সিলেটে কোরবানীর পশুর হাটে বিএনপি-ডেভিল ঐক্য, মানছেন না তারেক রহমানের নির্দেশ!

সিলেট

সিলেটের লাক্কাতুরায় কোরবানীর অস্থায়ী পশুর হাট বসাতে স্থানীয় বিএনপি নেতারা নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগের একাধিক ডেভিলদের নিয়ে ঐক্য গড়েছেন। ছলে বলে কৌশলে এই স্থানে পশুর হাট করতে হবে-এমন মনোভাব নিয়ে তারা প্রকাশ্যে ডেভিলদের সাথে বৈঠক করছেন। এমনকি ডেভিলদের নিয়ে বিএনপি নেতারা পশুর হাটের স্থান পরিদর্শনও করছেন! বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্পষ্টভাবে দলে নির্দেশনা দিয়েছেন- ডেভিলদের কোনো ধরনের পুনর্বাসন করা হবে না। তবে, তার এই নির্দেশনা উপেক্ষা করে স্থানীয় বিএনপি নেতারা দিব্যি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলাকারী এবং আতঙ্ক সৃষ্টিকারী নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগের ডেভিলদের নিয়ে ঘুরাফেরা করছেন। ডেভিলদের নিয়ে যারা এসব করছেন তারা সুযোগ সন্ধানী বলে মন্তব্য করেছেন সিলেট বিএনপির দায়িত্বশীল নেতারা।

সদর উপজেলা অফিস সূত্রে জানা গেছে, লাক্কাতুরায় অস্থায়ী পশুর হাট বসানো নিয়ে এখনও সরকারের বিভিন্ন সংস্থা তদন্ত করছে। পশুর হাট বসানোর জন্য একটি পক্ষ আবেদন করেছেন। তবে ইজারার জন্য এখনও কোনো মতামত দেয়া হয়নি। ইজারা হলে তা বিভিন্ন গণমাধ্যমে দরপত্র আহবান করা হবে।

এদিকে লাক্কাতুরায় অস্থায়ী কোরবানীর পশুর হাট না বসানোর জন্য আবেদন করবেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা জানান, অতীতে লাক্কাতুরায় অস্থায়ী কোরবানীর পশুর হাট বসিয়ে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সড়ক, লাক্কতুরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠের সৌন্দর্য নষ্ট করেছিলো আওয়ামী লীগের দোসররা। পশুর হাটের কারণে বিমান বন্দর সড়কে যানযট লেগেই থাকে। প্রবাসীদের যাতায়াতেও অসুবিধা সৃষ্টি হয়। এইবার ডেভিলদের সাথে নিয়ে পশুর হাট বসানোর আয়োজন করা হচ্ছে। এরকম হলে এই এলাকায় ঘটতে পারে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা।

লাক্কাতুরা অস্থায়ী পশুর হাট নিয়ে একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বিএনপি থেকে ‘আজীবন বহিস্কৃত’ নেতা ৬নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম, সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ুন আহমদ মাসুক, সিলেট সদর উপজেলা বিএনপি নেতা ৬নং টুকের বাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সফিকুর রহমান এবং ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলাকারী একাধিক মামলার আসামি নিষিদ্ধ সংগঠন সিলেট মহানগর যুবলীগ নেতা রিমাদ আহমদ রুবেল, ৬নং টুকেরবাজার ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতা রাজু গোয়ালা, ৬নং টুকেরবাজার ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার আওয়ামী লীগ নেতা রাম বাহাদুর ও ৬নং টুকেরবাজার ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার আওয়ামী লীগ নেতা জুট বাহাদুর ঐক্যবদ্ধ হয়ে সিলেট সদর উপজেলা পরিষদের সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সড়ক, লাক্কতুরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ এবং মেইন সড়কের পাশের অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর পরিকল্পনা করছেন। বিএনপির এসকল নেতারাই এই এলাকার ডেভিলদের নিয়ন্ত্রণ এবং প্রসাশনিক শেল্টার দিচ্ছেন। যে কারণে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না!

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলাকারী একাধিক মামলার আসামি আওয়ামী লীগ নেতা রাজু গোয়ালা, আওয়ামী লীগ নেতা রাম বাহাদুর ও আওয়ামী লীগ নেতা জুট বাহাদুর। তাদের বিরুদ্ধে এসএমপির কোতোয়ালী থানায় যথাক্রমে মামলা নং-৪৪৩/২৫ এবং মামলা নং-৯২/২৪ রয়েছে। এছাড়াও বিমানবন্দর থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

গত ১৪ মে বুধবার সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার খোশনূর রুবাইয়াৎ অস্থায়ী পশুর হাট পরিদর্শন করেন। এ সময় তার সাথে পরিদর্শনে সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ুন আহমেদ মাসুক, সিলেট সদর উপজেলা বিএনপি নেতা ৬নং টুকের বাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সফিকুর রহমানসহ স্থানীয় বাসিন্দারা ছিলেন। নির্বাহী অফিসারের অজান্তে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলাকারী একাধিক মামলার আসামি আওয়ামী লীগ নেতা রাজু গোয়ালা, আওয়ামী লীগ নেতা রাম বাহাদুর ও আওয়ামী লীগ নেতা জুট বাহাদুরও পরিদর্শনে উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র আরো জানিয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিষিদ্ধ সংগঠন সিলেট মহানগর যুবলীগ নেতা রিমাদ আহমদ রুবেল-ফরহাদ চৌধুরী শামীমকে নিয়ে একচেটিয়ে এই মাঠে একাধিকবার অস্থায়ী পশুর হাট বসিয়ে ছিলেন। অন্য জেলার গরু ব্যবসায়ীদের সাথে তার ভালো সম্পর্ক রুবেলের। তাদের সবার মোবাইল নাম্বারও জানা রুবেলের। যে কারণে বহিস্কৃত বিএনপি নেতা ফরহাদ চৌধুরী শামীম ও সিলেট মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য (রুবেলের চাচাতো ভাই) হুমায়ুন আহমেদ মাসুক পলাতক রুবেলের সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুক মাধ্যমে তার সাথে যোগাযোগ করছেন। কোরবানীর অস্থায়ী পশুর হাট বসানো নিয়ে বহিস্কৃত বিএনপি নেতা ফরহাদ চৌধুরী শামীমের বাসায় ৪ বার বৈঠক হয়েছে। এই বৈঠকে তারা ছাড়াও তাদের অনুসারীরা উপস্থিত ছিলেন। পলাতক থাকার কারণে বৈঠকে শুধু উপস্থিত ছিলেন না রিমাদ আহমদ রুবেল।

অস্থায়ী পশুর হাট নিয়ে ডেভিলদের সাথে বৈঠকে সিলেট জেলা যুবদলের আহবায়ক কমিটির সাবেক সদস্য সাহেদ আহমদ চমনকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল এবং লোকমাধ্যমে যোগাযোগ করেও তাকে বৈঠকে আনতে পারেননি তারা।

পশুর হাট নিয়ে তাদের বৈঠকের সিদ্ধান্ত এবং পরিকল্পনা : বহিস্কৃত বিএনপি নেতা ফরহাদ চৌধুরী শামীম ও তার সহযোগীরা ৫ লাখ, বিএনপি নেতা হুমায়ুন আহমেদ মাসুক ও তার সহযোগীরা ৫ লাখ, সদর উপজেলা বিএনপি নেতা চেয়ারম্যান মো. সফিকুর রহমান ও তার সহযোগীরা ৫ লাখ এবং নিষিদ্ধ সংগঠন আওয়ামী লীগ নেতা রাজু গোয়ালা, আওয়ামী লীগ নেতা রাম বাহাদুর, আওয়ামী লীগ নেতা জুট বাহাদুর ও তাদের সহযোগীরা ৫ লাখ টাকা করে মোট ২০ লাখ টাকা ফান্ড তৈরি করা। যা ইতিমধ্যে হয়ে গেছে। এই ফান্ড দিয়ে মাঠের ইজারাসহ ডেকোরেশন, মাইকিং, বিদ্যুত, কোরবানীর পশুর গাড়ির খরচ (যারা বিভিন্ন সড়ক, হাইওয়ে থেকে মাঠে ট্রাক আনবে), ভলেন্টিয়ার খরচ এবং খাবারের টাকা এখান থেকে দেয়া হবে। এছাড়াও রিমাদ আহমদ রুবেলের মাধ্যমে বিভিন্ন জেলার গরু ব্যবসায়ীদের মাঠে কল করে পাঠানোর জন্য একটি অংশ তাকে দেয়া হবে।

