সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় একটি বাড়ি ঘেরাও করে দীর্ঘ ৯ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক তৈরির সরঞ্জাম, বিস্ফোরক পাউডার ও বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আজ রোববার সকাল ৬টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের দিঘলবাক আটঘর গ্রামের আফজাল হোসেনের বাড়িতে এ অভিযান চালানো হয়।
আজ সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য জানানো হয়। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনী। পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আফজাল হোসেনের বাড়ি আশারকান্দি ইউনিয়নের দিঘলবাক আটঘর গ্রামে হলেও তিনি সিলেটে বাস করতেন। মাঝেমধ্যে গ্রামে এসে থাকতেন। তবে এ ঘটনার পর থেকে আফজাল হোসেন পলাতক।
সুনামগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (জগন্নাথপুর সার্কেল) শুভাশীষ ধর প্রথম আলোকে জানান, গত শুক্রবার জগন্নাথপুর থানার সহকারী উপপরিদর্শক নুরে আলম সিদ্দিক একটি মামলার সমন দিতে গিয়ে আফজাল হোসেনের বাড়িতে যান। এ সময় আফজালের বাড়িতে বিপুল পরিমাণ ইলেকট্রনিক ডিভাইস ও সাদা পাউডার দেখে নুরে আলমের সন্দেহ হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ সকাল ছয়টা থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাড়িটি ঘেরাও করে অভিযান চালায়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জগন্নাথপুর থানা–পুলিশ, বোম ডিসপোজাল ইউনিট, স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম, অ্যান্টিটেররিজম ইউনিট ও সেনাবাহিনীর বিশেষজ্ঞ দল ৯ ঘণ্টাব্যাপী এ অভিযানে অংশ নেয়। দীর্ঘ এ অভিযান থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক তৈরির সরঞ্জাম, বিস্ফোরক জাতীয় পাউডার ও বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইস উদ্ধার করা হয়। এ বিষয়ে আইনানুগ পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।
আফজালের প্রতিবেশী ও চাচাতো ভাই শাওন আহমেদ বলেন, এর আগে ২০২০ সালে আফজাল অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। আফজালের অত্যাচারে এলাকার লোকজন অতিষ্ঠ। আফজাল কিশোরদের নিয়ে ইলেকট্রনিকস ডিভাইস ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের বিস্ফোরক যন্ত্র তৈরি করে লোকজনকে ভয় দেখাতেন। তবে আফজাল গ্রেপ্তার না হওয়ায় এলাকাবাসী আতঙ্কিত।
জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন। আফজাল হোসেন গা ঢাকা দিয়েছেন। তাঁকে গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান চলছে। ওই বাড়িতে এখনো পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।