সিলেটে গতবছরের তুলনায় চলতি বছর ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে কয়েকগুণ। বিভাগের চার জেলায় গত ১ জুন থেকে ৬ জুলাই পর্যন্ত ৩৬ দিনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৩ জন। এদের মধ্যে জুলাইয়ে মাত্র ছয়দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ জন।
অথচ ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ মে—এ পাঁচ মাসে আক্রান্ত হয়েছেন মাত্র পাঁচজন। হঠাৎ করে জুন মাসে এসে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। তবে এখন পর্যন্ত সিলেটে এ রোগে কারও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
আক্রান্তরা সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ৫৫ জনই সিলেটের অন্যতম পর্যটনস্পট গোয়াইনঘাট উপজেলার বাসিন্দা। এদের অধিকাংশেরই ঢাকাসহ দেশের অন্য কোনো জেলায় যাতায়াতের ‘হিস্ট্রি’ নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ধারণা করা হচ্ছে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে এ উপজেলার জাফলং, বিছনাকান্দি ও দেশের একমাত্র মিঠাপানির সোয়াম ফরেস্ট রাতারগুলে আসা পর্যটকদের মাধ্যমে তারা ডেঙ্গু রোগে সংক্রমিত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কার্যালয়ের তথ্য অনুসারে, চলতি বছর জানুয়ারি থেকে ৬ জুলাই পর্যন্ত সিলেট বিভাগে মোট ৭৯ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। যাদের মধ্যে ২৩ জন নারী এবং ৫৬ জন পুরুষ রয়েছেন। বিভাগে গত একমাস ৬ দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৭৩ জন। যেখানে জুনে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৯ জন। আর চলতি মাসের ছয়দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ জন। রোগীর সংখ্যা গতবারের তুলনায় অনেক বেশি।
আক্রান্তদের মধ্যে গোয়াইনঘাট উপজেলায় ৫৫ জন, সিলেট মহানগরে দুজন, সিলেট সদরে একজন, ফেঞ্চুগঞ্জে একজন, সুনামগঞ্জে সাতজন, মৌলভীবাজারে চারজন এবং হবিগঞ্জে চারজন রয়েছেন। এ বিষয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. জাহিদুল ইসলাম সিলেট লাইনকে বলেন, সিটি করপোরেশন এলাকায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা খুবই কম। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে প্রায় প্রতিদিনই নগরের কোনা কোনো এলাকায় মশকনিধন অভিযান অব্যাহত আছে। এডিস মশা নিধনে আমাদের ভলান্টিয়ার ডোর টু ডোর কাজ করছেন।
তিনি আরও বলেন, সিলেটে মহানগরের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের দুটি জায়গায় এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। চলতি মাসের প্রথম থেকেই এডিস মশা নিধনে আমাদের বিশেষ কার্যক্রম চলছে।
সিলেট স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. শরীফুল হাসান বলেন, বিভাগে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত সবচেয়ে বেশি গোয়াইনঘাটে। আক্রান্তদের কয়েকজন বাদে অধিকাংশেরই ট্রাভেল হিস্ট্রি নেই।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। সবার আগে এডিস মশার উৎসস্থল ধ্বংস করতে হবে। সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে হবে।
শেয়ার করুন