উচ্চ আদালত ও ফুটবল মাঠে সাফল্যের পর ভোটযুদ্ধে নামেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই সুপরিচিত মুখ প্রতিন্দ্বন্দ্বিতা করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। ঈগল প্রতীক নিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের শক্তিশালী ঘাঁটি। হয়ে উঠলেন হবিগঞ্জ-৪ আসনে গত তিন দশকেরও বেশি সময় পর নৌকার মাঝিকে হারানো প্রথম ব্যক্তি।
তার কাছে পাত্তাই পাননি টানা দু’বারের সংসদ সদস্য এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী। লাখো ভোটের ব্যবধানে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীকে হারিয়ে চমক দেখানোর পর সুমনকে নতুন করে আরও একবার দেখার জন্য তার চুনারুঘাট পীরের বাজারের বাড়িতে ভিড় করছেন ভক্ত, অনুসারী ও শুভ্যানুধায়ীরা। এরই ফাঁকে তিনি জানালেন মাদক ও বর্জ্যমুক্ত সমাজ গড়ার স্বপ্নের বিষয়ে।
ব্যারিস্টার সুমন বলেন, জনগণ আমাকে বিপুল ভোটের ব্যবধানে এমপি নির্বাচিত করেছেন। তবে আমি সাধারণ মানুষের মধ্যে এমপি নয়; বরং ব্যারিস্টার সুমন হয়েই আজীবন থাকব। নির্বাচনে পাস করব– এমন আত্মবিশ্বাস ছিল, কিন্তু এত ভোটের ব্যবধানে জয় পাব– তা জানা ছিল না।
এই অসামান্য জয়ের পেছনের কারিগরের বিষয়ে তিনি বলেন, হতদরিদ্রদের জন্য সরকারের কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি আছে; আর এবারের ভোটে হয়েছে আমার কাজের বিনিময়ে জনসমর্থনের কর্মসূচি। গণমানুষের জন্য কাজ করেছিলাম, ফলস্বরূপ ভোট পেয়েছি। আর হেভিওয়েট প্রার্থী কাজ করেন নাই, তাই ভোটও পান নাই। জনগণ এবার মার্কার চেয়ে কাজকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে।
কীভাবে জনগণের ভোটের দায় মেটাবেন জানতে চাইলে সুমন বলেন, স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা কঠিন। আমার স্বপ্ন অনেক বড়; অনেক দূর যেতে চাই, মানুষের সমস্যা সমাধান করতে চাই ও রাস্তাঘাটসহ অনেক অসমাপ্ত কাজ করতে চাই। আমাকে অনেক চ্যালেঞ্জ নিতে হবে, যে ইতশেহার ঘোষণা করেছি তা বাস্তবায়ন করতে হবে।
এ জন্য আমাকে অনেক দৌড়াতে হবে। তবে আমার বিশ্বাস; আগেও যেভাবে সফল হয়েছি সেভাবে এ ক্ষেত্রেও হব।
ইশতেহারের প্রথম কাজ নিয়ে তিনি বলেন, আমার প্রথম কর্মসূচি হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করা। মাদকও এর মধ্যে পড়ে। ময়লা-আবর্জনা শুধু মাটিতে-পানিতে থাকে না, আমার নির্বাচনী এলাকায়ও আছে। সব বর্জ্য সাফ করে চুনারুঘাট-মাধবপুরকে পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে সবার সহযোগিতা কামনা করছি।
রোববার অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বেসরকারি ফলাফলে ব্যারিস্টার সুমন পেয়েছেন ১ লাখ ৬৯ হাজার ৯৯ ভোট। তার নিটকতম প্রতিদ্বন্দ্বী মাহবুব আলী পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৫৪৩ ভোট।
শেয়ার করুন