কোনো গাছের বয়স হয়তো এক বছর, কোনটার দুই বছর হবে। শান্ত, সবুজ প্রকৃতিতে কেবল কৃষ্ণচূড়া, ফুলসহ ঔষধি গাছগুলো ডালপালা মেলে মাথা তুলতে শুরু করেছিল। হয়তো কয়েক বছরের মধ্যেই গাছগুলো দাঁড়িয়ে যেত সম্পূর্ণ চেহারা নিয়ে। কিন্তু বৈদ্যুতিক লাইনের পাশে থাকা গাছের ডাল ছাঁটাইয়ের নামে গোড়াতেই পল্লী বিদ্যুতের দায়ের কোপ গাছগুলোর বেড়ে ওঠার সাধকে থমকে দিয়েছে। দুই দফায় কৃষ্ণচূড়া, ফুলসহ ঔষধি প্রায় ২০টি গাছ কাটা পড়েছে।
বড়লেখা শহরের ভেতর দিয়ে চলে যাওয়া সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের মৌলভীবাজার-চান্দগ্রাম আঞ্চলিক সড়কের পানিদার এলাকায় শনিবার (২৬ আগস্ট) দুপুরে এ ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৈদ্যুতিক লাইনের পাশে থাকা গাছের ডাল ছাঁটায়ের নামে পৌরসভার লাগানো সৌন্দর্যবর্ধনের বেশ কিছু গাছ কাটায় এলাকায় ক্ষোভ–অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। প্রয়োজন ছাড়াই পরিবেশবান্ধব মূল্যবান উঠতি গাছ কেটে ফেলায় উত্তেজনা দেখা দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
জানা গেছে, প্রায় প্রতি সপ্তাহে একদিন সকাল-সন্ধ্যা বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ গাছের ডাল ছাঁটাইয়ের নামে বিদ্যুৎ লাইনের উপরে থাকা বিভিন্ন প্রজাতির গাছের ডালপালা কাটে। নিয়মিত ঢালপালা ছাঁটাইয়ের অংশ হিসেবে শনিবার পৌরসভার পানিধার এলাকায় সওজ রাস্তার পাশে দুই বছর আগে পৌর মেয়রের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য রোপণ করা ৭টি গাছ অতি উৎসাহি হয়ে গোড়ায় কেটে ফেলে বড়লেখা পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। এতে স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দেয়। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ মেয়রের লাগানো গাছ কোনভাবেই বিদ্যুৎ লাইনের ক্ষতি করছে না এবং তা বিদ্যুৎ লাইনের কাছাকাছিও নয়। অপ্রয়োজনে গাছ কাটার ঘটনায় সেখানে উত্তেজনা দেখা দেয়। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এরআগে গত শনিবার (১৯ আগস্ট) আরও ১৩টি গাছ কেটে ফেলেছে বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন।
বড়লেখা পৌরসভার মেয়র আবুল ইমাম মো. কামরান চৌধুরী বলেন, ‘গাছগুলো রাস্তার সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য লাগানো হয়। বিদ্যুৎ লাইনের যাতে কোনো ক্ষতি না হয় সেই পরিকল্পনা নিয়েই রোপণ করা হয়েছে। গাছগুলো যাতে গরু-ছাগল নষ্ট না করে, নিরাপদে বেড়ে ওঠে এ জন্য দুই বছর থেকে পরিচর্যা করা হচ্ছে। কিন্তু পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির লোকজন অতি উৎসাহী হয়ে শনিবার দুপুরে বেশ কিছু গাছ গুড়ায় কেটে ফেলে এবং আরও কিছু গাছের মাথা মুড়িয়ে ফেলে। এরআগেও তারা অপ্রয়োজনে কয়েকটি গাছ কেটে ফেলে। এতে এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে পল্লীবিদ্যুতের ডিজিএমকে ফোনে আপত্তি জানাই। থানার ওসিকে অবহিত করি।’
মৌলভীবাজার পল্লীবিদ্যুত সমিতির বড়লেখা আঞ্চলিক কার্যালয়ের এজিএম আশরাফুল হুদা বলেন, ‘বিষয়টি জানার পরই ওই এলাকায় গাছকাটা বন্ধ করা হয়েছে। আগামীতে গাছের ডাল কাটায় নিয়োজিত শ্রমিকদের আরো সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
শেয়ার করুন