১৬ বছরে অন্তত ১০ বার ফাঁস হয় মেডিকেলের প্রশ্ন

জাতীয়

মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এদের মধ্যে ৭ জনই চিকিৎসক।

সিআইডি জানিয়েছে, ২০০১ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত অন্তত ১০ বার প্রশ্নফাঁস করেছে চক্রটি। আর এতে হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। গত ৩০ জুলাই থেকে ১০ দিন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

এসময় তাদের কাছ থেকে ৯টি মোবাইল, ৪টি ল্যাপটপ, নগদ ২ লাখ ১১ হাজার টাকা, ১৫ হাজার এক শত বিদেশি মুদ্রা থাই বাথ, বিভিন্ন ব্যাংকের ১৫ টি চেক বই, ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড ও ভর্তির এডমিট কার্ড জব্দ করার কথা জানায় সিআইডি।

রোববার (১৩ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১২ টায় রাজধানীর মালিবাগে অবস্থিত সিআইডির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া।

মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, পাবলিক পরীক্ষা সামনে রেখে প্রশ্নফাঁস করার জন্য এক শ্রেণির চক্র বেশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এই চক্র নানা কায়দায় প্রশ্নফাঁস যেমন করে, তেমনি গুজব ছড়িয়ে পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বিভ্রান্ত করে। শিক্ষাখাতের ক্যানসার হিসেবে বিবেচিত এসব প্রশ্নপত্র ফাঁস চক্রকে নির্মূল করতে কাজ করছে পুলিশ।

তিনি বলেন, দেশের মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষাগুলোতে নিয়মিত প্রশ্নফাঁসকারী বিশাল এক সিন্ডিকেটের খোঁজ পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ। ২০২০ সালে মিরপুর মডেল থানায় করা এক মামলার তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে- বিগত প্রায় ১৬ বছরে হাজারো শিক্ষার্থীকে অবৈধ উপায়ে মেডিকেল কলেজগুলোতে ভর্তি করিয়ে শত কোটি টাকা আয় করেছে চক্রের অন্তত ৮০ জন সক্রিয় সদস্য। প্রশ্নফাঁস করে মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন এমন শতাধিক শিক্ষার্থীর নামও পেয়েছে সিআইডি। এর মধ্যে অনেকে পাশ করে ডাক্তারও হয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, গত ৩০ জুলাই থেকে ১০ দিন ঢাকাসহ টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, বরিশাল জেলায় অভিযান পরিচালনা করে এ চক্রটির ১২ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে ৭ জনই ডাক্তার। তাদের সবাই বিভিন্ন মেডিকেল ভর্তি কোচিং সেন্টার, নয়তো প্রাইভেট পড়ানোর আড়ালে প্রশ্নফাঁস করতেন।

২০০১ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ১৬ বছরে অন্তত ১০ বার এই চক্র মেডিক্যালের প্রশ্নফাঁস করেছে। গ্রেফতার আসামিদের কাছ থেকে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের দেওয়া বিপুল সংখ্যক ব্যাংকের চেক এবং এডমিট কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। এদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য পাওয়ার কথাও জানান তিনি।

প্রশ্নফাঁস চক্রের মাস্টারমাইন্ড জসীম উদ্দিন ভূইয়ার কাছ থেকে একটি গোপন ডায়েরি উদ্ধার করা হয়েছে। যেখানে সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা তার চক্রের অন্যান্য সদস্যদের নাম রয়েছে। যেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে বলেও জানান সিআইডি প্রধান।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *