স্টাফ রিপোর্টার : দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেটের ছয়টি আসনে ভোটের মাঠে আছেন ৩৫ জন প্রার্থী। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে ঢাকঢোল পিটিয়ে নির্বাচনী মাঠে প্রচার-প্রচারণা করেন তারা। নির্বাচনে অংশ নেওয়া এসব প্রার্থীর কেউই তাদের নির্বাচনী ইশতিহার ঘোষণা করেননি। অথচ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও সিলেটের সব ক’টি আসনে নিজেদের নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন করেছিলেন প্রার্থীরা।
এ দিকে শুধুমাত্র নৌকার মনোনীত প্রার্থীরা আওয়ামী লীগের দলীয় ইশতেহারে সীমাবদ্ধ থেকেছেন। এছাড়া প্রার্থীরা নিজেদের ইশতেহার ঘোষণা ছাড়াই কেবল নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় ভোটারদের শুনিয়েছেন প্রতিশ্রুতির বানী।
ইশতেহারের বিষয়ে আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, আওয়ামী লীগের ইশতেহারই নৌকার প্রার্থীদের ইশতেহার। তবে অন্য প্রার্থীরা কেন ইশতেহার ঘোষণা করেননি, সেটি তারাই ভালো বলতে পারবেন।
অন্যদিকে প্রার্থীরা নির্বাচনী ইশতিহার ঘোষণা না করায় সাধারণ মানুষ প্রার্থীদের এলাকার উন্নয়ন ও আগামীর স্বপ্ন নিয়ে রয়েছে অন্ধকারে। নতুন ও তরুণ ভোটারদের কাছে প্রার্থীদের উন্নয়ন সম্ভাবনা নিয়ে প্রার্থীদের বক্তব্য লিখিত আকারে পৌঁছায়নি। এতে নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এবার ভোটের লড়াইয়ে জাতীয় পার্টির চারজন প্রার্থী থাকলেও শেষ সময়ে ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন সিলেট-৫ আসনে প্রার্থী সাব্বির আহমদ। এছাড়া তৃণমূল বিএনপির পাঁচজন, ইসলামী ঐক্যজোট (আইওজে) চারজন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) তিনজন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের তিনজন, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের দুইজন, গণফোরামের একজন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের একজন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএলর একজন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আছেন পাঁচজন।
প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের মধ্যে আছেন- সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তার আসনে প্রার্থী আছেন আরো চারজন। তারা হলেন- ইসলামি ঐক্যজোটের প্রার্থী ফয়জুল হক, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) প্রার্থী ইউসুফ আহমদ, বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মোহাম্মদ সোহেল আহমদ চৌধুরী ও আপিলে ফিরে আসা বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী আব্দুল বাছিত।
সিলেট-২ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান, আওয়ামী লীগের প্রার্থী শফিকুর রহমান চৌধুরী, জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইয়াহইয়া চৌধুরী, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মো. মনোয়ার হোসাইন, তৃণমূল বিএনপির মোহাম্মদ আব্দুর রব, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. জহির এবং বিশ্বনাথ পৌর মেয়র মুহিবুর রহমান।
সিলেট-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান এমপি হাবিবুর রহমান হাবিব, জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোহাম্মদ আতিকুর রহমান আতিক, স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা ডা. মো. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) প্রার্থী আনোয়ার হোসেন আফরোজ, বাংলাদেশ ইসলামি ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী শেখ জাহেদুর রহমান (মাসুম) ও ঈগল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ফখরুল ইসলাম। এছাড়া ইসলামি ঐক্যাজোটের (আইওজে) প্রার্থী মো. মইনুল ইসলাম জাতীয় পার্টির প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছেন।
সিলেট-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য ইমরান আহমদ। হেভিওয়েট এই প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন ইসলামি ঐক্যজোটের প্রার্থী মো. নাজিম উদ্দিন (কামরান) এবং তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী মো. আবুল হোসেন।
সিলেট-৫ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, কেটলি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী মাওলানা মোহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরী, স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা আহমদ আল কবির, তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী কুতুব উদ্দীন আহমদ শিকদার, বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মো. বদরুল আলম এবং বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) প্রার্থী মো. খায়রুল ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়া জাতীয় পার্টির প্রার্থী শাব্বীর আহমদ ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
সিলেট-৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা সরওয়ার হোসেন, তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী শমসের মুবিন চৌধুরী, জাতীয় পার্টির প্রার্থী সেলিম উদ্দিন, ইসলামি ঐক্যাজোটের প্রার্থী সাদিকুর রহমান এবং বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী আতাউর রহমান প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন। ইতোমধ্যে প্রচার-প্রচারণা শেষ হলেও প্রার্থীদের কেউ ইশতেহার ঘোষণা করেননি।
শেয়ার করুন