ডেভিলদের নিয়ে অস্থায়ী পশুর হাট আয়োজন করা হচ্ছে বলে সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ুন আহমদ মাসুককে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন-ডেভিলরা সাথে থাকতে পারে, হতে পারে, সমস্যা নেই! আমার এসব বিষয়ে ইন্টারেস্ট নেই। সমাজে ভালো কাজ করলে আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষা থাকবে, বান্দাদের থেকেও থাকবে। এসব নিয়ে চিন্তা করে লাভ কি? এখানে পশুর হাটে সবসময় যেভাবে হয়, সেভাবেই হবে। সরকারের বিভিন্ন সংস্থা তদন্ত করবে এরপর টেন্ডার মাধ্যমেই হাট হবে।
আওয়ামী লীগ নেতা রাম বাহাদুর ও আওয়ামী লীগ নেতা জুট বাহাদুর একাধিক মামলার আসামি বললে তিনি তাদের সাফাই গেয়ে তিনি বলেন, তারাতো রানিং মেম্বার। জুট মেম্বারের সারা পরিবার বিএনপির লোক। নির্যাতিত মানুষ। রাম বাহাদুর সম্পর্কে তিনি বলেন, হিন্দু বলতেই বুঝি আওয়ামী লীগ কিন্তু সেতো বাগানের প্রতিনিধিত্ব করছে। এই সুবাদে আমার সাথে। এখানে স্থানীয় গণ্যমাণ্য ব্যক্তি বলতে আমাদের দাওয়াত দেয়া হয়েছে। এখানে সাইডম্যান হিসেবে সাবেক কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম। ওনারও দাওয়াত ছিলো। আমি ব্যক্তিগত ভাবে দাওয়াত পেয়েছি। এই আমরা সেখানে গিয়ে একত্রিত হয়েছি। রাম বাহাদুর রানিং মেম্বার হিসেবে প্রশাসন নোটিশ করে এনেছে। তাদের ইউনিয়ন এলাকায় দাওয়াত ছিলো, ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সফিকুর রহমানও ছিলেন। ওরা মামলা আসামি তিনি জানেন না বলে জানান, যদি হয়েও থাকে এদের পুলিশ গ্রেফতার করছে না কেনো?

বিষয়টি জানতে ৬নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলে তা ব্যস্ত দেখায়। তবে এ বিষয় নিয়ে কথা হয় সিলেট সদর উপজেলা বিএনপি নেতা ৬নং টুকের বাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. সফিকুর রহমানের সাথে।
তিনি বলেন, তিনিসহ ৬নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম, সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ুন আহমদ মাসুকসহ অন্যান্যরা যদি সিলেট সদর উপজেলা দরপত্র আহবান করে তাহলে হাটের জন্য আমরা অংশ গ্রহন করবো। ডেভিলদের নিয়ে মাঠ পরিদর্শন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জুট বাহাদুরকে আমি মরহুম সাইফুর রহমান সাহেব জীবিত থাকা কালে ওনার মুরিদ বানিয়েছিলাম। এরপরে কি হয়েছে আমার জানা নেই। তবে সে আমার নির্বাচনে আমার হয়ে কাজ করেছে। আরেকটি কথা ডেভিলদের নিয়ে এখানে অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর পক্ষে আমি একমত নই, আর আমি এরকম করতে যাবো না। আমার কথা হচ্ছে দীর্ঘদিন এখানে আওয়ামী লীগের লোক পশুর হাট করে খেয়েছে, এখন আমাদের লোকেরা সরকারের রাজস্ব দিয়ে সঠিক হালাল ভাবে দুই টাকা রুজি করোক সুন্দরভাবে, এটাই উদ্দেশ্য। অন্যকিছু নয়। আর ঈদ এটকটা উৎসব, গরুর বাজারও একটা উৎসব। এটাই মেইন উদ্দেশ্য। ২০ লাখ টাকা ফান্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা সত্য নয়। এখানে গরুর হাট করতে হলে মাটি ভরাট করতে হবে, সেইড তৈরি করতে হবে, জায়গাটি সুন্দর করতে হবে যাতে ক্রেতা-বিক্রেতা সহযে আসতে পারেন, বৃষ্টিতে যাতে পশু ভিজেনা, ক্রেতারাও বৃষ্টিতে যাতে না ভিজে একটা জায়গায় আশ্রয় নিতে পারে। এসবের জন্য একটি খরচ আছে, এই খরচের টাকা ফান্ডে জমা করা হবে। এরপরে রাজস্বের টাকা যা লাগবে তা এখান থেকে দেয়া হবে। এই বিষয়টি ৬নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম, সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ুন আহমদ মাসুক দেখবেন। ফরহাদ চৌধুরী শামীমের বাসায় বৈঠকে রাম ছিলো কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, রাম বাহাদুর উপস্থিত ছিলো। তবে রাম আওয়ামী লীগের লোক কি না সেটা আমি জানি না। আমি যদি এখানে থাকি তাহলে আইনসিদ্ধ হবে। ডেভিল কেউ এখানে থাকুক তা আমি চাইনা। আমি বিষয়টি জানলাম। আমার সাথে যারা আছেন আমি তাদের বিষয়টি জানাবো।

সিলেট জেলা যুবদলের আহবায়ক কমিটির সাবেক সদস্য সাহেদ আহমদ চমন বলেন, ডেভিলদের নিয়ে লাক্কাতুরায় অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর পরিকল্পনা করছেন বহিস্কৃত বিএনপি নেতা ফরহাদ চৌধুরী শামীমসহ অন্যান্যরা। আমাকে এ নিয়ে একাধিকবার কল করা হয়েছে শামিমের বাসায় বৈঠকে যাবার জন্য। লোকমাধ্যমেও খবর পাঠানো হয়েছে। আমি ডেভিলদের সাথে এখানে একত্রিত হওয়া মানে দল এবং শহিদদের রক্তের সাথে বেঈমানি। আমি এসবে নেই। প্রয়োজনে আমি একাই টেন্ডারে অংশ গ্রহন করবো।

গত ১৪ মে বুধবার সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার খোশনূর রুবাইয়াৎ লাক্কাতুরার অস্থায়ী পশুর হাট পরিদর্শন করেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলাকারী একাধিক মামলার আসামি আওয়ামী লীগ নেতা রাজু গোয়ালা, আওয়ামী লীগ নেতা রাম বাহাদুর ও আওয়ামী লীগ নেতা জুট বাহাদুর এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলো। তাদের সম্পর্কে ওনার জানা নেই। এটা দু:খজনক বলে তিনি বলেন, লাক্কাতুরায় অস্থায়ী পশুর হাট বসানো নিয়ে এখনও সরকারের বিভিন্ন সংস্থা তদন্ত করছে। পশুর হাট বসানোর জন্য একটি পক্ষ আবেদন করেছেন। তবে ইজারার জন্য এখনও কোনো ক্লিয়ারেন্স দেয়া হয়নি। ইজারা হলে তা বিভিন্ন গণমাধ্যমে দরপত্র আহবান করা হবে।

এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জিয়াউল হককে কল করলে তার মুঠোফোন ব্যস্ত দেখায়। তবে এসএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, ডেভিলদের আটক করতে সবসমই পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

ডেভিলদের নিয়ে লাক্কাতুরায় অস্থায়ী পশুর হাট বসানো প্রসঙ্গে সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, যারা বিগত দিন আমাদের নেতা কর্মীদের নির্যাতন করছে, পুলিশ ধারা হোক, নিজেই হোক, ফিজিক্যাল হোক, অর্থনৈতিক ভাবে হোক যেভাবেই করেছে তারাতো কোনো ভাবেই পূর্ণ প্রতিষ্ঠিত হোক আমরা কোনো ভাবেই চাইনা। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলও চায় না। আমিও সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও চাই না। যদি কেউ করে, সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। আর যদি আমাদের দলের কমিটির কোনো পদধারী নেতা এমন করেন দলের সাংগঠনিক নিয়ম মোতাবেক কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। ডেভিলদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যদি এদের বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মামলা থাকে তাহলে অবশ্যই প্রশাসন এর ব্যবস্থা গ্রহন করবে। কারণ আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত।

ডেভিল প্রসঙ্গে সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী বলেন, ৫ই আগস্টের পূর্ববর্তী দীর্ঘ দেড় দশক ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার তার দলের নেতাকর্মী এবং তার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী ভিন্নমত এবং ভিন্ন পথ ব্যবহার করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনে নেতাকমীদের বছরের পর বছর, মাসের মাসের পর মাস, দিনের পর দিন, ঘন্টার পর ঘন্টা, নির্যাতন ও নিপীড়ন করছে, ভয়ভীতি প্রদর্শন করছে। আমাদের পরিবারের সদস্যদের সাথে খারাপ আচরণ করেছে। নেতাকর্মীদের না পেয়ে তাদের পরিবারের সদস্যদের তুলে নিয়ে গ্রেফতার দেখিয়েছে। বিগত দেড় দশকের দুঃশাসনের কবলে পড়ে যারা অনেকেই গুম-খুন হয়েছেন।
৫ই আগস্টের দীর্ঘ দেড় দশকের আন্দোলনের ফসল ও আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের নির্দেশনা এবং সরাসরি সম্পৃক্ততা উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের মানুষ, এই মানুষের উপর আস্থা এবং বিশ্বাস রেখে রাজপথে দীর্ঘ দেড় দশকের আন্দোলনের একটা পর্যায়ে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আজকের বাংলাদেশ। এই সময়ে এসে যদি ওই দুঃশাসনের সাথে সম্পৃক্ত কেউ বিএনপির পতাকা তলে সমবেত হওয়ার চেষ্টা করে এই বিষয়ে আমাদের দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণ ফোরাম থেকে ইতোমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে যে ফ্যাসিস্ট এবং তার দোসরদের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে কোনো রকমের ঠাই নেই এবং দল এরকম লোকদের কখনই ঠাই দেবে না।
যে সকল ডেভিলদের দলে দেখা যাচ্ছে বলে প্রচার হচ্ছে, আমরা মনে করি এই সমস্থ দুষ্কৃতিকারীরা সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করছে, কিন্তু আমরা এই ব্যাপারে সতর্ক রয়েছি। আমরা এ ব্যাপারে দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণ ফোরাম অথবা আমরা নেতৃত্বে যারা আছি, আমরা এ ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে যাতে এই ডেভিল অথবা তার সহযোগী সহচর কোন অবস্থাতেই আমাদের দলীয় পতাকা তলে সমবেত হতে না পারে। আরেকটি কথা ইতোমধ্যে দল থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যে দলে কোন ধরনের যোগদান নেই। এটা দলের ক্লিয়ার নির্দেশনা।
আর যদি এভাবে কেউ আসেন, আর এই আসার পথ যদি কেউ প্রশস্ত করে দেয়ার সহযোগিতা করেন, দল তার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য বদ্ধপরিকর। এভাবে দলের বিরুদ্ধে গত ৮/৯ মাসে যারা দলের নীতি এবং আদর্শের বিরুদ্ধে গিয়েছেন, দল তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক প্রাথমিক সদস্য পদসহ ব্যবস্থা নিয়েছে এবং এটা চলমান রয়েছে। যারা জাতীয়তাবাদী দলের আদর্শ ও নীতিতে বিশ্বাসী এবং বিগত দেড় দশক রাজপথে আন্দোলনে জীবনবাজি রেখে পুলিশের গুলি উপেক্ষা করে রাজপথে থেকেছে, তারা কোন সময় ডেভিল অথবা তার সহযোগী সহচরদের কোন ধরনের সুযোগ দেবে না। আর যারা এদের সুযোগ করে দেবে তারা আমাদের দলের কোন পর্যায়ের নেতা কর্মী হতে পারে না। এরা সুযোগ সন্ধানী। এরা সবসময়ই উৎপেতে থাকে সুযোগ গ্রহণ করার জন্য। এদের ব্যাপারে আমাদের সর্বোচ্চ সতর্কতা রয়েছে।

শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *