বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নিশ্চুপ ছিলেন দেশসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। এতে করে বেশ সমালোচনার মুখে পড়তে হয় তাকে। শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনা যখন পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর দেশে তার নামে হত্যা মামলা করা হয়। তা নিয়ে তিনি একটি শব্দও বলেননি। যখন তার নামে মামলা করা হয় সাকিব অবস্থান করছিলেন পাকিস্তানে জাতীয় দলকে সার্ভিস দিতে।
প্রথম টেস্টে ১০ উইকেটের ঐতিহাসিক জয়ে দুই ইনিংস মিলিয়ে নিয়েছিলেন ৪ উইকেট। বিশেষ করে দ্বিতীয় ইনিংসে স্বাগতিক পাকিস্তানকে গুঁড়িয়ে দিতে মিরাজের সঙ্গে বল হাতে ঘূর্ণিঝড় তোলেন সাকিব। যদিও ব্যাট হাতে ম্রিয়মান ছিলেন তিনি। এমন জয়ের পরও তিনি কিছুই বলেননি।
হয়ত জবাবটা দিতে চেয়েছিলেন ২২ গজেই। কখনও বল হাতে কখনও বা ব্যাট হাতে। দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে মাত্র ২ রানই করতে পেরেছিলেন। আর দ্বিতীয় ইনিংসে তার উইলো থেকে আসে অপরাজিত ২১ রান। তবে এ ইনিংস তার কাছে বিশেষ কেননা দলের উইনিং রানটিই এসেছিল হত্যা মামলার আসামি সাকিবের ব্যাট থেকেই। যেমনটা মুম্বাইয়ের সেই ফাইনালে ট্রেডমার্ক ছক্কায় স্বরণীয় আছেন এমএস ধোনি।
যাকে নিয়ে এত আলোচনা-সমালোচনা সেই সাকিবই পাকিস্তানকে প্রথমবারের মতো বাংলাওয়াশ করার মিশনে ২২ গজে ব্যাট হাতে ছিলেন। এ সময় তার সঙ্গী ছিলেন টাইগার ক্রিকেটের আরেক ব্র্যান্ড মুশফিকুর রহিম। ১৮ বছর ধরে যারা দেশের ক্রিকেটকে নিয়ে গেছেন অনন্য এক উচ্চতায়।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শেখ হাসিনার পতনের পর নতুন বাংলাদেশে নতুন সরকার দ্বায়িত্ব গ্রহণ করে। আগের সরকারের অংশ হওয়ায় মুখে কুলুপ আঁটেন সাকিব। অবশেষে সরকার পতনের প্রায় এক মাস পর নীরবতা ভাঙলেন সুপার সাকিবা। তাও সেটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বাংলা ও ইংরেজিতে লেখা আলহামদুলিল্লাহ পোস্টে রীতিমতো ঝড় তুললেন দেশের ক্রিকেটের এই পোস্টার বয়। পোস্ট দেয়ার মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যেই প্রায় সোয়া একলাখ রিয়েকশন, ১৬ হাজারের বেশি মন্তব্যে অভিনন্দনে সিক্ত হয়েছেন সাকিব।
দেশের পতাকা সমুন্নত রাখার পাশাপাশি আরও বিতর্কহীন হয়ে উঠতে সাকিবের প্রতি আহ্বান ভক্তদের। ক্রিকেট পাগল জাতির হৃদয়ের কতটা জুড়ে আছেন দেশসেরা এই অলরাউন্ডার তার প্রমাণ ভক্তরা দিলেন সাকিবের পোস্টে। মাত্র ৪০ মিনিটের মাথায় ১ লাখ ৪৪ হাজার রিয়েকশনের ৮৬ হাজারই ভালোবাসা, ৩৯ হাজার লাইক, ১৫ হাজার কেয়ার, দেড় হাজার হা হা, ১৬২টি বিস্ময়, ৪৭টি অ্যাংগ্রি ও ১৬টি ছিলো কান্নার ইমোজি।
শেয়ার করুন