সিলেটে নিখোঁজ ৪ কিশোরের মধ্যে এক কিশোরকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ।এখনো খোঁজ মিলেনি বাকি ৩জনের।৪জন কিশোর সিলেট জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় তিন সপ্তাহের ব্যবধানে নিখোঁজ হয়েছেন।
নিখোঁজ কিশোররা হলেন- জালিজ মাহমুদ ওরফে সিয়াম (১৬), মো. উসমান আহমদ (১৩) ও মো. মাহফুজ রিফাত (১৬) ও মো. ইয়ামিন হামিম (১৬) ।তাদের মধ্যে দুজন স্কুল-কলেজ ও দুজন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। এসব ঘটনায় পুলিশের কাছে সাধারণ ডায়েরি করেছেন নিখোঁজদের স্বজনরা।
নিখোঁজদের মধ্যে মাদ্রাসার শিক্ষার্থী মাহফুজ রিফাতকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
বুধবার (৪ অক্টোবর) জকিগঞ্জের মানিকপুর ইউনিয়নের ডেমারগ্রামের মো.মাহফুজ রিফাত নামের মাদ্রাসা শিক্ষার্থী বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। কোথাও কোনো খোঁজ খবর না পেয়ে ৯ অক্টোবর জকিগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছিল।
মাহফুজ রিফাত থানার মনসুরপুর গ্রামের হাফেজ মাওলানা আবদুল বাসিতের ছেলে। সে বিয়ানীবাজার উপজেলার একটি মাদ্রাসায় হিফজ বিভাগে পড়ত। তবে, মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) দিবাগত রাতে মাহফুজ রিফাতকে উদ্ধার করে জকিগঞ্জ থানা পুলিশ।
এব্যাপারে জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাসুদ বলেন, মাদ্রাসা না যাওয়ায় রিফাতের বাবা তাকে খুঁজছিলেন। তখন রিফাত বাবার ভয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে সিলেটের হুমায়ুন রশিদ চত্বর এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তাকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সিলেট সদরের খাদিমনগর রুস্তমপুর আবাসিক এলাকা থেকে জালিজ মাহমুদ সিয়াম নামের এক শিক্ষার্থী নিখোঁজ হয়। সে সদর উপজেলার পীরেরবাজার এলাকার জহিরিয়া উচ্চ. মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। জালিজ বরিশালের উজিরপুর গাজীরপাড়া গ্রামের ফরিদুল ইসলাম ও সুলতানা বেগম দম্পতির ছেলে।
জালিজ খাদিমনগর রুস্তমপুর আবাসিক এলাকায় মামা সোহাগ হাওলাদারের বাসায় থাকতো। গত ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
এ ঘটনায় সোহাগ হাওলাদার সিলেট শাহপরাণ (রহ.) থানায় ২০ সেপ্টেম্বর নিখোঁজের জিডি করেন।
নিখোঁজ শিক্ষার্থী জালিজ মাহমুদের মামা সোহাগ হাওলাদার বলেন, ব্যবসার সূত্রে তিনি সিলেটে থাকেন। তার ভাগনে জালিজ পড়াশোনার জন্য সিলেটে এসেছিল। তার বাসাতেই থাকত। গত ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার দিকে ঘরে ফিরে ভাগনেকে না পেয়ে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেন। এরপর থেকে তার সন্ধান পাওয়া যায়নি।
এব্যাপারে সিলেট শাহপরাণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের বলেন, পুলিশ নিখোঁজ স্কুল ছাত্রের সন্ধান চালাচ্ছে।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) জেলার গোয়াইনঘাটের রুস্তমপুর ইউনিয়নের বীরমঙ্গল জামকান্দি গ্রামের মো. উসমান আহমদ নিখোঁজ হয়। সে ওই গ্রামের রুস্তমপুর হানিফ আলীর ছেলে। উসমান স্থানীয় জামকান্দি নুরুল উলুম মাদানি মাদ্রাসার পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
এ ঘটনায় উসমানের বাবা হানিফ আলী গোয়াইনঘাট থানায় ২৮ সেপ্টেম্বর সাধারণ ডায়েরি করেন।
হানিফ আলী বলেন, ছেলে নিখোঁজের দিন মাদ্রাসায় যায়নি। বাড়ি থেকে সকাল ১০টার দিকে বের হয়ে সে আর বাড়ি ফেরেনি। এরপর থেকে তিনি বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিচ্ছেন। তবে ছেলের সন্ধান পাচ্ছেন না।
এব্যাপারে গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম নজরুল ইসলাম বলেন, পুলিশ নিখোঁজ কিশোরের সন্ধান করে সম্ভাব্য সব স্থানে সন্ধান করছে।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) সিলেট মহানগরীর শিরামপুর শেখপাড়া এলাকার মো.ইয়ামিন আরাফাত হামিম (১৯) বাসা থেকে নগরীর কতমতলী যাওয়ার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে আর বাসায় ফিরেনি।
এ ঘটনায় বুধবার (১১ অক্টোবর) সকালে হামিমের বাবা জামাল উদ্দীন মোগলাবাজার থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
হামিমের বাবা জানান, তার ছেলে দক্ষিণ সুরমার শাহপরাণ সরকারি কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। ছেলেকে খুঁজে না পাওয়ায় পরিবারের সদস্যরা দিশেহারা। হারানোর সময় তার পরনে ছিল কালো টি শার্ট, পরনে জিন্স প্যান্ট, গায়ের রং শ্যামলা, মাথার চুল কালো, উচ্চতা ৫ ফুট ৩ ইঞ্চি।
সাধারণ ডায়েরির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মোগলাবাজার থানার ডিউটি অফিসার এস আই সখিনা আক্তার।
শেয়ার করুন