শিশুর জ্বর হলে করনীয়

লাইফস্টাইল
  • মানুষের শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট। বয়স, কাজের ধরনসহ আরো কিছু কারণে এই তাপমাত্রা ওঠানামা করতে পারে। সাধারণত ১০০.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার বেশি তাপমাত্রা শরীরে থাকলে তাকে জ্বর বলা যায়। শিশুদের জ্বর হলে নিতে হবে বাড়তি সতর্কতা।
ভয়ের কারণ নেই পাঁচ দিনের কম সময় জ্বর থাকলে

•          শিশুর খাওয়া, খেলাধুলা ও অন্যান্য আচরণ স্বাভাবিক থাকলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।

তাপমাত্রা ১০২.৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট হলে

•          শিশুর বয়স তিন মাস থেকে তিন বছর পর্যন্ত হলে (অথবা জ্বর ১০৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট এবং বয়স তিন বছরের বেশি হলে) বুঝবেন এই তাপমাত্রা কোনো একটি রোগের সঙ্গে যুদ্ধ করতে গিয়ে হয়েছে।

শিশুকে টিকা দিলে

•          এতে ভয়ের কিছু নেই। জ্বর হলেও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেরে যায়।

সচরাচর ঘটে না তবে বিষয়টি মাথায় রাখতে হবেখিঁচুনি জ্বর

জ্বরের প্রতিক্রিয়ায় পাঁচ বছরের নিচের শিশুদের মধ্যে ২ থেকে ৪ শতাংশের খিঁচুনি হতে পারে। যদি এ রকম পরিস্থিতি তৈরি হয়, তাহলে যা করবেন—

•          শিশুকে যথাসম্ভব কাত করে রাখুন।

•          এ সময় মুখে কোনো খাবার দেবেন না।

•          পাঁচ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে খিঁচুনি চলতে থাকলে জরুরি ভিত্তিতে

চিকিৎসক ডাকুন বা হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন।

 

শিশুকে যখন চিকিৎসক দেখাবেন

শিশুর বয়স তিন মাসের কম হলে

• শিশুটি হয়তো সিরিয়াস কোনো অসুখের বিরুদ্ধে লড়াই করছে—এই জ্বর তারই বহিঃপ্রকাশ।

 

জ্বর তিন দিনের বেশি হলে

• শিশুর চিকিৎসায় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরামর্শ দেবেন।

 

তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি হলে

• এ সময় প্যারাসিটামল ও আইবুপ্রোফেন সেবনের দুই ঘণ্টার মধ্যে জ্বর না কমলে তখন চিকিৎসক ডাকতে পারেন।

 

স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড না করলে

• শিশু যদি খেলাধুলা, খাওয়াদাওয়া না করে এবং তার ঘুম ঘুম ভাব বেশি থাকে, তখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

• যদি দিনে তিনবারের কম ডায়াপার বদলাতে হয় বা বড় শিশুদের ক্ষেত্রে ৮-১২ ঘণ্টা পর্যন্ত প্রস্রাব না হয়, তবে বুঝতে হবে শিশুটির পানিশূন্যতা হচ্ছে।

টিকা দিলে এবং তাপমাত্রা ২৪ ঘণ্টা ধরে ১০২ ডিগ্রির বেশি থাকলে • কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে কি না তা বুঝে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

 

যদি নিজেই ভয় পান

• মনকে সান্ত্বনা দিতে শিশুকে চিকিৎসকের কাছে নিতে পারেন।

 

চিকিৎসা পরামর্শ

•          শিশুকে ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় রাখুন। যথাসম্ভব কম্বল বা গরম কাপড় গা থেকে সরিয়ে রাখুন।

•          পানিশূন্যতা রোধে বেশি করে পানি, খাবার স্যালাইন, তরল জাতীয় খাবার, ফলের রস ইত্যাদি দিন।

•          পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে দিন।

•          জ্বর ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি হলে এবং শিশুর বয়স ছয় মাসের মধ্যে হলে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ, এর বেশি হলে স্পঞ্জ করাবেন, সাপোজিটরি দেবেন বা আইবুপ্রোফেন দিতে পারেন। তবে অ্যাসপিরিন জাতীয় ওষুধ নয়।

•          সাধারণ পানি দিয়ে শিশুকে গোসল করাবেন, এতে তাপমাত্রা কমে আসবে।

গ্রন্থনা : ডা. গুলজার হোসেন

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *