অনাহারে গাজার অর্ধেক জনসংখ্যা: জাতিসংঘ

বিশ্ব

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজায় টানা দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে বর্বরোচিত বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এ ছাড়া উপত্যকাটিতে আরোপিত কঠোর অবরোধের কারণে দেখা দিয়েছে খাবার ও মৌলিক চাহিদার প্রচুর সংকট। এমন অবস্থায় ভূখণ্ডটিতে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র মানবিক সংকট। গাজার অর্ধেক জনসংখ্যাকে প্রায় প্রতিদিনই অনাহারে থাকতে হচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।

গতকাল রোববার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্রয়োজনীয় ত্রাণের অভাবে গাজা উপত্যকার প্রতি ১০টি পরিবারের মধ্যে ৯টি পরিবারের প্রতিদিন পর্যাপ্ত খাবার জোটে না বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

স্থানীয় সময় শুক্রবার জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) উপ-পরিচালক কার্ল স্কাউ-এর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল গাজা পরিদর্শন করে। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে এসব কথা বলেন কার্ল।

তিনি আরও বলেন, ‘প্রয়োজনীয় ত্রাণ সরবরাহের খুব অল্প পরিমাণ গাজাতে প্রবেশ করতে পেরেছে। এখানে পর্যাপ্ত খাবার নেই। মানুষ অভুক্ত থাকছে।’

কার্ল স্কাউ জানান, চলতি সপ্তাহে গাজা পরিদর্শনের সময় তিনি এবং তার প্রতিনিধি দল যে পরিমাণ ‘ভয়, বিশৃঙ্খলা এবং হতাশার’ সম্মুখীন হয়েছেন, তার জন্য তারা প্রস্তুত ছিলেন না।

কার্ল ও তার দল জাতিসংঘের খাদ্য গুদামগুলোতে হাজার হাজার হতাশ ক্ষুধার্ত মানুষের লাইন, খালি সুপারমার্কেট এবং আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে উপচেপড়া ভিড়ের সঙ্গে বাথরুমের সামনে দীর্ঘ লাইন দেখেছেন বলে জানান। কার্ল আরও বলেন, গাজার চলমান পরিস্থিতির কারণে সেখানে সহায়তা সরবরাহ ‘প্রায় অসম্ভব’ হয়ে উঠেছে।

এদিকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল রিচার্ড হেচট বলেছেন, কোনো বেসামরিক ব্যক্তির মৃত্যু এবং দুর্ভোগ আমাদের কাছে বেদনাদায়ক, তবে আমাদের কাছে আর কোনো বিকল্প নেই। এ ছাড়া গাজা ভূখণ্ডের ভেতরে যতটা সম্ভব অগ্রগতি অর্জন করতে সবকিছু করা হয়েছে বলেও দাবি জানান তিনি।

গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত উপত্যকাটিতে ১৭ হাজার ৭০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আর আহত হয়েছেন ৪৮ হাজারের বেশি মানুষ। নিহত এসব ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ১২ হাজারের বেশি নারী ও শিশু। এ ছাড়া ভূখণ্ডটিতে এখনো প্রায় ৭ হাজার ৬০০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *