মৌলভীবাজারের বড়লেখায় মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ইতিমধ্যে ছয়জনের কাছ থেকে পৌনে ২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।
অভিযুক্ত নেতার নাম ফয়সল আহমদ সাগর। তিনি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও বড়লেখা পৌরসভার হাটবন্দ এলাকার বাসিন্দা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের কয়েকটি আইডি থেকে ফয়সলের টাকা আদায়ের তথ্য ভাইরাল হয়েছে।
জানা গেছে, এক যুগ আগে হামলা, ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে সম্প্রতি আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ২৩ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন ফয়সল। মামলায় ৩০০ থেকে ৩৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে ফয়সল উল্লেখ করেন, ২০১২ সালের ২০ ডিসেম্বর আসামিরা তাঁর বাড়িতে হামলা চালান। তাঁকে বেঁধে বড়লেখা বাজারে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর ওপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হয়।
চাঁদাবাজির শিকার কয়েকজন নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানান, ফয়সল মামলার আসামি করার ভয় দেখিয়ে তাঁদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন। তাঁরা ভয়ে মুখ খুলতে পারছেন না। কারণ মুখ খুললে ফয়সলের নিজস্ব বাহিনী হামলা করতে পারে।
জানতে চাইলে ফয়সল অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, তাঁর বিরুদ্ধে ফেসবুকে ভুয়া আইডি দিয়ে প্রচার করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমাকে ৩৪টি মামলা দিয়েছে। ১৯ বার কারাগারে গিয়েছি। সাতবার আমার ওপর হামলা হয়েছে। আমার কি একটা মামলা করার অধিকার নাই? একটি মামলা করার কারণে বাণিজ্যের কথা বলে ফেক আইডি দিয়ে পোস্ট করা হচ্ছে। অভিযোগ সত্য হলে তারা অভিযোগ করত অথবা রিয়েল আইডি দিয়ে পোস্ট করত।’
এ বিষয়ে কথা হলে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন বলেন, ‘ফয়সল আহমদ সাগরের বিরুদ্ধে মামলা বাণিজ্যের বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’
যোগাযোগ করা হলে বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল কাইয়ূম বলেন, ‘কেউ যদি মামলা-বাণিজ্য করে তাহলে আমরা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেব।’
এ ব্যাপারে মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আমাদের কাছে সুস্পষ্ট অভিযোগ আসলে ব্যবস্থা নেব। প্রয়োজনে চাঁদাবাজির মামলা করা হবে।’