গাজায় ইসরাইলি বর্বর হামলায় ক্ষুব্ধ জাতিসংঘ মহাসচিব

বিশ্ব

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ভয়াবহ বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে ৪ শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইসরাইলের এই বর্বরাতায় গভীরভাবে মর্মাহত হয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। এছাড়া এই হামলায় ক্ষুব্ধও হন তিনি।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) গাজায় ইসরায়েলি হামলার বিষয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান জাতিসংঘ মহাসচিব।

বিবৃতিতে বলা হয়, গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় বেসামরিক নাগরিকদের প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব গুতেরেস। মঙ্গলবার জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে এ কথা জানান।

এতে বলা হয়েছে, মহাসচিব গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় ব্যাপক সংখ্যক বেসামরিক নাগরিকের নিহত হওয়ার ঘটনায় হতবাক। তিনি যুদ্ধবিরতি মেনে চলার জন্য জোরালো আহ্বান জানাচ্ছেন, যাতে মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখা যায় এবং যেসব জিম্মি এখনো মুক্তি পাননি, তাদের বিনাশর্তে ছেড়ে দেওয়া হয়।

জাতিসংঘের মহাসচিব এর আগেও সংঘাত নিরসনে সব পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন এবং মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

এর আগে আলজাজিরা জানিয়েছে, মঙ্গলবার গাজাজুড়ে ইসরায়েলের প্রাণঘাতী বিমান হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪১৩ জনে দাঁড়িয়েছে। অনেকে বিধ্বস্ত ভবনের নিচে চাপা পড়ে আছেন ফলে মৃতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। গত ১৯ জানুয়ারি যুদ্ধবিরতি শুরুর পর থেকে গাজায় এটি ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় বিমান হামলা।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) দাবি করেছে, তারা হামাসের ‘সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুগুলোতে’ হামলা করেছে। এতে গাজার ডি-ফ্যাক্টো প্রধানমন্ত্রী ইশাম দা-আলিসসহ ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাসের কয়েকজন শীর্ষ নেতা নিহত হয়েছেন।

আল জাজিরা জানায়, মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) গাজায় হামলা শুরুর আগে বেশিরভাগ মানুষ রমজানের সেহরি খাচ্ছিলেন, তখনই বিস্ফোরণ শুরু হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, ২০টিরও বেশি ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান গাজার আকাশে উড়ছিল এবং সেগুলো গাজা সিটি, রাফাহ ও খান ইউনিসে লক্ষ্যবস্তুতে বোমা ফেলছিল।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ আগেই এ হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তারা বলেন, হামাসের কাছ থেকে বন্দিদের মুক্তির দাবি এবং পূর্বে প্রস্তাবিত চুক্তি প্রত্যাখ্যানের পর ইসরায়েল এই হামলা চালিয়েছে। ভবিষ্যতে হামাসের বিরুদ্ধে আরও শক্তিশালী সামরিক পদক্ষেপ নেবে তারা।

এদিকে হামাস এ হামলাকে একটি বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে উল্লেখ করেছে। সংগঠনটি জানায়, ইসরায়েল তাদের চুক্তি ভঙ্গ করেছে এবং এখন বন্দি ইসরায়েলি সেনাদের অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে পড়তে হতে পারে। হামাসের কর্মকর্তা ইজ্জত আল রিশেক এক বিবৃতিতে বলেন, গাজায় পুনরায় যুদ্ধ শুরু করার সিদ্ধান্ত হলো দখলদারদের বন্দিদের বলিদান এবং তাদের ওপর মৃত্যুদণ্ড আরোপের সিদ্ধান্ত।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *