ছাতক যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি মামলা

সুনামগঞ্জ

সুনামগঞ্জের ছাতকের ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল আহমদকে প্রধান আসামী করে পাঁচজনের বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জ আদালতে একটি চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করা হয়েছে। খুরমা উত্তর ওই ইউপি চেয়ারম্যান সাবেক সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিকের চাচাতো ভাই ও আমেরতল গ্রামের মৃত খাইরুল ইসলামের ছেলে। গেল ৯ সেপ্টেম্বর আমল গ্রহণকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত, ছাতক, সুনামগঞ্জে (সি.আর মামলা নং- ৪৭৬/২০২৪) দায়ের করেন রণজিত দাস নামের এক ব্যক্তি। তিনি উপজেলার দোলারবাজার ইউনিয়নের শরিষপুর গ্রামের মৃত ব্রজেন্দ্র দাসের ছেলে ও স্থানীয় পংকজ মৎস্যজীবি সমিতির সভাপতি। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবিকে) তদন্তভার দেওয়া হয়েছে। মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন, খুরমা উত্তর ইউনিয়নের মৈশাপুর গ্রামের খুরশিদ আলীর ছেলে পাবেল মিয়া, একই গ্রামের মৃত মকবুল আলীর ছেলে মুহিবুর রহমান, মৃত সোনা উল্লার ছেলে আফজল মিয়া ও মৃত মজুমদার আলীর ছেলে আনোয়ারুল হক। 

মামলার এজাহার সূত্র থেকে জানা যায়, ছাতক উপজেলার খুরমা উত্তর ইউনিয়নের মৈশাপাহা মৌজায় অবস্থিত বরবরা জলমহাল। ২৪.৮০ একর জায়গা জুড়ে রয়েছে এ বরবরা জলমহাল। সরকারের জলমহাল ইজারা নীতিমালা অনুযায়ী ২০১৯ সালে ৬বছরের জন্য স্থানীয় পংকজ মৎস্যজীবি সমিতিকে ইজারা বন্দোবস্ত দেওয়া হয়। সমিতির সদস্যরা এ বরবরা জলমহালে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে মৎস্য চাষ ও সংরক্ষণ করা অবস্থায় আসামীরা বরবরা এ জলমহালটি তাদের নিয়ন্ত্রনে নেওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র করতে থাকে।

২০১৯ সালের ২০ জুলাই বিকেলে ইউপি চেয়ারম্যান বিল্লাল আহমদ কর্তৃক পংকজ মৎস্যজীবির সভাপতি রণজিত দাসকে তার বাড়িতে ডেকে নেয় এবং ইজারাকৃত বরবরা জলমহালটি তাদের নামে লিখে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। না দিলে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলবে এমন হুমকিতে একশো টাকা মূল্যের নন জুডিসিয়াল তিনটি ষ্ট্যাম্পে সে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য হয়। এর পর এ বরবরা জলমহাল দখল করে ২০/২৫ লক্ষ টাকার বিভিন্ন ধরণের মাছ তারা চুরি করে। তারা রাজনৈতিক ভাবে ক্ষমতাশীল হওয়ায় এসব বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক, থানা ও মন্ত্রনালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করে কোন প্রতিকার পায়নি। চলতি বছরের গেল ২৪ আগষ্ট সকালে বরবরা জলমহালে গিয়ে মাছ ধরার চেষ্টা করে ইজারাদার পক্ষ। কিন্তু প্রতিপক্ষকে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দিতে না পারায় শারিরিক ভাবে নির্যাতন পেয়ে সেখান থেকে ফিরে আসতে হয়েছে মামলার বাদীকে।

প্রথম ঘটনার পর দখলবাজ, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজদের ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন নি, বর্তমানে রাজনৈতিক অবস্থা পরিবর্তন হওয়ায় এবং সুষ্ঠু বিচারের প্রত্যাশায় আদালতে মামলা করেছেন বলে বাদী রণজিত দাস জানিয়েছেন। তিনি বলেন, হত্যার ভয় দেখিয়ে ওই ক্ষমতাধর চেয়ারম্যান, মামলার প্রধান আসামী তার ঘরে আটক করে অলিখিত ষ্ট্র্যাম্পে আমার স্বাক্ষর নিয়েছে। ওই স্বাক্ষরকৃত ষ্ট্যাম্পগুলো উদ্ধারসহ আসামীদের গ্রেফতার করে তিনি শাস্তির দাবী জানান।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *