এমসি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল আনাম মো. রিয়াজ সোমবার জানান, গত রোববার কলেজের শিক্ষাবিদ সম্মেলন কক্ষে কাউন্সিল মিটিংয়ে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন পেশ করেন। প্রতিবেদনে জানা গেছে, রিয়াদ ও হৃদয়ের আগে থেকেই ব্যক্তিগত কিছু বিষয় নিয়ে সমস্যা চলছিল। পরে ফেসবুকের একটি কমেন্টের জেরে হৃদয় আর রিয়াদের মধ্যে ওই রাতে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে দুজনেই আহত হয়েছেন।
তিনি আরও জানান, তদন্ত কমিটি এই ঘটনার সাথে কোনো দল বা গোষ্ঠীর জড়িত থাকার প্রমাণ পায়নি। এটি মূলত রিয়াদ ও হৃদয়ের মধ্যে হয়েছে। তালামীয তাদের সংগঠনকে সাংস্কৃতিক সংগঠন বলে জানিয়েছে। আর শিবিরেরও কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় নি। আহত তালামীয কর্মী রিয়াদ প্রথমে ছাত্রশিবির জড়িত থাকার অভিযোগ করলেও পরে তদন্ত কমিটির কাছে এরকম কিছু বলেনি। তার কথার মধ্যেও বেশকিছু গড়মিল পাওয়া গেছে। হৃদয় এই সমস্যার কথা আমাদের জানাতে পারতো। এভাবে মধ্যরাতে তার সিনিয়রের রুমে গিয়ে এই হাতাহাতির ঘটনা না ঘটালে এমন ঘটতো না। আমরা সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছি। আর হৃদয় যেহেতু এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে, সেহেতু তার ছাত্রাবাসের সিট বাতিল করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত ১৯ শে ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের প্রথম ব্লকে দুই শিক্ষার্থীর মাঝে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে হৃদয় ও রিয়াদ নামে দুই শিক্ষার্থী আহত হন। এই ঘটনায় আহত রিয়াদ তার ওপর ছাত্রশিবির হামলা করেছে বলে অভিযোগ করেন। এছাড়া তার পায়ের রগ কাটার চেষ্টা হয়েছে বলেও অপপ্রচার চালান।এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ওইদিনই কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর হুমায়ুন কবীর চৌধুরীকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন এমসি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আবুল আনাম মো. রিয়াজ।
এ ঘটনায় আহত মিজানুর রহমান রিয়াদ ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ও আন্জুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার কলেজ শাখার তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক। তিনি তখন দাবি করেন, তিনি জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। অপর আহতের নাম জাকিরুল ইসলাম হৃদয়। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সক্রিয় সদস্য।
এঘটনাকে ‘ছাত্রশিবিরের ঘৃণ্য হামলা’ আখ্যা দিয়ে নগরে বিক্ষোভ মিছিল করে আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার সিলেট মহানগর শাখা। তবে তখনই এঘটনায় শিবির জড়িত নয় দাবি করে বিবৃতি দেয় শিবিরের কেন্দ্রীয় শাখা। প্রতিবাদে নগরে পাল্টা মিছিল করে ছাত্রশিবিরও।