স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেটের বিশ্বনাথে উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের মাহতাবপুর মৎস্য আড়ৎ নিয়ে দু’পক্ষের জটিলতা নিরসন করতে গিয়ে অর্থ আত্মসাৎ’র মামলায় উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গৌছ আলী ও সাধারণ সম্পাদক লিলু মিয়া অভিযুক্ত হওয়ার প্রতিবাদে ‘উপজেলা-পৌর বিএনপি’র উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে পৌর শহরের একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক লিলু মিয়া বলেন, মাহতাববুর মৎস্য আড়ৎ’র জটিলতা নিরসন করতে ৪টি বৈঠত অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু শেষ বৈঠকে হেলাল উদ্দিন পক্ষ উপস্থিত না হওয়ায় একটি রায় হয়। কিন্তু হেলাল উদ্দিন পক্ষ রায়ের বিরুদ্ধে কোন অনাপত্তি না দিয়েই গত ০৮.১০.২৪ইং তারিখে আদালতে বিশ্বনাথ উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গৌছ আলী ও সাধারণ সম্পাদক লিলু মিয়াকে অভিযুক্ত করে ও আরোও ৬/৭ জনকে অজ্ঞাতনামা অভিযুক্ত করে একটি মিথ্যা মামলা (বিশ্বনাথ সিআর মামলা নং ৩০৮/২০২৪ইং) দায়ের করেন। এর পাশাপাশি ফেসবুক লাইভে বিভিন্ন আইডির মাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছেন হেলাল উদ্দিন গংরা। মামলাবাজ হেলাল উদ্দিনের এমন অপপ্রচারের ফলে যেমন উপজেলা বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করা হচ্ছে, তেমনি সালিশ ব্যবস্থাকেও করছে হেয়-পতিপন্ন। বিচার সালিশে গিয়ে যদি সালিশ ব্যক্তিদেরকে মামলায় অভিযুক্ত হতে হয়, তাহলে দেশে সালিশে কেউ আর যাবে কি না, সন্দেহ আছে।
লিখিত বক্তব্যে লিলু মিয়া আরোও জানান, ‘হেলাল মিয়া ও বশির উদ্দিন’ উভয় পক্ষের সম্মতিতে সালিশ কার্যক্রমের শুরুতে সর্বসম্মতিক্রমে উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গৌছ আলীকে বৈঠকের সভাপতি মনোনীত করা হয়। সালিশে দুই পক্ষের কাছ থেকে সরকারি আদেশ, দলিলাদি ও মামলাগুলোর কাগজপত্র’সহ সকল ডকুমেন্ট জমা নেয়া হয়। উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে একে একে তিনটি সালিশ বৈঠকে তাদের জবানবন্দি’সহ সকল কাগজপত্র পর্যালোচনা করা হয়। গত ২১ সেপ্টেম্বর সর্বশেষ ও ৪র্থ বৈঠকে অজ্ঞাত কারণে হেলাল মিয়া পক্ষ উপস্থিত না হওয়ায় এলাকার গন্যমান্য মুরব্বীয়ান, ব্যবসায়ী, সালিশ ব্যক্তিত্বসহ কয়েক শতাধিক মানুষের উপস্থিতিতে পুনরায় সকল কাগজাত পর্যালোচনা করে সর্বসম্মতিক্রমে সভার সভাপতি সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন যে ২৫ আগস্টের ঘটনায় হেলাল মিয়া দোষি প্রমানিত হওয়ায় জমাকৃত টাকা বাজেয়াপ্ত করার সিদ্ধান্ত নেন। আর ইলিয়াসপত্নী তাহসিনা রুশদীর লুনার সাথে আলাপ করে বাজেয়াপ্তকৃত টাকা ক্ষতিগ্রস্থদের দেওয়া হবে। পাশাপাশি বর্তমান কমিটির দায়িত্বশীল ‘ফখর উদ্দিন, আবদুল হেকিম ও আব্দুস সালাম’ ওই ৩ জন বাজার পরিচালনা করবেন। আর সর্বসম্মতিক্রমে জব্দকৃত টাকা সালিশ কমিটির সদস্য ও লামাকাজী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হকের কাছে এবং বরফ গাইল সভাপতি গৌছ আলীর নির্দেশক্রমে হস্তান্তর করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হক, ইউনিয়নের বিএনপি নেতা ও মাহতাবপুর বাজারের ব্যবসায়ী আঙ্গুর মিয়া।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত ও বক্তাদের দেওয়া বক্তব্য থেকে দাবী উঠে, হেলাল মিয়ার এহেন আচরণ বিশ্বনাথ তথা সর্বস্তরের বিচার সালিশ ব্যক্তিত্বকে হয়রানি করছে। আর দলীয়ভাবে বিএনপির মানও ক্ষুন্ন হয়েছে। অবিলম্বে হেলাল মিয়াকে তার ভুল স্বীকার করে বিশ্বনাথবাসীর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। তা না হলে হেলাল মিয়াকে বিএনপির দলীয় কর্মকান্ড থেকে বহিস্কার করার দাবীও উঠে সংবাদ সম্মেলনে।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক প্রভাষক মোনায়েম খান, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মুমিন মামুন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক তালুকদার গিয়াস উদ্দিন, উপজেলার দশঘর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এমাদ উদ্দিন খান, দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজ আরব খান, অলংকারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান লিটন, পৌর বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সুফিয়ান, উপজেলা বিএনপি নেতা খসরুজ্জামান খসরু, লামাকাজী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাজী শফিকুর রহমান, বিএনপি নেতা আশিক মিয়া জীবন, আব্দুস ছাত্তার, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল হান্নান বাবুল, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আশিকুর রহমান রানা, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আহমেদ দুলাল মিয়া প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।