বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির শুক্রবার বিকেলে দিল্লিতে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসার কথা রয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে বৈঠক হওয়ার কথা। এ বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে কয়েকটি সমঝোতা স্মারক সই ও প্রকল্প উদ্বোধন হতে পারে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে এ বৈঠক নিয়ে অনেকের আগ্রহ রাজনৈতিক বিবেচনায়। ধারণা করা হচ্ছে, বাংলাদেশের আগামী সাধারণ নির্বাচনের আগে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে এটি শেষ বৈঠক।
সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, “বাংলাদেশ নিয়ে শেষ পর্যন্ত ভারতের অবস্থান কী হবে, এই বৈঠকেই সেই বার্তা পরিস্কার হয়ে যাবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কাছে। যুক্তরাষ্ট্র এতোটা আগ্রহ নিয়ে অতীতের নির্বাচনগুলোতে ‘হস্তক্ষেপ’ করেনি। এবার তারা করছে, মানে হচ্ছে তারা এ ব্যপারে আগের চেয়ে বেশি সিরিয়াস যে এখানে একটি যথাযথ নির্বাচন হোক।”
জি২০-এর বর্তমান সভাপতি ভারত যে ৯টি দেশকে বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছে, বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। শেখ হাসিনার এই সফর এমন এক সময় হচ্ছে যখন বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে এসেছে। বলা হচ্ছে, নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনার এই ভারত সফর বর্তমান সরকার তথা আওয়ামী লীগের জন্য রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।
কয়েক সপ্তাহ আগে ভারতের সংবাদপত্রে খবর প্রকাশিত হয়েছিল যে শেখ হাসিনার পক্ষ নিয়ে আমেরিকাকে বার্তা দিয়েছে ভারত। এ খবর প্রকাশিত হবার পর বিষয়টি বাংলাদেশের রাজনীতিতে নানা প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। বাংলাদেশে ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছিল। কিন্তু ভারতের তরফ থেকে শেখ হাসিনার সরকারকে অকুণ্ঠ সমর্থন দেওয়া হয়।
সাবেক পররাষ্ট্র সচিব তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে ভারত এখানে চাইবে যে একটা স্থিতাবস্থা বজায় থাকুক। এটা তাদের জন্য সুবিধাজনক। কিন্তু তারা কতটুকু এবার এর পক্ষে নামবে সেটা আমরা জানি না এখনো। আদৌ নামবে কি-না, সেটাও জানি না। কারণ তাদের এখানে বহুমাত্রিক সম্পর্কের বিষয় আছে। আমরা এটাও জানি না মার্কিন যুক্তরাষ্ট এবং ভারতের মধ্যে এ বিষয়ে কোন কথা হয়েছে কি-না বা কী কথা হয়েছে। এগুলো দুই নেতার বৈঠকের পরেই স্পষ্ট হবে।’
তবে তৌহিদ হোসেন বলছেন, ‘বৈঠকে ভারত তার অবস্থান বাংলাদেশের কাছে স্পষ্ট করলেও সেটা হয়তো বাইরে থেকে দৃশ্যমান হবে না কিংবা দৃশ্যমান হলেও সময় লাগবে।’
শেয়ার করুন