জামায়াতের লিভ টু আপিলের শুনানি ১২ নভেম্বর

জাতীয়

নিবন্ধন বাতিল করে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে জামায়াতে ইসলামীর করা লিভ টু আপিলের (আপিলের অনুমতি) শুনানির জন্য আগামী ১২ নভেম্বর দিন ঠিক করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ সোমবার এ দিন ঠিক করে দেয়।

সভা-সমাবেশসহ জামায়াতের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে করা আবেদনের ওপর আদালতে শুনানি শুরু করতে চেয়েছিলেন আবেদনকারীদের আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর। তখন আদালত মূল মামলার লিভ টু আপিল শুনানির জন্য ১২ নভেম্বর দিন ঠিক করে দেন।

পরে আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা আদালতে বলেছি, জামায়াতের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধের দাবিতে একটি আবেদন পেন্ডিং আছে, কিন্তু তারা বারবার সেটি শুনানি না করে সময় নিয়ে যাচ্ছেন। আর ওদিকে বারবার সভা- সমাবেশ করে এই ঘটনা ঘটাচ্ছে। এই জন্য আমরা আদালত অবমাননার আবেদনের শুনানির জন্য আবেদন করি।

“তখন আদালত বলেন, ‘তাহলে আমরা মূল মামলাটিই শুনানি করে ফেলি।’ এ সময় আদালতের কাছে একটি অন্তবর্তীকালীন আদেশ প্রার্থনা করি, যাতে এ সময় জামায়াত সভা-সমাবেশ বা নাশকতা করতে না পারে। তখন আদালত বলেছেন, কোনো অসুবিধা নাই। এটা আমরা ১২ তারিখে তালিকার ওপরেই রেখে দেব।”

আদালতে জামায়াতের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মো. জিয়াউর রহমান। অবরোধের কারণে সিনিয়র আইনজীবী না আসায় তিনি সময় আবেদন করেন।

জামায়াতের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে নিষেধাজ্ঞা এবং নিবন্ধন বাতিল হওয়ার পরও রাজনৈতিক কর্মসূচির মাধ্যমে নিবন্ধন ফেরত চাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে আবেদন করেন মওলানা সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, মো. হুমায়ন কবির ও ইমদাদুল হক নামের তিন ব্যক্তি।

আবেদনে বলা হয়, ‘জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায় এখন পর্যন্ত বহাল রয়েছে। রায় বহাল থাকা অবস্থায় ১০ জুন জামায়াতে ইসলামী ঢাকায় সভা-সমাবেশ করেছে। উচ্চ আদালতের রায়ের পর দলটির এ ধরনের কর্মসূচি পালন বেআইনি। একই সঙ্গে উচ্চ আদালতের রায়ের লঙ্ঘন। কারণ রায়ে বলা হয়েছে, দল হিসেবে জামায়াতের নিবন্ধন সংবিধান ও গণ-প্রতিনিধিত্ব আদেশের পরিপন্থী।

‘অতএব কোনভাবেই দলটি সভা-সমাবেশ করার অনুমতি পেতে পারে না। এ ছাড়া নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণে অযোগ্য, কিন্তু এর পরেও সভা-সমাবেশে দলটির নিবন্ধন দাবি করে বক্তব্য প্রদান আদালত অবমাননার শামিল।’

১০ বছর পর গত ১০ জুন রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সমাবেশ করে জামায়াত। এ কর্মসূচি থেকে তাদের নিবন্ধন ফিরিয়ে দেয়াসহ বেশ কয়েকটি দাবি করা হয়, যা নিয়ে দেশব্যাপী আলোচনা ‍শুরু হয়।

২০০৯ সালের এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জামায়াতকে নির্বাচন কমিশনের দেয়া নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করে ২০১৩ সালের ১ আগস্ট রায় দেয় হাইকোর্ট। এরপর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে জামায়াত, যা এখন শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *