয়েকজন গুনে গুনে গরুগুলো গ্রহণ করে। এরপর গরু নিয়ে আসা হচ্ছে সিলেটের দিকে। আশপাশেই বিজিবি সদস্যরা টহল দিলেও এ ব্যাপারে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই তাদের। এবং নীরব ভূমিকা পালন করছে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ।

এবিষয়ে জানতে সিন্ডিকেট সদস্যদের মধ্যে গোলাম হোসেন বলেন, আমার উপরে যে অভিযোগ শুনেছেন সেটি সত্য। আমি মাঝে মধ্যে আমার মাধ্যমে কিছু গরুসহ কিছু ভারতীয় পণ্য দেশে প্রবেশ করতে সহযোগিতা করি। কিন্তু গত কিছুদিন আগে আমার বাড়ি থেকে গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসন ৪০টি গরু উদ্ধার করেছে তার পর থেকে আমি এই কাজ ছেড়ে দিসি।

আর নাসির উদ্দিন, গোলাম হোসেন, নুরুল ইসলাম, বদরুল ইসলাম, নাসির উদ্দিন, হাইজ্জাদের সাথে কোনভাবে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ নজরুল ইসলাম বলেন, অবৈধ পথে ভারতীয় পণ্য কোনভাবে দেশে আসার সুযোগ নেই। এরকম কোন খবর পেলে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশকে জানাবেন। আমরা এর ব্যবস্থা নেব।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *