মোগল আমলে তৈরি দেওয়ানের পুল এর ইতিহাস

সিলেট

মোঃসরওয়ার হোসেন,গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি ঃ

মুঘল শাসনামলে সম্রাট মুহম্মদ শাহ (১৭১৯-৪৮) এর রাজত্বকালে আনুমানিক ১৭৪০ সালে অল্পকালের জন্য সিলেটের দেওয়ান (রাজস্ব কর্মকর্তা) নিযুক্ত হয়ে মুর্শিদাবাদ থেকে সিলেট আসেন গোলাব রাম

(মতান্তরে গোলাব রায়)।

এ সময় সিলেট অঞ্চলের ফৌজদার ছিলেন সমসের খান এবং সারা বাংলার শাসনকর্তা ছিলেন সুজা উদ্দিন খান। দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই এই ধর্মপ্রাণ দেওয়ান গোলাপগঞ্জের ঢাকাদক্ষিনে শ্রী চৈতন্যের

পিতৃভূমি সম্পর্কে অবগত হন।

এই সড়ক পথে ঢাকাদক্ষিণ যাবার জন্য পায়ে হেঁটে রওনা দেন। বাউসী কোনাচরে গিয়ে ঝরংবিল-সংলগ্ন বসন্ডার খালে আটকে যান। পরে পার হন নৌকা দিয়ে। এরপর তিনি শ্রীচৈতন্যের পিতৃভূমি দেখতে যান।

সেখানে যাওয়ার পর মন্দিরের জরাজীর্ণ অবস্থা দেখে সেটিও মেরামত করেন। মন্দির দর্শনে ভক্তদের যাতায়াতে যাতে বিঘ্ন না ঘটে সে জন্য এই সড়ক ও দেওয়ান পুল নির্মাণ করেন। বর্তমানে হেতিমগঞ্জ

থেকে কোনাচর বাজার, জামিটিকি বাজার হয়ে ঢাকাদক্ষিণগামী ১১ কিলোমিটার সড়কটি

দেওয়ান সড়ক নামে পিরিচত।

সড়কটিতে বারকোট,বাউসী,ঘোষগাঁও এই ৩ এলাকার সীমান্তে মধ্যবর্তী স্থানে দেওয়ানের পুল নামে প্রাচীন কালভার্ট আজ ও বর্তমান। ধারনা করা হয় এই দেওয়ানের নামানুসারেই দেওয়ানের পুল ও

এই রোড এর নাম করন করা হয়।

প্রাচীন দলিল ও রেকর্ডপত্রে তারি সাক্ষ্য বহন করে। এখনো এই কালভার্ট বা রোড় দিয়ে প্রতিদিন সিলেট শহরে কম সময়ে যাতায়াতের জন্য বিয়ানীবাজার, চন্দরপুর, ঢাকাদক্ষিণ সহ অনেক এলাকার

মানুষ এবং যানবাহন চলাচল করে।

গোলাপগঞ্জের অনেক ইতিহাস-ঐতিহ্যের ধারক-বাহক হয়ে আছে এটি। অনেক কবি-সাহিত্যিকের লেখনীতেও বারবার উঠে এসেছে পুলটির নাম।

দেওয়ানের পুলটি কোনো প্রকার লোহা ধাতব ব্যবহার ছাড়াই ইট-সিমেন্টে নির্মিত হয়।অপূর্ব সুন্দর নকশি কাটা দৃষ্টিনন্দন এই স্থাপত্য গোলাপগঞ্জের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে সুদৃঢ় করেছে।

দেওয়ানের পুলের অবস্থান ঢাকাদক্ষিনের শেষ সীমানা এবং লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়নের সংযোগ

স্থানীয় এলাকাবাসীর দাবি সরকার এবং প্রশাসন যাতে এই ঐতিহাসিক ও প্রাচীন স্থাপনাটির সঠিক পরিচর্যা এবং রক্ষণাবেক্ষণ করে।

* সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী *

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *